Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বরেন্দ্র অঞ্চলে সুগন্ধি চাল সুবাস ছড়াচ্ছে, প্রত্যাশা ভাল ফলনের

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২০, ১০:২৫ এএম

বরেন্দ্র অঞ্চলের ধান ক্ষেতে এখন এক অন্যরকম সুবাস। এক মিস্টি গন্ধে মনটা নেচে ওঠে। শ্রোতা নন্দিত প্রখ্যাত শিল্পী মান্নাদের কন্ঠের ‘‘ মিষ্টি একটা গন্ধ ছড়িয়ে আছে ঘরটা জুড়ে’’। গানটার কথা মনে পড়ে যায় বরেন্দ্রের ধানের ক্ষেতে গেলে। মনের অজান্তেই গুনগুনিয়ে উঠতে পারেন একটি মিস্টি গন্ধে ছড়িয়ে আছে ধানের ক্ষেতজুড়ে। চালটির নাম চিনি আতব, চিনি গুড়া, কালোজিরা এমনি নানা নামে সুগন্ধি চালটি পরিচিত। বনেদি জাতের এ চাল ছাড়া জমেনা কোন খানা পিনার আয়োজন। বিরিয়ানী, পোলাও জর্দা, ফিরনী পায়েস ফ্রাইড রাইচস সর্বত্র এ চালের কদর। ফলে দামের দিকেও এর কদর কম নয়। সুগন্ধি চাল আবাদ করে কৃষক সব সময় লাভবান হয়। উৎপাদিত চাল নিয়ে বিক্রির জন্য হা পিত্যেশ করতে হয়না। আর তাই কৃষক দিন দিন ঝুকে পড়ছে সুগন্ধি চাল আবাদের দিকে। প্রতি বছর বাড়ছে এর আবাদের পরিমান এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি।
গত শনিবার বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তীর্ন ধান ক্ষেতের মধ্যদিয়ে যাবার সময় পাকা আমনের সোঁদাগন্ধ নয়। সুগন্ধি চালের মিষ্টি ঘ্রান অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়। ধানের ক্ষেতের পাশ দিয়ে গেলে সহজেই চেনা যায় আমন আর সুগন্ধ চালের ক্ষেত। আবহাওয়া অনুকুল ও পোকার আক্রমণ কম থাকায় চলতি মৌসুমে ক্ষেতে চিনি আতবের মাথা ভাল রয়েছে। ফলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলেও সুগন্ধি চাল কৃষকের ঘরে আরো কিছু দিন পরেই আসবে। আলাপকালে কৃষকেরা বলেন, অন্য মোটা ধান চাষ করে দাম পাচ্ছিনা। আতবের চাহিদা থাকায় দাম ভাল। তাই অনেকে এবার মোটা ধানে পাশাপাশি আতব চাষ করেছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী অঞ্চলে, রাজশাহী,চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাটোর ও নওগাঁ জেলায় চিনি আতব চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি আতব চাষ হয়েছে নওগাঁ জেলায়।
রাজশাহীতে ২০১৫ সাথে আতব চাষাবাদ হয়েছিল ৭২০ হেক্টর জমিতে। ২০১৬ সালে কমে ৬৫০ হেক্টর হয়। ২০১৭ সালে আরো কমে চাষাবাদ হয় ৫২০ হেক্টর । ২০১৮ সালে চাষাবাদ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর। ২০১৯ সালে চাষাবাদ হয়েছে ৯১৭ হেক্টর জমিতে। এবং চলতি বছর আরো ২০০ হেক্টর বেড়ে চাষাবাদ হচ্ছে এক হাজার ১১৭ হেক্টর জমিতে। ক্রমই বাড়ছে।
এবার অনুকুল আবহাওয়া থাকায় ক্ষেতে আতবের মাথা ভাল আছে। তাই অন্য বছরের চেয়ে ফলন ভাল হবে। এবং বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ (৪০ কেজি ) আতব ধান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকায়।
রাজশাহীর তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, আতব চাষ প্রতিবছরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছর প্রাকৃতিক দুযোর্গ ও পোকার আক্রমণ কম। এর আগে কয়েক বছরে প্রাকৃতিক দুযোর্গের কারণে আতব চাষীরা লোকসান গুনেছিল। তা এখন কেটে উঠেছে কৃষকেরা। তাই আবারো আতব চাষে ঝুকছেন। এক বিঘা আতব চাষ করে ১২ থেকে ১৫ মন পর্যন্ত পাওয়া যায়। বাজারে এর দাম প্রতি মণ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। তাই অন্য সব ধানের চেয়ে আতব চাষ করে বেশি লাভবান হন কৃষকেরা। ফলে ওদিকেই ঝুকছেন আবাদকারীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষি

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ