পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ই-কমার্স ব্যবসার নামে মাত্র ১০ মাসে গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস’ নামে একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি। প্রতারণায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির মতো ‘পিরামিড’ পদ্ধতিতে লভ্যাংশ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২২ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে তারা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যানুসন্ধানের পর এই চক্রের ৬সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একটি বিশেষ দল। গ্রেফতাররা হলো- প্রতিষ্ঠানের এমডি ও সিইও আলামিন প্রধান, নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জসিম, ম্যানেজার মো. মানিক মিয়া, ম্যানেজার (প্রোডাকশন) মো. তানভীর আহম্মেদ, সহকারী ম্যানেজার (প্রোডাকশন) মো. পাভেল সরকার ও অফিস সহকারী নাদিম মো. ইয়াসির উল্লাহ। গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস নামের লাইসেন্সবিহীন কোম্পানিটি ই-কমার্সের নামে অনলাইনভিত্তিক মাল্টিলেভেল মার্কেটিং করে সাধারণ মানুষকে অধিক কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন তথ্য পাওয়ার পর গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর কলাবাগান এফ হক টাওয়ারে প্রতিষ্ঠানটির অফিসে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই অভিযানের পর কলাবাগান থানায় একটি মামলা হয়।
মামলায় আদালতের নির্দেশে পুলিশ হেফাজতে থাকা গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত সোমবার চক্রটির মূলহোতা আলামিন প্রধান ও নির্বাহী কর্মকর্তা জসিমকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি, দুটি পিকআপভ্যান, সার্ভারে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, রাউটার, দুটি পাসপোর্ট ও কোম্পানির বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
কোম্পানিটির উত্থান ও কার্যক্রম সম্পর্কে হাফিজ আক্তার বলেন, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ই-কমার্সের লাইসেন্স নিয়ে যাত্রা করে তারা। প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও আলামিন প্রধান একসময় ডেসটিনিতে সক্রিয় ছিলেন। ডেসটিনি বন্ধ হলে দীর্ঘদিন গবেষণা করে ডেসটিনির ব্যবসা পদ্ধতি অনুসরণ করে এই অনলাইনভিত্তিক প্রতারণা শুরু করেন তিনি। ১০ মাসে তারা সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগে উচ্চ কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে ২২ লাখ ২৪ হাজার ৬৬৮ জন সদস্যের কাছ থেকে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, তাদের ব্যবসা কার্যক্রম অনলাইন আ্যপভিত্তিক হওয়ায় বাংলাদেশের বাইরেও ১৭টি দেশে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীর পাশাপাশি প্রায় ৫ লাখ বিদেশি সদস্য রয়েছেন।
যেভবে প্রতারণা করতো তারাঃ যঃঃঢ়://সধরহ.ংঢ়পড়িৎষফবীঢ়ৎবংং.পড়স, ঠিকানার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে শত শত পোস্টের মাধ্যমে ই-কমার্সের কথা বলে উচ্চমাত্রার কমিশনের লোভ দেখিয়ে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। আগ্রহীরা গুগল পে-স্টোর থেকে একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করে। রেজিস্ট্রেশনের সময় বাধ্যতামূলকভাবে আপলিংক আইডির রেফারেন্সে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট (বিকাশ, নগদ, রকেট) নম্বরে প্রতি আইডির জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা করে দিতে হতো। গ্রাহকদের দেখানো হতো রেফার কমিশন, জেনারেশন কমিশন, রয়্যাল কমিশনের প্রলোভন। এক্ষেত্রেও অবলম্বন করা হতো ডেসটিনির পদ্ধতি। রেফার করা ব্যক্তি তার নিচের তিনটি আইডি থেকে ৪০০ টাকা করে কমিশন লাভ করবে। এরপর ওই তিনটি আইডি থেকে যখন ৩ী৩=৯ আইডি হবে তখন আপলিংকের আইডি ২০ শতাংশ কমিশন পাবে। এরপর ডাউনলিংকের যত আইডি হবে তার আইডি ১০ শতাংশ হারে কমিশন পাবে, যা মূলত পিরামিড আকৃতির হয়। এ ধরনের ব্যবসা দেশের আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এলএমএল ব্যবসা আড়াল করার কৌশলঃ প্রতিষ্ঠানটি নামমাত্র কয়েকটি পণ্য যেমন- অ্যালোভেরা শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, চাল, ডাল, মরিচের গুঁড়া তাদের রেজিস্টার্ড সদস্যদের কাছে বিক্রি করত। তার লভ্যাংশ থেকে প্রতি আইডি হোল্ডারকে কোম্পানির বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখার বিনিময়ে ১০ টাকা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তারা। অভিযুক্তরা ই-কমার্সের লাইসেন্স দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের ‘বিশ্বাসযোগ্য’ হিসেবে উপস্থাপন করতেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।