Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি

প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সমুদ্র বন্দরে ৩নং সতর্ক সংকেত, চট্টগ্রামে পণ্য ওঠানামা ব্যাহত, রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধস : দক্ষিণাঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত
ইনকিলাব ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে শনিবার রাত থেকে গত সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে একটানা মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে দেশের সকল সমুদ্র বন্দরে ৩নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং দক্ষিণাঞ্চলের সকল নদী বন্দরসমূহকে ২নং সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। অনধিক ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে সকল যাত্রীবাহী নৌযান পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বর্ষণ ও জোয়ারে চট্টগ্রাম প্লাবিত
চট্টগ্রাম ব্যুরো : সুস্পষ্ট লঘুচাপের সক্রিয় প্রভাবে শনিবার রাত থেকে গতরাত পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে টানা ভারী বর্ষণ হয়েছে। একই সাথে প্রবল সামুদ্রিক জোয়ারের দ্বিমুখী চাপে চট্টগ্রামের নি¤œাঞ্চল হাঁটু সমান পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বিরাজ করছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এতে করে থমকে যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর-শিপিং ও বাণিজ্যিক কর্মকা-। দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার সাথে টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আমদানি পণ্যসামগ্রীর লাইটারিং খালাস কাজ ব্যাহত হয়। বন্দর থেকে ও বন্দরমুখী ডেলিভারি পরিবহনও কমে গেছে। বর্ষণের সাথে জোয়ারে বিভিন্ন এলাকার সড়ক, জনবসতি তলিয়ে গেছে। নগরীর চাক্তাই খাতুনগঞ্জ ও আগ্রবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় শতাধিক গুদাম, আড়তে মজুদ এবং দোকান-পাটে থাকা বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী বিনষ্ট হয়েছে। নিচু এলাকায় বসবাসরত কয়েক লাখ মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৯৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানায় পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তর। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বর্ষণ অব্যাহত ছিল। আকাশ ঘনকালো মেঘে ঢাকা রয়েছে। আজও (সোমবার) চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
সর্বশেষ আবহাওয়া সতর্কবার্তায় জানা গেছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে খুলনাঞ্চল
খুলনা ব্যুরো : নি¤œচাপের প্রভাবে সারাদিনের ভারী বর্ষণে খুলনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা তলিয়ে গেছে। তলিয়েছে মহানগরীর সব রাস্তাঘাট। গতকাল রোববার ভোর থেকেই সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাগাতার বৃষ্টিপাত চলছিল। আবহাওয়াবিদরা বলছেন- এটা এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত চলছে। শুধু বৃষ্টিই নয়, থেকে থেকে বইছে দমকা হাওয়া। ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ার কারণে স্থবির হয়ে গেছে খুলনা। পানি বৃদ্ধি পেয়েছে সব নদ-নদীর। এছাড়া মৎস্য ঘের ও বীজতলা তলিয়ে গেছে।
টানা বর্ষণের ফলে খুলনা মহানগরীর ব্যস্ত সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় খুলনা জেলার কয়রা, দিঘলিয়া ও ডুমুরিয়া উপজেলার কয়েকশ’ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী এলাকার কয়েকটি এলাকায় বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম। বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে খুলনার সুন্দরবন ঘেঁষা দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ। খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় ঘরবাড়ী ধসে পড়ার খবর শোনে গেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া মৎস্য ঘের ও বীজতলা তলিয়ে গেছে খুলনাঞ্চলের।
খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাঞ্চলে রোববার সকাল ৬ থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারী বর্ষণ এখনো (বিকেল ৫টা) চলছে। এ বছরে এটাই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তিন নম্বর সর্তক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বরিশাল ব্যুরো : এক সপ্তাহের ব্যবধানে উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা ধেয়ে এসে উপকূলভাগসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে প্রবল বর্ষণে জনজীবন সম্পূর্ণই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার পূর্ববর্তী ১৫ ঘণ্টায় বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ২৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এ সময় দেশের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ভোলাতে ২৮৫ মিলিমিটার। পটুয়াখালীতেও ২৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে এর আগে ১৯৬৭ সালের ১০ নভেম্বর বরিশালে ২৪ ঘণ্টায় ২০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। স্মরণকালের সব রেকর্ড ভেঙে গতকালের প্রবল বর্ষণ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলকেই সয়লাব করে দিয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজ ও কাল বৃষ্টিপাতের প্রবণতা প্রশমিত হলেও পরবর্তী ৫ দিন তা আবার বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো বড় নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। বরিশাল মহানগরীর ৯৫ ভাগ এলাকা এখন পানির তলায়। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবক’টি নদী বন্দরকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ফলে অনধিক ৬৫ ফুট দৈর্ঘের সব যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রবল বর্ষণ আর ঝড়ো হাওয়ার কারণে রাজধানীর সাথে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী দুটি ফেরি রুটে যানবাহন পারপার যথেষ্ট ব্যাহত হচ্ছে। মাওয়া ও পাটুরিয়া রুটে বেসরকারি লঞ্চ ও স্পিড বোটের চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাবাসে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সাগর যথেষ্ট উত্তাল রয়েছে। হাজার-হাজার মাছধরা ট্রলার ও জেলে নৌকার মহিপুর-আলীপুর, গলাচিপা, চরমোন্তাজ, ঢালচর, চর কুকরী-মুকরীসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরলেও অনেক ট্রলার এখনো সাগরে।
গতকালের এ দুর্যোগের মধ্যেই দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পাশাপাশি ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন ও সাব-স্টেশনসহ ১১/.০৪ বিতরণ লাইনের ত্রুটির কারণে বরিশাল মহানগরী ছাড়াও সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ের যায়। দুপুর দেড়টার পরে জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ শুরু হলেও বরিশালের ৩৩ কেভি মূল নব-স্টেশনটির ভেতরে পানি প্রবেশ করায় লাইন চালু করা যায়নি।
রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধস
রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা : ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে পড়ায় রোববার রাঙ্গামাটির সাপছড়ি এলাকায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ প্রায় ৫ ঘণ্টা বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ধসে পড়া মাটি সরিয়ে ফেলায় পুনরায় সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে।
জানা যায়, ভারী বর্ষণের কারণে রোববার সকালের দিকে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দুদিক দিক থেকে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে দীর্ঘ ১ মাইল জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কের দু’পাশে শত শত যাত্রী আটকা পড়েন। পরে রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের কর্মীরা প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সড়ক থেকে মাটি অপসারণ করলে পুনরায় যোগাযোগ চালু হয়।
এদিকে, জুরাছড়ি উপজেলায় ভূমি ধসে ৩টি বসতবাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসে পড়ায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে ধসে পড়া মাটি অপসারণ করেন। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা কাজ করার পর পুনরায় সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে।
খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা : প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে চেঙ্গী নদীর পানি বাড়ায় জেলা শহরের নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কয়েকটি এলাকার প্রায় তিন শতাধিক পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে নদী তীরবর্তী প্রায় শতাধিক একর ফসলি জমি।
শনিবার রাত থেকে সমগ্র জেলায় টানা বর্ষণে চেঙ্গী নদী তীরবর্তী মুসলিমপাড়া, বাঙ্গালকাঠি, শব্দমিয়াপাড়া, শান্তিনগর, গঞ্জপাড়া, অর্পণা চৌধুরীপাড়া, মহালছড়া ও কালাডেবা এলাকায় বসবাসরত বেশির ভাগ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গতকাল বেলা ১১টার পর থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি পায়।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম জানান, পানিবন্দী পরিবারগুলোর জন্য জেলা শহরের মুসলিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মিউনিসিপ্যাল প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেয়ার জন্য স্ব স্ব এলাকার কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে কোনো আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় মহালছড়া এলাকার প্রায় ২০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
পটুয়াখালীতে ৯ ঘণ্টায়
২০৬.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
পটুয়াখালী জেলা সংবাদাদাতা : গতকাল সকাল ৬টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় ২০৬.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে একটানা প্রবল বর্ষণের কারণে পটুয়াখালী জেলার সর্বত্র জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। স্কুল, কলেজ অফিস, আদালত সর্বত্র অচল অবস্থা বিরাজ করে। জেলা শহরসহ জেলার সকল উপজেলার রাস্তাঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। জেলার গলাচিপা, কলাপাড়া, বাউফল ও দশমিনা উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
পটুয়াখালী অবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রাহাতউদ্দিন জানান, গত আট বছরে একদিনে ২০৬.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়নি, এটা রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত।
এদিকে, দুর্যোগপূর্ণ অবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগরে সকল মাছধরা ট্রলার আলীপুর-মহিপুর মৎস্য বন্দরের খালে অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আলীপুর-মহিপুর মৎস্যবন্দর সমবায় সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা।
মাদারীপুর পৌর এলাকা প্লাবিত
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : শনিবার গভীর রাত থেকে গতকাল টানা দিনভর ভারী বর্ষণও আড়িয়াল খাঁ নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে মাদারীপুরের নিম্নাঞ্চলসহ খোদ পৌর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় পৌরসভার অধিকাংশ এলাকা হাঁটুপানি জমে গেছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচর ছিলারচর চরনাচনা কালিকাপুর মাদ্রা শ্রীনদী ধুরাইল এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর শহররক্ষা বাঁধ ও লঞ্চঘাট এলাকা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া প্রবল বর্ষণের কারণে শহরের কুলপদ্দি দরগাখোলা কালিবাড়ি কলেজ রোড বটতলা জজকোর্ট এলাকা গোলাবাড়ী থানতলী, পানিছত্র, খাগদী পাগদী, পুরানবাজার চরমুগরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হাটু পরিমাণ পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ফেনী-পরশুরাম সড়কে যান চলাচল বন্ধ
ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা : ফুলগাজী ও পরশুরামে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল রোববার বিকাল ৫টার দিকে ওই অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ফেনী-পরশুরাম সড়কের ঘনিয়া মোড়া থেকে ফুলগাজী বাজার পর্যন্ত অংশে হাটু পরিমাণ পানি থাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরেজমিনে জানা গেছে, বন্যার পানির তোড়ে চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধরে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে প্রায় ২শ’ ফুট ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশ দিয়ে দক্ষিণ শালধর, শালধর, মালিপাথর ও রাজষপুর গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। দক্ষিণ শালধর গ্রামের আবদুল মমিন জানান, হঠাৎ মুহুরী নদীর ভাঙনে বন্যার পানি গ্রামে প্রবেশ করছে। ইতিমধ্যে কয়েকশ পুকুর, ফসলি জমি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া পরশুরাম-ফুলগাজীর আরও বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি বছরের বন্যায় মুহুরী নদীর ভাঙন কবলিত অংশগুলো স্থায়ী মেরামত না করায় বন্যা আতঙ্কে রয়েছে পরশুরাম-ফুলগাজী উপজেলা কয়েক লক্ষ মানুষ। ফুলগাজীর গৈরাছড়া খালের বাঁধ এবং পার্শ্ববর্তী সড়ক কেঁটে দেয়ার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। ফলে মনিপুর গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে শত শত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক পুকুরের মাছ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমন রোপার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ