Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে উত্তরের জনপদ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

হিমালয় থেকে আসা উত্তর-পশ্চিমের কনকনে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা সূঁচের মতো শীতের কামড় বসালো। শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে সমগ্র উত্তরের জনপদ। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার নাটকীয় পরিবর্তন! পৌষ মাস তথা শীত ঋতুর গোড়াতে এটি মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ। গোটা রাজশাহী, রংপুর বিভাগ অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ছাড়াও আংশিকভাবে ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগেও শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ঘন কুয়াশা আর শীতকষ্টে অনেক জেলায় শহর-গঞ্জ, গ্রাম-জনপদের বিশেষত দিন এনে দিন খাওয়া হতদরিদ্র দিনমজুর শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে। বেড়েছে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ।
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে সর্ব-উত্তরের জনপদ পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অঞ্চলে আরো কোথাও কোথাও পারদ ৮ ও ৯ ডিগ্রির মাঝখানে ঘোরাফেরা করে। আজ রাত ও ভোর-সকালের তাপমাত্রা আরো ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনের বেলায় পারদ এক থেকে ২ ডিগ্রি হ্রাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে আরো বিস্তৃত হতে পারে। অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা আরও দুই-তিন দিন।
‘হঠাৎ’ শুরু হলেও তা পৌষের আবহাওয়ার ‘স্বাভাবিক’ অবস্থা বলছে আবহাওয়া বিভাগ। ২ পৌষে দিনগত মাঝরাত থেকে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে গতকাল সকাল পর্যন্ত চলে হাড় কাঁপানো শীতের দাপট। আকাশতলে নিচু মেঘের ভেলা এবং বাতাসের বাড়তি হারে জলীয়বাষ্প হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে হিম কনকনে হাওয়ায় পৌষের শীত বিশেষত উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসলো। আরও দুই-তিন দিন আবহাওয়ায় একই ধরনের পালাবদল অর্থাৎ শীতের দাপট বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রাম অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। তাছাড়া দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ বিস্তার লাভ করতে পারে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা আরও ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাসেরই সম্ভাবনা। মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বিশেষ করে দেশের নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশাপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
গেল ২৪ ঘণ্টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ও শৈত্যপ্রবাহের পর্যায়ে পারদ ছিল নীলফামারী জেলার ডিমলায় ৯.৫, সৈয়দপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে ১০, দিনাজপুর ও শ্রীমঙ্গলে ১০.৪, নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে ১০.৫, টাঙ্গাইলে ১০.৬, রংপুরে ১০.৯, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেশিরভাগ জেলায় রাতের তাপমাত্রা ১৩-১৪ ডিগ্রি কিংবা তারও নিচে নেমে আসে। পারদ আগের দিনের চেয়ে স্থানভেদে এক থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমেছে। তবে ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ২৪.২ এবং সর্বনিম্ন ১৭.১, চট্টগ্রামে যথাক্রমে ২৭.৫ এবং ১৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে কমবেশি জলীয়বাষ্প, আংশিক ও হালকা মেঘ, কুয়াশার সঙ্গে মিলেমিশে বাতাসে ভাসমান ধুলোবালি ধোঁয়ার দূষণ অব্যাহত রয়েছে। এতে করে সর্দি-কাশি-জ্বর, হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট, গলাব্যাথা, টনসিল-সাইনাস, ফুসফুসের জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় বায়ুমান সূচক (একিউআই) ও বায়ুদূষণ মাত্রা (পিএম ২.৫) ছিল আইকিউএয়ার’র পর্যবেক্ষণ তথ্য মতে ১৮৭। যা অস্বাস্থ্যকর। বিশে^র সর্বাধিক বায়ুদূষিত প্রধান শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান পঞ্চম।
প্রায় সারাদেশে বাতাসের জলীয়বাষ্পের পরিমাণ আরও কমেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বা জলীয়বাষ্প ছিল ৫২ শতাংশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শৈত্যপ্রবাহ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ