Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তুরস্কের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন : রাশিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনায় শেষ পর্যন্ত তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর মাধ্যমে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের আগে তুরস্ক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক আরো সংঘাতময় হয়ে উঠল। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার কাছ থেকে তুরস্কের এস-৪০০ সংগ্রহ করার ঘটনা ন্যাটো জোটের নীতির পরিপন্থি এবং এই জোটের সদস্যদেশগুলোর জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দুই বছরেরও বেশি সময় আগে তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এই ব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় থেকেই আমেরিকা এর বিরোধিতা করে আসছে। তবে তুরস্কের রজব তাইয়্যেব এরদোগান সরকার প্রথম থেকেই মার্কিন বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার ঘোষণা করেছে, তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের লজিস্টিক ও সমরাস্ত্র খাতকে টার্গেট করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এদিকে, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনায় তুরস্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আঙ্কারার পাশাপাশি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে রাশিয়াও। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্যার্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, নিজ দেশের সুরক্ষায় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার অধিকার সবারই রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে তুরস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বসনিয়া-হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভোতে এক সংবাদ সম্মেলনে সোমবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত অকতাই বলেছেন, মার্কিন এ নিষেধাজ্ঞায় আমাদের কিছুই যায় আসবে না; বরং প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের নেতৃত্বে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আরও জোরদার হবে। খবর আনাদোলু ও বিবিসির। এক টুইটবার্তায় তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, কারও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না তুরস্ক। আমরা মার্কিন এ পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আশা করি মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল বুঝতে পারবে এবং তুরস্কের ওপর আরোপিত এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে। তুরস্কের পার্লামেন্টের স্পিকার মুস্তফা সেনতপ ও এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহীম কালিনও পৃথক টুইটবার্তায় এর নিন্দা জানিয়েছেন। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অব ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান ইসমাইল দেমির ও তার তিন সহকর্মীর ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এস-৪০০ কেনার পর থেকেই গত এক বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে তুরস্কের ওই চার কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পদ থেকে থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। তবে মার্কিন এ নিষেধাজ্ঞাকে আন্তর্জাতিক রীতিনীতির বরখেলাপ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক। একই সঙ্গে এর নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া, আজারবাইজান ও ইরান। নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজে আসবে না। কিন্তু এতে বিপরীত ফল হবে; সম্পর্কের ক্ষতি হবে। তুরস্ক ক‚টনীতি ও আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের পক্ষে। আমরা একতরফা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়ার পদক্ষেপ মেনে নেব না বলে জানিয়েছে তুরস্ক। রাশিয়া গত বছর তুরস্কের কাছে স্থল থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিক্রির পর তুরস্ক সেগুলো পরীক্ষাও করে দেখেছে। তুরস্ক দাবি করছে, এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কারও জন্য হুমকি নয়। কেবল শত্রæ মোকাবেলায়ই এগুলো ব্যবহার করা হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থাকে হুমকি হিসেবেই দেখছে এবং এর জেরে যুক্তরাষ্ট্র গত বছরই তুরস্কের কাছে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান বিক্রি বন্ধ করা এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিল। আনাদোলু, বিবিসি। রয়টার্স,পার্সটুডে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ