Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শতভাগ বিদ্যুতায়ন হচ্ছে ১০৫৯ গ্রামে

পল্লী বিদ্যুতে আলোকিত দুর্গম জনপদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

তিন ধাপের দুর্গম ও প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় অফগ্রিড এলাকার ১০৫৯ টি গ্রামে শতভাগ বিদ্যুতায়ন চলতি ডিসেম্বর সম্পন্ন করবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে। দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা আরইবি’র আওতাধীন গ্রিডভুক্ত ৪৬১ টি উপজেলা এবং অফগ্রিডে ১ টি উপজেলাসহ (পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলা) মোট ১০৫৯ টি গ্রাম রয়েছে। আরইবি তার ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে গ্রিডভুক্ত ৪৬১ টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ২৮৮ টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করেছেন। ১৭৩ টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন(অবঃ) ইনকিলাবকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়্ন তথা ভিশন ২০২১ অর্জনপূর্বক ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড তার ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের জলবায়ুর উপর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভরশীল। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই অফগ্রিড এলাকার গ্রামগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হবে। মুজিববর্ষেই আলোকিত হবে সমগ্র বাংলাদেশ। অফগ্রিড অঞ্চল বলতে মূলত বোঝায় দূর্গম চর, দ্বীপ ও উপকূলীয় ভূ-সীমানাকে, যেগুলো বছরের বেশির ভাগ সময়ই মূল ভূ-ভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। পল্লী বিদ্যুতের শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমে এই অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করায় বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে যাচ্ছে এই প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক। ফলশ্রুতিতে, বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র অফগ্রিড উপজেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালিতেও। ১০৫৯ টি গ্রামে ৩ টি ধাপে এ বিদ্যুতায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যার মধ্যে ১ম ধাপের ৬৪৬ টি গ্রাম তুলনামূলকভাবে কম প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। ৩৫টি স্থানে কম/ বেশী ২ কিলোমিটার পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা নদী অতিক্রম করে গ্রামসমূহ গ্রিড লাইনে বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব। চলমান প্রকল্পে লাইন ও উপকেন্দ্র নির্মাণের সংস্থান বৃদ্ধি এবং আরইবি অর্থায়নে সাবমেরিন ক্যাবল ক্রয়পূর্বক গ্রামসমূহের ১লাখ ৫৫ হাজার গ্রাহককে গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।

২য় ধাপের ৩৮৪ টি গ্রাম দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। ৫০ টি স্থানে সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা নদী অতিক্রম করে গ্রামসমূহ গ্রিড লাইনে বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব। এ সকল নদী/চরের প্রশস্ততা তুলনামূলকভাবে বেশী হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের হালনাগাদকরণপূর্বক গ্রামসমূহের ৯০ হাজার গ্রাহককে গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম দ্রুত গতিতে চলছে। ৩য় ধাপের অন্তর্ভূক্ত অবশিষ্ট ২৯ টি গ্রাম অতি প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। অধিকাংশ গ্রামেই স্থায়ী জনবসতি নেই। কেবলমাত্র শুষ্ক মৌসুমে বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ বসবাস করায় গ্রাহক ঘনত্ব অত্যন্ত কম। উক্ত ২৯টি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার গ্রাহকের জন্য সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের কার্যব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মুজিববর্ষেই বিদ্যুতায়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে। আরইবি বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছে। আবাসিক সংযোগের পাশাপাশি আরইবি জুন-২০২০ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা, ১৩ হাজার ৫০০টি মাঝারি শিল্প কারখানা, ৩৭৫ টি বৃহৎ শিল্প কারখানায়, ৮টি ইপিজেড ও ৩ লাখ ৬০ হাজার টি সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছে। দেশের প্রায় ১৪ কোটি জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকল্পে সংস্থাটি ৫ লাখ ৩০ হাজার কি.মি. বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং ১০৭০ টি সাবস্টেশন নির্মাণ করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ