Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৫ রানেই মুস্তাফিজের ৪ শিকার

মাইলফলকের ম্যাচে ম্লান সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সেরা দলের তকমা ছিল তাদের গায়ে। কিন্তু সবচেয়ে দামী জেমকন খুলনা মাঠে নামার পর মিলছে ভিন্ন ছবি। আগের দুই ম্যাচের মতো আবার ব্যাটিং ধসের ধারাবাহিকতা রেখেছে সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহর দল। এবার গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে একশো রানও করতে পারেনি তারা। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খুলনাকে ৮৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে চট্টগ্রাম জিতে যায় ৩৮ বল আর ৯ উইকেট বাকি রেখে। এই নিয়ে নিজেদের দুই ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে একশর নিচে আটকে ফেলল চট্টগ্রাম। আগের ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকাকে ৮৮ রানে থামিয়ে একই ব্যবধানে জিতেছিল দলটি।
খুলনার মূল হন্তারক এদিন মুস্তাফিজুর। ৩.৫ ওভারে মাত্র ৫ রানে এই বাঁহাতি পেসারের শিকার ৪ উইকেট। নতুন বলের অফ স্পিনে ৪ ওভারের টানা স্পেলে ১৫ রান দিয়ে নাহিদুলের প্রাপ্তি ২ উইকেট। তাদের ফাঁকে দুই উইকেট নিয়েছেন অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলামও। টুর্নামেন্টে চট্টগ্রামের এটি টানা দ্বিতীয় জয়, ফেভারিট হিসেবে আসর শুরু করা খুলনার তিন ম্যাচে দ্বিতীয় হার।
প্রতিপক্ষ বাজে ব্যাটিং করেছে বটে। তবে আগের ম্যাচের মতো এ দিনও মোহাম্মদ মিঠুনের অধিনায়কত্ব ছিল নজরকাড়া। মিঠুনের বোলিং পরিববর্তন, মাঠ সাজানো, চাপ ধরে রাখা, এসব চোখে পড়ার মতোই। গতকাল দুপুরে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইকেট ছিল বেশ ভালই। তবে টস হেরে খুলনার জন্য সেটাই হয়ে গেল কঠিন দুর্গ। ইনিংসের শুরুতেই চমক। ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে সাকিব আল হাসান! কিন্তু ২২ গজে খুলনার ব্যাটিংয়ের দুরবস্থার কোনো বদল নেই। আবারও ব্যর্থ বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডার। লম্বা সময়ে না খেলার ছাপ রেখে ক্যাচ দেন ৭ বলে ৩ রান করে। তার আগে এনামুল হক বিজয়ের রান আউটেও নিজের দায় রেখে যান। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এদিনও ছিলেন মলিন। শুরুতে ধুঁকতে থাকা ইমরুল কায়েস ডানা মিলছিলেন। আরেক পাশে উইকেট পড়তে দেখে ফের গুটিয়ে যান। সেই অবস্থা থেকে আর উত্তরণ ঘটাতে পারেননি। ২৬ বল খেলে তার ২১ রানই অবশ্যই দলের সর্বোচ্চ।
শেষ দিকে তাদের কেটে খুলনার ইনিংসের শেষ দিকটাই আতঙ্ক হয়ে উঠেন মুস্তাফিজ। তার বল থেকে রান বলতে গেলে আসেইনি, পড়েছে টপাটপ উইকেট। মাত্র ৫ রানেই তাই ৪ শিকার তার। অর্ধেক ম্যাচেই হেরে বসা খুলনাকে মিরাকল কিছু না হলে বাঁচাতে পারতেন না বোলাররা। তা হয়নি। লক্ষ্যটা কেবল ৮৭ রানের। বিস্ময়কর কিছু না ঘটলে এমন ম্যাচে ফল খুবই অনুমেয়। হয়েছেও সেটাই। তবে এরমধ্যেই রান তাড়ায় চোখ জুড়ানো কিছু শট খেলে আনন্দ দিয়েছেন লিটন দাস। তার দূর্দান্ত অপরাজিত ফিফটিতে ভর করেই দল পেয়েছেন অনায়াস জয়।
তবে এই ম্যাচে দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব। শরিফুল ইসলামের লাফানো বল স্কয়ার লেগে আলতো হাতে খেলে একটি রান। তাতেই অপেক্ষার অবসান। ওই রান দিয়েই সাকিব আল হাসান স্পর্শ করলেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৫ হাজার রান। পাশাপাশি এই অলরাউন্ডার প‚রণ করে ফেললেন দারুণ এক ডাবলও। ৫ হাজার রানের আগে টি-টোয়েন্টিতে ৩৫৫টি উইকেটও আছে সাকিবের। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ৫ হাজার রান তার আগে ছুঁয়েছেন ৬৪ জন। সাড়ে তিনশ উইকেট নিয়েছেন তিনি ছাড়াও ৫ জন। কিন্তু এই দুই তালিকায়ই নাম লেখানো মাত্র দ্বিতীয় ক্রিকেটার সাকিব।
এই অর্জন এতদিন ছিল কেবল ডোয়াইন ব্রাভোর। টি-টোয়েন্টির যাযাবর ৩৭ বছর বয়সী এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ৪৭১ ম্যাচে রান করেছেন ৬ হাজার ৩৩১, উইকেট নিয়েছেন ৫১২টি। সাকিব এই ম্যাচ দিয়ে খেললেন ৩১১ ম্যাচ। ব্রাভো আর সাকিব ছাড়া ৫ হাজার রানের পাশে ৩০০ উইকেট আছে আর কেবল আন্দ্রে রাসেলের। ৩৪১ ম্যাচে এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার রান করেছেন ৫ হাজার ৭২৮, উইকেট নিয়েছেন ঠিক ৩০০টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
জেমকন খুলনা : ১৭.৪ ওভারে ৮৬ (এনামুল ৬, সাকিব ৩, ইমরুল ২১, মাহমুদউল্লাহ ১, জহুরুল ১৪, আরিফুল ১৫, শামীম ১১, শহিদুল ৫; নাহিদুল ২/১৫, মুস্তাফিজ ৪/৫, তাইজুল ২/৩০)। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ১৩.৪ ওভারে ৮৭/১ (লিটন ৫৩*, সৌম্য ২৬, মুমিনুল ৬*; আল-আমিন ০/১১, সাকিব ০/১৪, হাসান ০/১৭, শামীম ০/১১, শহিদুল ০/৭, মাহমুদউল্লাহ ১/১৬, রিশাদ ০/১০)।
ফল : গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : মুস্তাফিজুর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ম্যাচে-ম্লান-সাকিব
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ