Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুখ-নিদ্রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! ঢামেকে সক্রিয় মাদক চক্র

জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারীরা

খলিলুর রহমান : | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০২ এএম

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও তার আশপাশের এলাকায় মাদক কারবারিরা সক্রিয় রয়েছে। আর ওইসব মাদক ব্যবসায় ঢামেকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও জড়িত হয়েছেন। ইতোমধ্যে পুলিশ ওই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি ঢামেকের কর্মচারী। তবে ওই চক্রের বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাসপাতালে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবিরা সক্রিয় থাকলে সুখ-নিদ্রায় রয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

সূত্রমতে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশপাশ এলাকায় দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। শুধু তাই নয়, তারা কৌশলে ঢামেক হাসপাতালের ভেতরে এবং চাঁনখারপুল সিটি কর্পোরেশন মার্কেট, যক্ষা হাসপাতাল, পুরাতন পিজি হোস্টেল, জরুরি বিভাগের পাশে, মর্গ এলাকা, বহির্বিভাগের আশপাশ, হাসপাতাল-২, হোসনী দালান এলাকা, মিলন অডিটোরিয়াম, ঢামেক নার্সিং হোস্টেল ও শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকায় রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

সূত্র আরো জানায়, ঢামেক হাসপাতাল পুলিশি অভিযান থেকে নিরাপদ হওয়ায় মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীরা ওই এলাকাকেই নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেল থেকে ওইসব এলাকায় একাধিক মাদক ব্যবসায়ী দলবল সহকারে মাদক বিক্রি ও সেবন করছেন। ১০ থেকে ১৫ সদস্যদের একটি চক্র ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক অবাধে বিক্রি করছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ চক্রটি সক্রিয় হয়ে ওঠে।

শুধু তাই নয়, ওই চক্রের সদস্যদের কাছে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা। এছাড়া মাদকসেবীরা মাদক সেবন করে হাসপাতালের ভেতর থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র, রোগী ও তাদের স্বজনদের মোবাইল, টাকাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতিয়ে নিচ্ছে।
ঢামেকে দীর্ঘ দিন থেকে কর্মরত সাংবাদিক বুলবুল চৌধুরী দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। কারো না কারো জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। রোগী ও তাদের স্বজনদের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় পদক্ষেপ নিতে পারছি না। অভিযোগ আসলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এ ধরণের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলতে পারবে।
তিনি বলেন, হাসপাতাল অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে আমরা মানুষের রোগ-শোক ও জীবন-মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করি। তবে হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারী মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলতে পারবে। পরে তিনি মোবাইল সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর চকবাজার থানার হোসনী দালানের সামনের রাস্তা থেকে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, শফিকুল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। তিনি হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত।

চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, শফিকুলকে হোসনী দালানের সামনের রাস্তায় পুলিশ তল্লাশি করলে তার কাছ থেকে ৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। আমরা ধারণা করছি এসব ইয়াবা তিনি সেবনের জন্য সঙ্গে রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুখ-নিদ্রা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ