Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পূর্ব ভূ-মধ্য সাগর ও আরব উপসাগরীয় দেশগুলো স্বার্থবাদী রাজনীতিতে জড়িত

রেড সি ডায়নামিক্স ৪

দ্য আফ্রিকা রিপোর্ট | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

লোহিত সাগরের দু’তীরের দেশগুলোর সংযোগটি আফ্রিকান সাহারার থেকে কোনো অংশে কম শক্তিশালী নয়। সাম্প্রতিক সময়ে সুদানী পেশাদার সৈনিকরা উপসাগরীয় দেশগুলোর স্বাধীনতার পরবর্তী উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করেছে এবং ইয়েমেনের বাণিজ্য দক্ষিণ লোহিত সাগরের সমস্ত দেশকে সংযুক্ত করেছে। রাজনৈতিকভাবে, মিসর ১৯৬০-এর দশকে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছে, আরব দেশগুলো ১৯৭০’র দশক এবং ‘৮০’র দশকে ইরিত্রীয় মুক্তিফ্রন্টের সক্রিয় সমর্থক ছিল এবং বর্তমান ইয়েমেন যুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইরিত্রিয়ায় আসাব বন্দরকে সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করছে এবং সুদানী সেনারা রিয়াদ ও আবু ধাবির ফ্রন্টলাইনে কাজ করছে।

তবে, আফ্রিকার রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যপদ আরব উপদ্বীগুলো পর্যন্ত প্রসারিত নয়। গত বিশ বছরে আফ্রিকান ইউনিয়ন শান্তিরক্ষার জন্য সম্মিলিত দায়িত্বের ভিত্তিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধের অবসান এবং নৃশংসতা বন্ধে একটি স্বতন্ত্র বহুপক্ষীয় আফ্রিকান শান্তি ও সুরক্ষা আদেশের নীতিমালা, কার্যক্রম ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, যা সাংবিধানিক গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটিয়েছে এবং সামরিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে। বিপরীতে, পূর্ব ভূ-মধ্য সাগরের দ্বীপরাষ্ট্রসমূহ এবং আরব উপসাগরের দেশগুলোর সিরিয়া ও ইয়েমেনের যুদ্ধের মতো স্বার্থবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এ দুটি যুদ্ধের আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীগণ ব্যক্তিগতভাবে আফসোস করেছেন যে, এ অঞ্চলটির শান্তি ও সুরক্ষা ব্যবস্থাপনার জন্য আফ্রিকার প্রক্রিয়াগুলোর মতো উন্নত এবং একই রকম নীতি ও সংস্থার হাতে থাকলে এই যুদ্ধগুলোর আরও সহজ সমাধান হতে পারতো।

দুর্ভাগ্যক্রমে, আরব দেশগুলোর আফ্রিকান হর্নের সাথে জড়িত থাকার কৌশলগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বহুপাক্ষিকতার শ্রমসাধ্য নীতির চেয়ে বরং নগদ স্বার্থ দ্বারা চালিত। যদিও মার্কিন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য সুরক্ষা জোটের পরিকল্পনা ইসরায়েলকে মিসর, সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে একত্রিত করেছে, তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তা গঠন করা হয়নি। এসব দেশই এ অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের স্তম্ভ হিসেবে কাজ করছে। জোটটি মূলত ইরান, চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে। হর্ন অফ আফ্রিকা নামে পরিচিত আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগরে বিস্তৃত উত্তরপূর্ব আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর জন্য মার্কিন বার্তাটি হ’ল, ওয়াশিংটনের আশির্বাদ নেয়ার আগে জোটের উচ্চাকাক্সক্ষী সদস্যদের প্রথমে রিয়াদ, আবুধাবি, কায়রো এবং তেল আবিবের শরণাপন্ন হতে হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, দু’বছর আগে যখন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবী আহমেদ এবং ইরিত্রিয়ার প্রেসিডেন্ট ইজায়িয়াস আফওয়ারকি দু’দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তখন তারা আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে অভিনন্দন গ্রহণ করার জন্য যৌথভাবে আবুধাবি এবং জেদ্দা ভ্রমণ করেছিলেন, যদিও আবী আহমেদ আফ্রিকান মহাদেশীয় সংস্থাটির মধ্যস্ততায় আলজিয়ার্স চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। এ চুক্তি থেকে দেখা য়ায় যে, তখন থেকেই ইরিত্রিয়ায় গণতন্ত্র নেই এবং দেশটির সীমানা নাগরিকদের অবাধ যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত নয়। (চলবে)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লোহিত সাগর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ