Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহিষ ভেড়া ছাগী জবাইয়ের পর হয়ে যায় গরু খাসী

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন,কুমিল্লা থেকে : গোশত কিনতে গিয়ে ঠকবাজির শিকার হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। কুমিল্লার বাজারগুলোতে মহিষের গোশত হয়ে যায় গরুর আর ছাগী ও ভেড়ার গোশত হয়ে যায় খাসীর বলে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। কুমিল্লার বাজারগুলোতে হাটে বিক্রি হয় মহিষ আর ভেড়া ও ছাগী জবাইয়ের পর গোশতের দোকানে এসে দেশিগরু ও খাসীর গোশত হয়ে যাচ্ছে। নিরাপদ গোশতপ্রাপ্তি নিশ্চিত আইনের প্রয়োগ, ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং বাজার কমিটির মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ গোশত বিক্রেতা সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে ওই ধরণের ঠকবাজি করে আসছে। যার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে।
কুমিল্লার উল্লেখযোগ্য পশুর হাটের মধ্যে নগরীর চকবাজার, সদর দক্ষিণের চৌয়ারা, চৌদ্দগ্রামের মির্শ¦ানী বাজারে গরু ও খাসীর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ মহিষ আর ছাগী ও ভেড়া স্থান পেয়ে থাকে। সীমান্ত পথে ভারত থেকে এবং উত্তরবঙ্গ থেকেও মহিষের পাল কুমিল্লার ওইসব বাজারে আনা হয়।
আবার ছাগী, ভেড়াও বিপুল পরিমাণ উঠে। পশুরহাটে ঘুরে দেখা মিলবে অসংখ্য মহিষ আর ছাগী ও বেড়ার। কিন্তু বাজারের অধিকাংশ গোশত দোকানে গেলে বিক্রেতারা বলবেন দেশি গরু আর খাসীর গোশত। কোন ভেজাল নেই, নিশ্চিন্তে নেন। অনেক দোকানি কিরা-কসমও কেটে মহিষ ও ভেড়া-ছাগীর গোশত ক্রেতার হাতে তুলে দিচ্ছে।। আবার কোন কোন দোকানে গরুর সাথে মহিষের গোশত এবং খাসীর সাথে ভেড়া, ছাগীর গোশত মিশিয়ে বিক্রি করে থাকেন। সরল বিশ্বাসে ক্রেতারা গরুর দরে মহিষের গোশত আর খাসীর দরে ভেড়া-ছাগীর গোশত কিনে নিচ্ছেন। ক্রেতা ঠকানোর এ অপকৌশল দীর্ঘদিন ধরে চলছে কুমিল্লা নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে। কেবল কী গোশত বিক্রিতে ঠকবাজি? না ঠকবাজির আরও ধরণ রয়েছে গোশত দোকানে। তারমধ্যে মাপে কম দেয়া, ভাল গোশতের সাথে ফ্যাপসা, হাড়গোড় মেশানো, চর্বির পরিমাণ বেশি দেয়া। এছাড়াও গোশতের দরদাম নির্ধারণ ও মানসম্মত নিরাপদ গোশত প্রাপ্তির যে আইন রয়েছে তা প্রয়োগ না থাকায় দোকানিরা ক্রেতার কাছ থেকে খেয়াল খুশিমতো দাম নিচ্ছেন।
কুমিল্লা নগরীতে সিটি কর্পোরেশনের অধীনে পশু জবাইখানা রয়েছে মাত্র একটি। নগরীর সুজানগর প্রবেশমুখের সড়কের পার্শ্বেই জবাইখানার অবস্থান। রাত তিনটা/চারটার পর থেকেই মহিষ, ভেড়া-ছাগী ও রোগা গরুর পাশাপাশি ভোরবেলা জবাইখানায় নির্ধারিত কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মোটা-তাজা গরু এবং খাসী জবাই হয়ে থাকে। তবে বাজারের দোকানে আসার পর মহিষ হয়ে যায় গরু আর ভেড়া-ছাগী খাসী এবং রোগা গরুর গোশত হয়ে যায় মোটা তাজা দেশি গরুর গোশত।
সিটি কর্পোরেশনের জবাইখানা ছাড়াও নগরীর চর্থা, ধর্মপুর, বালুতুপাসহ কয়েকটি এলাকায় মহিষ ও ভেড়া-ছাগী জবাই হয়ে থাকে। তবে গোশত কিনতে গিয়ে ক্রেতারা যেমন ঠকছেন তেমনি হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকরাও গরু-খাসীর দামে কাস্টমারদের মহিষ আর ভেড়া-ছাগীর গোশত খাইয়ে ঠকাচ্ছেন। নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে গরুর গোশত বিক্রি হয় এমন দোকানের সংখ্যা প্রায় ২৫টি, চকবাজারে ৫টি, নিউ মার্কেটে ৮টি, রাণীর বাজারে ৫টি, বাদশা মিয়ার বাজারে ৭টি। আর উল্লেখিত বাজারে খাসীর গোশত বিক্রি হয় এমন দোকানের সংখ্যা ৩০টির বেশি হবে। কোন কোন দোকানদার ঘোষণা দিয়ে মহিষ ও ভেড়া-ছাগীর গোশত বিক্রি করে থাকলেও বাজারের অধিকাংশ দোকানই গোশত বিক্রিতে অসাধুপনায় জড়িয়ে রয়েছে। কুমিল্লার চান্দিনা, দাউদকান্দি, দেবিদ্বার, লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম, বুড়িচং, সদর দক্ষিণের বাজারগুলোর গোশত দোকানেও গরু ও খাসীর গোশত বিক্রির প্রক্রিয়ায় ঠকবাজি চলছে। ক্রেতারা মনে করেন, প্রতি সপ্তাহে গোশত দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হলে ওই ধরণের প্রতারণা কমে আসবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহিষ ভেড়া ছাগী জবাইয়ের পর হয়ে যায় গরু খাসী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ