Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অর্থনীতির সক্ষমতায় বৈদেশিক অনুদান নেমেছে ৩ শতাংশে

চলচ্চিত্র শিল্পীদের আর্থিক সহায়তায় আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণ ও দুস্থ-অসুস্থ শিল্পীদের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০২০’ এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এদিকে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ায় বৈদেশিক সহায়তায় অনুদানের পরিমাণ ন্যূনতম পর্যায়ে নেমে এসেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ায় বৈদেশিক সহায়তায় অনুদানের পরিমাণ ন্যূনতম পর্যায় অর্থাৎ তিন শতাংশে নেমে এসেছে বলে মন্ত্রিসভাকে জানানো হয়েছে।

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলক কক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সংযুক্ত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট নামের একটি আইন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পীদের একটি কল্যাণ ট্রাস্ট আইন করা যায় কিনা। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয় আইন প্রণয়ন করে এবং এর আগে মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যারা এই আইনের অধীনে আসবেন তারা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আইনে তার সুবিধা পাবেন না। যেকোনো এক জায়গায় সে নিবন্ধিত থাকবে এবং সেই ডাটা বেইজ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পাবেন। ট্রাস্ট পরিচালনায় একটা বোর্ড থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন তথ্যমন্ত্রী। বোর্ডের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকবেন, তিনি সরকার থেকে মনোনীত হবেন। তাদের কাজ হবে চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণ সাধন, চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, অসমর্থ-অস্বচ্ছল বা পেশাগত কাজ করতে অক্ষম চলচ্চিত্র শিল্পীকে প্রয়োজনীয় শিল্পীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, অসুস্থ চলচ্চিত্র শিল্পীদের চিকিৎসার ব্যয় গ্রহণ, দুস্থ-অস্বচ্ছল চলচ্চিত্র শিল্পীদের মৃত্যু হলে তার পরিবারকে সহায়তা করা। ট্রাস্টের একটি তহবিল থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেখান থেকে তহবিল সংগ্রহ করে সবাইকে সহযোগিতা করবে। তবে তথ্য মন্ত্রণালয় একটি সিড মানি পাবে। সেটি নির্ধারণ করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। ট্রাস্টের বাজেট বিবরণী প্রত্যেক বছর সরকারকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে হবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বৈদেশিক সহায়তা সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করার প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বৈদেশিক সহায়তার অবস্থা কি সে বিষয়ে ছিল এই উপস্থাপনাটি। সেখানে ১৯৭১-৭২ থেকে এই পর্যন্ত ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত যদি একটা তুলনা করি সেখানে দেখা যাবে, ১৯৭১-৭২ অর্থবছর আমাদের বৈদেশিক সহায়তার মধ্যে গ্র্যান্ট (অনুদান) ছিল সর্বোচ্চ ৮৪/৮৫/৮৬ শতাংশ, ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ম্যাক্সিমামটাই বেশিরভাগ দান হিসেবে আসত। তিনি বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরের দিকে গিয়ে অনুদান এসেছে ৩০ শতাংশের মতো, ৭০ শতাংশের মতো আসল ঋণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনুদান আসছে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশের মতো, আর ৯৫ শতাংশই আসছে ঋণ হিসেবে। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু এটা থেকে বোঝা যাচ্ছে, কিভাবে শিফট হয়ে যাচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদান আরও কমে গেছে, ২-৩ শতাংশের মধ্যে রয়েছে, ৯৭ শতাংশেই আসছে ঋণ হিসেবে। আমরা আর দানের ওপর নির্ভর করছি না। আমরা আমাদের নিজস্ব দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবচেয়ে মজার বিষয় হলো আমরা রি-পেমেন্টের ক্ষেত্রে কোনো দিনই ডিফল্ডার হইনি। এটা একটা বড় সাকসেস। তিনি বলেন, ১৯৯৭-৯৮ সালে আমাদের বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় ছিল ৭৪৮ মিলিয়ন ডলার, তখন আমাদের জিডিপির ৩০ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছিল ঋণের পরিমাণ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমাদের ডিসবার্সমেন্ট হচ্ছে সাত হাজার ১২১ মিলিয়ন ডলার, কিন্তু এটা আমাদের জিডিপির মাত্রা ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে আমাদের ডমেস্টিক ইনভেস্টমেন্ট অনেক বেড়ে গেছে। এত টাকা বাড়ার পরও জিডিপির সঙ্গে এর অনুপাতটা অনেক কমে এসেছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের ৪৪ হাজার ২৩ মিলিয়ন ডলার। এটা জিডিপির ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ঋণের মধ্যে ৩৭ শতাংশ বিশ্বব্যাংকের, ২৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ এডিবির, জাপানের জাইকার ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, চীনের ৬ দশমিক ৮১, রাশিয়ার ৬ দশমিক ১৪, ভারতের এক দশমিক ৩ এবং অন্যান্য ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এই হচ্ছে আমাদের বৈদেশিক ঋণ। ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে আমাদের এডিপি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি পাঁচ হাজার ১০৩ কোটি টাকা ছিল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এর মধ্যে বৈদেশিক সাহায্য ছিল তিন হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। এর মানে এডিপির ৬৩ শতাংশ ছিল বৈদেশিক সহায়তা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এডিপির বরাদ্দ ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা ছিল ১১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এডিপিতে ফরেন এইডের কন্ট্রিবিউশন ছিল ৩৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমাদের এডিপি হছে এক লাখ ৭৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, বৈদেশিক সাহায্য আসছে ৫১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। বৈদেশিক সাহায্য বেড়েছে কিন্তু পার্সেন্টেজ নেমে এসেছে ২৯ দশমিক ২৫-এ। আমাদের নিজস্ব বিনিয়োগ এত বেড়েছে যে, বাইরের ঋণ এলেও এটা শতাংশের হারে অনেক নিচে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের ঝুঁকি নেই। বৈদেশিক ঋণ যখন জিডিপির ৪০ শতাংশ বা এর বেশি হয়ে যায় তখন ঝুঁকি থাকে। আমাদের জিডিপির তুলনায় বৈদেশিক ঋণ হলো ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আমরা অনেক সেফটিতে আছি আল্লাহর রহমতে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করছি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০ শতাংশ পর্যন্ত সেফটি রেঞ্জ। আমরা অনেক নিচে আছি।



 

Show all comments
  • Syed Salim Ahmed ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৩৮ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা ভরে কৃজ্ঞতা জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Hassan Polash ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৩৯ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ খুশির সংবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • তানিয়া ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৩৯ এএম says : 0
    আনন্দ সংবাদ চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য, চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণ সাধন, অসুস্থ শিল্পীদের চিকিৎসা সহ তাদের সামগ্রিক কল্যাণে একটি কল্যাণ ট্রাস্ট আইনের খসড়া মন্ত্রীসভায় অনুমোদন। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
    Total Reply(0) Reply
  • Aruna Biswas ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৪০ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা সবসময় শিল্পীদের পাশে দাঁড়াবার জন্য
    Total Reply(0) Reply
  • Keya ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৪১ এএম says : 0
    Lots of love n respect for u dear deshrotno manoniyo prodhan montry Sheikh Hasina
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ