Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাওনা পরিশোধ করেও দিচ্ছেন খেসারত

যেতে হয় ৬শ’ কি.মি. দূরের আদালতে

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে, শীর্ণ চেহারায় ক্লান্তি ছাপ অনেকটাই স্পষ্ট। পথের ধকল আর মানতে চাইছিলো না ষাটোর্ধ বয়সী খয়রুলের, তাই পাশে থাকা স্ত্রীর হাত ধরে রেখেছিলেন পরম নির্ভরতায়। কন্ঠে ঝরছিলো কষ্টের ক্ষোভ। জানা গেলো তারা ফিরছিলেন ৬০০ কি.মি. দূরের ঝিনাইদহ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে। পাওনা পরিশোধ করেও স্ত্রীসহ তাকে দিতে হচ্ছে বিচারাধীন মামলার হাজিরা।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে নিজ ক্ষেতে সবজি চাষের পাশাপাশি খয়রুল ইসলাম নিজ গ্রাম কহর পাড়ায় দুই ভাই স্টোর নামে রাসয়নিক সার ও কিটনাশকের খুচরা বিক্রেতা হিসেবে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এই ব্যবসা শুরুর আগে ঝিনাইদহের ইউনিয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিচয় দেয়া বসির আহমেদ তাকে বলেন কোম্পানির পণ্য নিতে হলে তাকে নিজ বা স্ত্রীর নামে একটি একাউন্ট খুলে সেই ব্যাংকের একটি খালি চেক তাদের কাছে জমা দিতে হবে।
খয়রুল সরল বিশ^াসে এ সময় তার স্ত্রী পারুল বেগমের নামে প্রাইম ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখায় একটি সেভিংস একাউন্ট খুলে তার একটি চেক বসিরকে দেন। এক পর্যায়ে কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ মোস্তফা আল মামুন পণ্য ক্রয়ের বিপরীতে খয়রুলের কাছ থেকে দুই দফায় মোট ১ লাখ ২২ হাজার টাকা গ্রহণ করে মানি রিসিট প্রদান করলেও সে টাকা কোম্পানিতে জমা না দিয়ে চাকরি বাদ দিয়ে চলে যান। এভাবে কোম্পানির যাবতীয় টাকা পরিশোধ করা সত্তে¡ও কোম্পানির মালিক নিজ অধিনস্ত কর্মচারীকে দায়ী না করে খয়রুল ও তার স্ত্রীর নামে ঝিনাইদহ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে শূন্য চেকের বিপরীতে টাকা দাবি করে মামলা করেন।

টাকা পরিশোধের পরও এ ধরনের মামলায় হয়রানির বিহীত চেয়ে খয়রুল ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা ও ঠাকুরগাঁও সদর থানায় জিডি করেন। তারপরও মামলায় ৬’শ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইদহে মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে আর্থিক ও করোনা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন এবং শূন্য চেক প্রদানের ব্যাপারে দুঃশ্চিন্তায় দিনযাপন করছেন।

ঠাকুরগাঁও জেলায় সবজি চাষে বিপ্লব আনা অন্যতম সফল প্রবীণ কৃষক এই খয়রুল ইসলাম। জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে কৃষিকাজ করে। শেষ বয়সে এসে শরীর যখন পরিশ্রমের ভার বইতে পারছিলো না তখন শুরু করেছিলেন ক্ষুদ্র সার ও কীটনাশকের ব্যবসা। জেলার কৃষির অন্যতম পথিকৃতের এ দুর্দশার সমাধান হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ