ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে খুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিক্ষার্থীদের
রিমান্ডে গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে স্বর্ণ চোরাচালান, রাজউকের প্লট দখল ও বিদেশে টাকা পাচারের সাথে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং সুবিধাভোগিদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করছেন গোল্ডেন মনির। গামছা বিক্রির পর থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার পেছনে গত ২০ বছরে রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীসহ ঘনিষ্ট্য সখ্যতা ছিল এমন ২৫জনের নাম প্রকাশ করেছেন গোল্ডেন মনির। সরকার পরিবর্তন হলেও ওই শক্তিশালী সিন্ডিকেটের বলয়ের মধ্যে থেকেই সব সময় সেল্টার পেতেই তিনি। অন্যদিকে গোল্ডেন মনিরের স্বর্ণ চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, প্লট জালিয়াতি ও বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে দুদকসহ চারটি সংস্থা। তবে গতকাল পর্যন্ত সহযোগি বা অবৈধভাবে যারা গোল্ডেন মনিরের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহন করেছেন তাদের গ্রেফতার বা তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেনি আইন-শৃংখরা বাহিনী। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
গত ২১ নভেম্বর গ্রেফতারকৃত গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে র্যাবের করা তিনটি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। প্রথমে তাকে বাড্ডা থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে মঙ্গলবার ২৪ নভেম্বর বিকেলে তিনটি মামলার তদন্তভার ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগের কাছে ন্যাস্ত করা হয়েছে। বর্তমানে গোল্ডেন মনির ডিবি হেফাজতে রয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সাথে সম্পৃক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে গোল্ডেন মনির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আমরা সেগুলোর বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহে কাজ করছি। তার অপকর্মের সহযোগীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির সুবিধাভোগি ২৫জনের নাম প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে পৃথকভাবে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত করে পরবর্তী করনিয় টিক করা হবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে স্বর্ণ চোরাচালানের যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। তার বিশাল নেটওয়ার্ক। সব মহলের তার যোগাযোগ রয়েছে।
ডিএমপি গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মো. মশিউর রহমান বলেন, গোল্ডেন মনিরের তিনটি মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা আসামিকে ডিবি হেফাজতে নিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
রাজউক-এনবিআর-দুদক-বিআরটিএ’র কার্যক্রম চলছে
গোল্ডেন মনির গ্রেফতারের পর চারপাশ থেকে সরকারের সংস্থাগুলোর জোরালো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে। অবৈধ সম্পদের খোঁজ শুরু করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের (দুদক) সচিব মুহাম্মদ দিলওয়ার বখত বলেছেন, অপরাধ শিডিউলভুক্ত হলে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কী পরিমাণ স্বর্ণের চালান দেশে এনেছেন ও পাচার করেছেন সেটি অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতিমধ্যে গোল্ডেন মনির, তার স্ত্রী ছেলে এবং মায়ের সকল ব্যাংক হিসারের তথ্য চেয়ে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে চিঠি দিয়েছে। মনিরের বাসা ও গাড়ির শোরুম থেকে ৫টি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানী ও ও সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত গাড়ি অবৈধভাবে বিক্রির বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। অপরদিকে, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অসংখ্য ভূমি ও প্লট দখলের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, স্বর্ণ চোরাচালন চক্রের অন্যতম শফির সাথেও ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল গোল্ডেন মনিরের। তাকে গ্রেফতার করার পর থেকে সোনা শফির নানা অপরাধ ও অপকর্মের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। সেই সঙ্গে গোল্ডেন মনিরের সহযোগী হিসেবে যারা নানা সুবিধা ভোগ করেছেন, ইতিমধ্যে তাদের তালিকা তৈরি করছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। গোল্ডেন মনিরের সহযোগী ও সুবিধাভোগীদের মধ্যে আছেন জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তা। এরপর গড়ে তোলেন সোনা চোরাচালানের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। ঢাকা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও ভারতে সোনা চোরাচালান শুরু করেন তিনি। রাতারাতি অঢেল টাকার মালিক হয়ে ওঠেন। সেই সঙ্গে শুরু করেন অর্থপাচার।
একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকে গোল্ড মনিরের ৯৩০ কোটি টাকা গচ্ছিত থাকলেও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আয়কর নথিতে মাত্র ২৫ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। এ বিষয়েও অনুসন্ধান করছে এনবিআর। বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি তদন্ত সিআইডি। গত ২১ নভেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় ডিআইটি প্রজেক্টের ১৩ নম্বর রোডের নিজ বাসা থেকে মো. মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে গ্রেফতার করে র্যাব। অভিযানে ওই বাসা থেকে ৬০০ ভরি (আট কেজি) স্বর্ণ, ১টি বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০টি দেশের বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। এছাড়া তার বাড়ি থেকে অনুমোদনহীন দুইটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং অটো কার সিলেকশান নামের তার গাড়ির শোরুম থেকে তিনটি অনুমোদনহীন বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।