Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভিনব পন্থায় কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা টাগের্ট অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রতারিত হয়ে একসময় নিজেরাই হয়ে উঠেন মস্ত বড় প্রতারক। টার্গেট অবসরে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী। বহুজাতিক কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরির নামে পাতা হয় প্রতারণার ফাঁদ। দেয়া হয় ব্যবসায় বিনিয়োগ, জুয়া খেলার প্রস্তাব। আর ওইসব প্রতারক চক্রের সদস্যরা অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস চালায়।

শুধু তাই নয়, তাদের চক্রের নাম দেয়া হয়েছে রয়েল চিটিং ডিপার্টমেন্ট বা আরডিসি। এ চক্রের সদস্যরা অভিনব পন্থায় বিভিন্ন অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অথবা বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। অবশেষে ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান (৫২), মোহাম্মদ আলী (৫৯), সুমন আহমেদ (৩৩), তোফায়েল হোসেন রতন (৬০) ও এম আজাদ (৪৮)। তারা প্রায়ই আসর বসাতেন রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেলে। বিল দিতেন লাখ লাখ টাকা। পুলিশ বলছে, ৪ জনকে নিয়ে করা হয় প্রতারণার দল। টার্গেট, চাকরি থেকে অবসর নেয়া সরকারি বেসরকারি পদস্থ কর্মকর্তা। প্রথমে বহুজাতিক কোম্পানিতে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব। এরপর ব্যবসা। সবশেষ তিন কার্ড খেলায় রাজি করিয়ে চলে প্রতারণা।

পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার রাজধানীর গুলশান, ভাটারা ও ভাষানটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি ব্রিফকেস, ফাইলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ৮৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরো জানায়, প্রায় ২০ বছর ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে এ চক্রটি। এমনকি সাবেক এক সচিবসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।

গতকাল ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান জানান, চক্রের সদস্যরা প্রথমে ছদ্মনাম ধারণ করে ভালো পোশাক এবং চালচলন দেখিয়ে অভিজাত এলাকায় বাসা অথবা ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তাদের একটি গ্রæপ বিভিন্ন পেশাজীবীকে টার্গেট করে। টার্গেটের শীর্ষে থাকেন ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা কোনো বড় ব্যবসায়ী, যারা প্রতিনিয়ত টাকা-পয়সা লেনদেন করেন।

অনেক সময় তারা বাসা ভাড়া নেওয়ার নাম করে কারও বাড়িতে যান। কখনও কখনও বড় ধরনের ব্যবসার কথা জানিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করার জন্য লোকজনকে আমন্ত্রণ জানান। ভাড়া করা অফিসে টাগের্ট করা লোকদের নিয়ে ভিকটিমদের আকৃষ্ট করেন। প্রতারকদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেকে বিদেশি বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দেন। যাদের প্রলোভনে অনেকে বিনিয়োগ করে সর্বস্ব হারান। এদিকে, চক্রটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরপরই ফোন বন্ধ করে অফিস ছেড়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ঘটনা নজরে আসার পর ডিবি গুলশান বিভাগ এরই মধ্যে প্রায় আটটি অফিস চিহ্নিত করে অভিযান চালায়। এসব অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৪ লাখ টাকা প্রতারণার পৃথক মামলা, ভাটারা থানায় ৫৬ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের মামলা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ