Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কাটা হচ্ছে আধাপাকা ধান

খড়ের দাম বেশি

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

ইতোপূর্বে দেখা গেছে পাটের চাইতে পাটখড়ির দাম বেশি, গমের চাইতে ভ‚ষির দাম বেশি, চালের চাইতে ক্ষুদের দাম বেশি বর্তমানে সেই ধারাবাহিকতায় দেখা যাচ্ছে ধানের চাইতে খড়ের দাম বেশি। তাই কৃষকদের অনেকেই আধা পাকা ধান কেটে ধান ও খড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে আগাম জাতের ধান কাটা মারা শুরু হয়েছে। ধানের দামও চড়া। বর্ষা মৌসুমে জমিতে পলি মাটি পড়ায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকদের চোখে মুখে দেখা যাচ্ছে হাসির ঝিলিক।
জানা গেছে, পরপর ৩/৪ দফা বন্যায় কৃষকদের ফসলহানী ঘটায় তারা বিপাকে পড়ে। সেই সাথে বন্যায় চরম ক্ষতি হওয়ায় গো-খাদ্যের অভাব দেখা দেয় চরমভাবে। ফলে কৃষকদের গো-খাদ্যে সংগ্রহে বিপাকে পড়ে সেই সাথে খড়ের দাম ২/৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকেরা গো-খাদ্যের বিকল্প পন্থা খুজতে হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকে। কলা পাতা, কচুরী পানা, প্রভৃতি সংগ্রহ করে গো-খাদ্যের চাহিদা মেটায় কিন্তু গো-খাদ্যের মূল বস্তু খড়ের বিকল্প খুজতে গিয়ে গবাদীপশুর অনেক রোগ বালাই দেখা দেয়। ফলে তাদের হিমসিম খেতে হয়। চাহিদার তুলনায় গো-খাদ্য খড়ের পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। দামও বেড়ে যায়। অনেকে অগ্নিমূল্যে খড় কিনে গোবাদী পশু পালন করলেও প্রান্তিক কৃষকদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এমন অবস্থায় দেখা যায় ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি। আগে ১ আটি ধানের খড় ২/৩ টাকা হলেও তা বেড়ে ১০/১৫ টাকা হয়ে যায় এলাকা ভেদে। ফলে কৃষকেরা গো- খাদ্যের জন্য আধা পাকা ধান কেটে খড় বিক্রি করে। বৃহত্তর সিরাজগঞ্জ পাবনা চলনবিলসহ উত্তরাঞ্চল জুড়ে বর্তমানে খড় ও ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা উভয়ভাবে লাভবান হচ্ছে। এদিকে, সিরাজগঞ্জে মৌসুমি রোপা আমন ধানের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যেই আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। সেইসাথে বাজারে নতুন এ ধানের দাম ও কদর থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৬৮ হাজার ৪’শ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমন ধান কিছুটা বেশি চাষাবাদ করা হয়েছে। কৃষকরা বিনা-৭, ব্রি-৪৯, ৫০, রনজিৎ, স্বর্ণা, মামুন, কাটারি ভোগ, আতপ জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়। এর মধ্যে উফশী ও হাইব্রিড ধানের চাষাবাদ বেশি করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে জেলার শস্যভান্ডার খ্যাত তাড়াশ, কামারখন্দ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে।
ধানের দাম বেশি থাকায় আগাম জাতের ধানের চাষাবাদ করা হয়। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন। বন্যায় জমির মাটি উর্বর ও আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, অগ্রহায়ণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিক থেকে এই ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়ে থাকে। কিন্তু এবার আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতিমণ ধান ১১০০ টাকা থেকে ১১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ধান বিক্রি করে চাষিরা পরবর্তী কৃষি আলু ও সরিষা চাষের অর্থ যোগান দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ডিডি কৃষিবিদ আবু হানিফ বলেন, বন্যা পরবর্তীতে এবার আবহাওয়া অনুক‚লে ও রোগ বালাইয়ের আক্রমণ না থাকায় এ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না ঘটলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আধাপাকা-ধান

২০ নভেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ