Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ট্রাম্পকে পরাজয় মেনে নিতে ঘনিষ্টজনদেরও আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:১৪ পিএম

মাকিন নির্বাচনের ফল পাল্টানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো যেসব চেষ্টা চালাচ্ছেন তা বন্ধ করে পরাজয় মেনে নিতে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান। জো বাইডেনের কাছে পরাজয় মেনে নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নিউ জার্সির সাবেক গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি। প্রেসিডেন্টের আইনজীবীদের দলকে তিনি ‘জাতীয় পর্যায়ের কলঙ্ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ক্রিস ক্রিস্টি ট্রাম্পের বেশ ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।
আজ সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ২০ দিনের মতো পার হয়ে গেলেও ট্রাম্প এখনো কারচুপির ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেই যাচ্ছেন। তার নিজের দলের অনেকেই ট্রাম্পের আইনি লড়াইয়ের পক্ষে কথা বললেও এর বিরোধিতাকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
৩রা নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে ট্রাম্প অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন। ভোটে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে বলে তিনি ও তার প্রচার শিবিরের লোকজন অভিযোগ করে এলেও এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তারা।
এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ রিপাবলিকানকে ট্রাম্পের পক্ষ নিতে দেখা গেলেও অল্প কয়েকজন দলীয় অবস্থানের বিপরীতে দাঁড়িয়েই প্রেসিডেন্টকে হার মেনে নিতে অনুরোধ করেছেন। এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলেও ভাষ্য মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর।
শনিবার ট্রাম্প পেনসিলভেইনিয়াতেও বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন। ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যটিতে ডাকযোগে আসা লাখ লাখ ভোট বাতিলের দাবিতে তার প্রচার শিবিরের করা মামলা ফেডারেল আদালত খারিজ করে দিয়েছে।
এর ফলে বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী ঘোষণা করতে পেনসিলভেইনিয়ার কর্মকর্তাদের আর কোনো বাধা থাকল না। ডেমোক্র্যাট এ প্রার্থী রাজ্যটিতে ট্রাম্পের চেয়ে ৮০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন।
গণনাকৃত ভোটের হিসাবে বাইডেন মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে ৩০৬টি পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজনীয় ২৭০ ভোটের চেয়ে অনেক বেশি।
রোববার এবিসি’র ‘দিজ উইক’ অনুষ্ঠানে নিউ জার্সির সাবেক গভর্নর ক্রিস্টি বলেন, “সত্যিকার অর্থে প্রেসিডেন্টের আইনি দলের আচরণ জাতীয় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। ট্রাম্প শিবির প্রায়ই আদালতের বাইরে নির্বাচনে জালিয়াতির বিষয়টি আলোচনা করছে; কিন্তু যখন তারা আদালত কক্ষে যাচ্ছে তখন তারা এ সংক্রান্ত যুক্তিতর্ক হাজির করতে পারছে না। ”
“আমি দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসিডেন্টের সমর্থক। দু’বার তাকে ভোট দিয়েছি। নির্বাচনের ফলাফল হয়েছে এবং যেটা হয়নি সেটা হয়েছে মনে করে আমরা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারি না,” মত এ প্রভাবশালী রিপাবলিকানের
২০১৬ সালে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতা সমর্থন করা প্রথম গভর্নর ছিলেন ক্রিস্টি। চলতি বছর বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ট্রাম্পের প্রস্তুতিতেও সহায়তা করেছিলেন তিনি।
রোববার রিপাবলিকান পার্টির আরও কয়েকজন ট্রাম্পকে হার মেনে নিতে অনুরোধ করেছেন।
মেরিল্যান্ডের গভর্নর ল্যারি হোগান সিএনএনকে বলেছেন, নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে ট্রাম্প শিবিরের ধারাবাহিক চেষ্টায় ‘মনে হওয়া শুরু হয়েছে যে আমরা একটি ব্যানানা রিপাবলিক’।
“ট্রাম্পের উচিত গলফ খেলা বন্ধ করা ও হার মেনে নেওয়া,” টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই বলেছেন এ রিপাবলিকান গভর্নর।
মিশিগান থেকে নির্বাচিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্য ফ্রেড উপটন বলেছেন, তার রাজ্যের ভোটাররা বাইডেনকে বেছে নিয়ে তাদের রায় জানিয়ে দিয়েছেন।
নর্থ ডাকোটার কেভিন ক্রেমার এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরুর সময় পেরিয়ে যাচ্ছে’ বলে সতর্ক করেছেন। রিপাবলিকান এ সিনেটর অবশ্য এখন পর্যন্ত দলের বেশিরভাগ সদস্যের মতোই বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি দেননি।
এবিসি টিভি চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস ক্রিস্টি বলেছেন, ‘যদি খোলাখুলি বলি তাহলে ট্রাম্পের আইনজীবীরা যা করছেন তা একদম জাতীয় পর্যায়ের বিব্রতকর কার্যকলাপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোর্টরুমের বাইরে সারাক্ষণ নির্বাচনে জালিয়াতির কথা বলে যাচ্ছে ট্রাম্পের দল। কিন্তু কোর্টরুমের ভেতরে তারা জালিয়াতির যুক্তি দেখাচ্ছে না। আমি অনেকদিন ধরে প্রেসিডেন্টের সমর্থক। তাকে আমি দুবার ভোট দিয়েছি। কিন্তু যা ঘটেনি তবুও অনবরত সেটাই ঘটেছে বলে যেতে পারি না আমরা।’
অন্যদিকে, ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট হিসেবে পরিচিত পেনসিলভিনিয়াতে ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট বাতিল করার যে মামলা করেছিলেন ট্রাম্প তা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। যা ট্রাম্পের জন্য বড় ধরনের এক ধাক্কা।
এ ব্যাপারে বিচারক ম্যাথ্যু ব্র্যান বলেছেন, ‘কতগুলো ভিত্তিহীন আইনি যুক্তিতর্ক তার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ পেনসিলভানিয়াতে এই রায়ের পরে জো বাইডেন ৮০ হাজার ভোটে এগিয়ে গেছেন।
জো বাইডেন ৩০৬ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৩২টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জিততে দরকার হয় ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। সূত্র : সিএনএন, এবিসি টিভি



 

Show all comments
  • Md Rakib Hasan ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ১:১১ পিএম says : 0
    Trump Is A Crazy President He Never Be A Good Person He Is Nonsense He Is A Muslim Enimy I Hate Him
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাকিন নির্বাচন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ