Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইনী জটিলতায় বিপাকে এনবিআর’র সিপাইরা

প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হাসান সোহেল : রাজস্ব বোর্ডের আইনী জটিলতায় বিপাকে সিপাই পদে কর্মরতরা। সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন না তারা। বিষয়টির সুরহায় ভুক্তভোগীরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আবেদন করলেও দীর্ঘদিনেও কোন সদুত্তর পায়নি। সূত্র মতে, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে সারাদেশে দ্বিগুণেরও বেশি পদ ফাঁকা রয়েছে। একই সঙ্গে জনবল সঙ্কটে যথাযথভাবে রাজস্ব আদায় না হলেও বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২৪৯ জনকে এখনও পদায়ন করা হচ্ছে না।
রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদ রয়েছে ৪ হাজার ৬১২টি। অথচ এই পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ১ হাজার ৫০৫ জন। বাকি ৩ হাজার ১০৭ জন কর্মকর্তার পদই শূন্য। সিপাইদের অভিযোগ, আইনের দোহাই দিয়ে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাদের মতে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ২০০০ সালের আইন অনুযায়ী, উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী ও সিপাইদের জন্য সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখা হয়েছে যথাক্রমে ডিগ্রী পাস, এইচএসসি পাস এবং এসএসসি পাস। একই সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রাখা হয় যথাক্রমে- ৫ বছর, ৭ বছর ও ১০ বছর। পরবর্তীতে ২০১০ সালে এই আইন পরিবর্তন করা হয়। পরিবর্তিত আইনে এসব পদ থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তিনটি পদের জন্য বাধ্যতামূলক অনার্স ডিগ্রীর কথা বলা হয়। উচ্চমান সহকারী এবং অফিস সহকারীদের সাথে সিপাইদের সমান শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখা হলেও কাজের অভিজ্ঞতা আগের মতোই ১০ বছর রাখা হয়। যা একে অপরের সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া রাজস্ব সংগ্রহে মাঠ পর্যায়ে সিপাইদের অভিজ্ঞতা উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহকারীদের চেয়ে বেশি বলে সূত্র জানিয়েছে।
বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদ বঞ্চিতরা জানান, রাজস্ব বোর্ডে ৫ হাজার ২০০ টাকা স্কেলে চাকরি করা উচ্চমান সহকারীদের জন্য পরিদর্শক পদে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা, অফিস সহকারীদের ৪ হাজার ৭০০ টাকা স্কেলে চাকরি করাদের ৭ বছরের অভিজ্ঞতা এবং সিপাহীদের ৪ হাজার ৫০০ টাকা স্কেলে চাকরি করাদের ১০ বছরের অভিজ্ঞতা রাখা ছিল ২০০০ সালের আইনে। তখন শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা পৃথক থাকলেও ২০১০ সালের আইনে শিক্ষাগত যোগ্যতা একই থাকা সত্ত্বেও কাজের অভিজ্ঞতায় দুটি পদে কমানো হলেও সিপাইদের জন্য পূর্বের মতোই ১০ বছর রাখা হয়েছে। যা অন্যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা বলেন, এ বছরের মার্চ মাসে অভিজ্ঞতা ১০ বছর কমানোর জন্য (ফিডার পদে) আমরা আবেদন করি। ওই সময়ে বিষয়টির সুরহায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে। তবে দীর্ঘদিন হলেও সিপাইদের ভাগ্যের পরিবর্তনের কোন ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি। যদিও কমিটির প্রধান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, ইতোমধ্যে কমিটি এনবিআরকে রিপোর্ট প্রদান করেছে। রিপোর্টে সিপাইরা বর্তমানে যে গ্রেডে কাজ করেন সেখান থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি সম্ভব নয়। এখানে অভিজ্ঞতা নয়; পদ গুরুত্বপূর্ণ। তাই ১৫তম গ্রেড থেকে একসাথে দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নতি সম্ভব নয়। তবে সিপাইদের পুলিশের এএসআই সমমানের ধরে পোশাকের পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব প্রদানের জন্য রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনী জটিলতায় বিপাকে এনবিআর’র সিপাইরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ