Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নবগঙ্গার মাটি অবৈধ বিক্রি

আবদুস সালাম খান, লোহাগড়া (নড়াইল) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নড়াইলের লোহাগড়ায় নবগঙ্গা নদীর মাটি অবৈধভাবে কেটে নিয়ে ইটভাটা ও পুকুর ভরাটসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। তারা গত কয়েকমাস ধরে প্রকাশ্যে শতাধিক ট্রাকে করে ভেকু ম্যাশিন দিয়ে নদী পাড়ের মাটি অন্যত্র বিক্রি করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে নীরব-নির্বিকার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২০ আগস্ট একনেকের সভায় ৩০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি-নবগঙ্গা উপপ্রকল্প পুনর্বাসন ও নবগঙ্গা নদী খনন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। ওই প্রকল্পের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ১৮ মার্চ নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মোর্তুজা আনুষ্ঠানিকভাবে নবগঙ্গা নদী খনন কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্প অনুযায়ী নদীর বর্তমান অবস্থানের পরিবর্তে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী খনন কাজ শুরু হয়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ নদী পাড়ের বাসিন্দারা তাদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে হাইকোর্টে রিট করেন।
উক্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে খনন কাজ শুরু হলেও কয়েক দিনের মাথায় কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। সরকারিভাবে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হলেও একটি প্রভাবশালী চক্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নদীর পাড় বাঁধা মাটি কেটে বিভিন্ন ইটের ভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। শতাধিক ট্রাক দিন রাত অবৈধভাবে মাটি কেটে নিলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এভাবে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার ফলে পরবর্তিতে ওই প্রকল্পের খনন কাজ শুরু হলে তখন নদীর পাড় বাধার মাটির সঙ্কট দেখা দেবে। এছাড়া নদী খনন কাজের নির্দিষ্ট সীমানা নির্ধারণ থাকলেও মানছে না ওই প্রভাবশালী চক্র। তারা তাদের সুবিধা মতো যত্রতত্র থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে বাড়ছে চরম জনভোগান্তি। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্বৃত্ত চক্রের অন্যতম সদস্য হলেন, উপজেলার পাঁচুড়িয়া গ্রামের নুর আলম। নুর আলমের সহযোগি মল্লিকপুর গ্রামের আরো ৮-১০ জন রয়েছে। ওই দুর্বৃত্ত চক্রের সদস্যরা মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে নেয়ার ফলে নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে নদী তীরবর্তী বসতিরা।
সরেজমিনে জানা যায়, নবগঙ্গা নদীর চর-মল্লিকপুর এলাকায় ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে তুলে পাচার করা হচ্ছে।
এ সময় কথা হয় মাটি কাটায় নিয়োজিত ভেকু ড্রাইভারদের সাথে। তারা বলেন, নুর আলম আমাদের মাটি কাটার কাজে এখানে এনেছে। তার কথাতেই মাটি কেটে ট্রাকে লোড করছি। তবে, নুর আলম বলেন, আমি ট্রাকটর ও ভেকু ভাড়া দিয়েছি। মাটি কাটার কাজ করছে মল্লিকপুর গ্রামের হাসান মৃধা। হাসান মৃধা জানান, তিনি তার নিজের রেকর্ডীয় জমি থেকে মাটি কেটেছেন। তিনি দাবি করেন, তিনি নদীর মাটি কাটেননি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই মাটি বিক্রি করতেছি।
নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওয়াজেদ আলী চাকলাদার জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাছাড়া তিন চার মাস আগেই কিছু অংশের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি অংশে বর্ষার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। এখন তো মাটি কাটার কথা না। তবে মাটি বিক্রি করার কোনো নিয়ম নেই, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে অনুমতি সাপেক্ষে মাটি নেয়া যায়। আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ