Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালীর নৌপথে স্পীডবোট দুর্ঘটনায় ১০ মাসে ৭ জন নিহত

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ৪:১৫ এএম

বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনে বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে নৌদূর্ঘটনা ।চলতি বছরেই ১০ মাসে এ উপজেলার আসা যাওয়ার প্রধাননদী আগুনমুখা নদীতেই স্পীডবোট দূর্ঘটনায় ইতোমেধ্যে প্রান হারিয়েছেন ৭ জন।
চলতি বছরেরর ৬জানুয়ারী পায়রাবন্দর সংলগ্ন আগুনমুখা নদীতে পায়রা বন্দরের স্পীডবোটের সাথে আহমেদ এন্টারপ্রাইজের যাত্রীবাহী স্পীডবোটের সংঘর্ষে যাত্রীবাহী স্পীডবোটের ৬ জন যাত্রী সহ বোটটি নিমজ্জিত হয়। পরবর্তীতে চারজনকে উদ্ধার করা গেলেও হারুন হাওলাদার ও আইয়ুব হাওলাদার নামে দুইজন যাত্রীর মৃত দেহ দূর্ঘটনা পরবর্তী দ্বিতীয় ও চতুর্থদিনে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এ দিকে সর্বশেষ গত ২২ অক্টোবর বিকেল পাঁচটার দিকে দূর্যোগপ‚র্ণ আবহাওয়া চলাকালে নদী বন্দরের জন্য সতর্ক সংকেত অমান্য করে দূর্যোগপ‚র্ণ আবহাওয়ার মধ্য ১৮ জন যাত্রী নিয়ে আহমেদ এন্টারপ্রাইজের রুমীন-১ নামের স্পীড বোটটি রাঙ্গাবালীর কোড়ালীয়া থেকে গলাচিপার পানপট্টির উদ্দ্যশ্য ছেড়ে যায়। মাঝপথ আগুনমুখা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে স্পিডবোটের তলা ফেটে স্পিড বোটটি ডুবে গেলে যাত্রীরা নদীত ডুবে যায়। এসময় সাঁতার কেটে চালক সহ ১৩ জন কিনারে পৌঁছতে পারলেও বাকি ৫জন নিখাঁজ রয়ে যায়। এ সময় থেকে নিখোঁজ থাকেন - রাঙ্গাবালী থানার পুলিশ কনষ্টেবল মো,মহিবুল্লাহও কৃষি ব্যাংক বাহেরহরচর শাখার পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান, আশা ব্যাংকের খাল গোড়া শাখার কর্মকর্তা কবির হোসেন ও দিনমজুর মোহাম্মদ ইমরান ও হাসান মিয়া।
আজ ২৪ অক্টোবর সকালে ঘটনার দুইদিন পরে কোস্টগার্ড রাঙ্গাবালী স্থানীয় জনগেনর সহায়তায় সকাল ৬ টা থেকে পর্যায়ক্রমে আগুনমুখা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নিখোজ ব্যাক্তিদের মৃতদেহ উদ্ধার করে ।
এ দিকে প্রায় দেড়লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনে বঙ্গোপসাগরের পাদদেশে রাঙ্গাবালী উপজেলায় সড়াসড়ি সড়ক যোগাযোগের বড় বাধা আগুনমুখা নদী বছরের মার্চ মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রচন্ড উত্তাল থাকায় এলাকার জনগনকে জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত নৌপথে পাড়াপাড় হতে হয়।আর এ সুযোগে স্পীডবোট ব্যবসায়ীরা বিআইডবিøউটিএ থেকে আগুনমুখা নদীর পানপট্রি থেকে কোড়ালিয়া এবং বোয়ালিয়া থেকে কোড়ালিয়া পর্যন্ত দুইটি চলাচলের রুট পারমিট নিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো নিয়ম- নীতির তোয়াক্কা না করে ফিটনেসবিহীন স্পীডবোটদিয়ে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া,লাইফজ্যাকেট ব্যবহার না করা সহ বিভিন্ন রকম অনিয়ম করে যাচ্ছেন। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে বড় ধরনের দূর্ঘটনা সহ জীবনহানি।
পটুয়াখালী নদী বন্দরের কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান জানান,ঐ রুটে চলাচলের জন্য দ’ুটি প্রতিষ্ঠানের ১২ টি স্পীড বোট চলাচল করছে।বিভিন্ন বোটের ধারন ক্ষমতা বিভিন্ন,এবং ভাড়া ৬০ টাকা ,কিন্তু যে বোটটি গত ২২ অক্টোবর আগুনমুখা নদীতে দূর্ঘটনার শিকার হয় ,ঐ বোটটির ধারন ক্ষমতা ছিল ১২ জনের,কিন্তু তারা নদীবন্দরের সতর্কতা সংকেত অমান্য করে দূযোগপূর্ন আবহাওয়ার মধ্যে ১৮ জন যাত্রী নিয়ে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই চালানোর জন্যই এ দূর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।তিরি আরো জানান, ইতোমধ্যে তিনি মেরিন কোর্টে এ স্পীড বোটের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে সতর্কতা সংকেতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লাইফ জ্যাকেট বিহীন ,ধারন ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে লাইফজ্যাকেট বিহীন চলাচলের করার দায়ে মামলা দায়ের করেছেন।
এ দিকে ঐ স্পীডবোট দূর্ঘটনায় রাঙ্গাবালী কৃষিব্যাংকের দ্জুন কর্মকর্তা ছিলেন তারা হলেন ম্যানেজার দোলায়ার হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান । দেলোয়ার হোসেন সাতরিয়ে কিনারে উঠতে পারলেও মোস্তাফিজুর রহমান নিখোজ থাকেন ,আজ মোস্তাফিজুর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।কৃষিব্যাংক ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়েএ ঘটনায় রাঙ্গাবালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ জানান ।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান জানান,নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এ রুটে স্পীডবোট গুলি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশী ভাড়া নেয়া সহ লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার না করে বিপদসংকেত অমান্যকরে স্পীডবোট চালানো এখন নিয়ম করে নিয়েছে তারা।এ বিষয়টি আমি তদারকি কর্তৃপক্ষ বিআইডবিøইটিএ কর্তৃপক্ষকে আগেও জানিয়েছি ।আমি যথাযথকর্তৃপক্ষের কাছে এবং সমন্বয় সভায় আগুনমুখা নদীতে পানপট্রি -কোড়ালিয়া রুটে নদী পাড়াপাড়ের জন্য ফেরী চালুকরনের বিষয় একাধিক বার পত্র প্রদান করছি। কিন্তু অদ্যাবধি এ বিষয়ে কোন সমাধান না হওয়ায় এখানকার জনগনকে জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত ট্রলার -নৌকা-স্পীডবোটে অধিক ভাড়ায় যাতায়েত করতে হচ্ছে।যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে বড় ধরনের দূর্ঘটনা । অবিলম্বে আগুনমুখা নদীতে ফেরী চালু করার মাধ্যমে এ এলাকার জনগনকে ঝুকিমুক্ত করতে দ্রæত পদ:ক্ষেপ নেয়া দরকার কর্তৃপক্ষের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ