Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিলেটে ৩টি পৌরসভায় চলছে ভোট গ্রহন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:২৪ পিএম

প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের ৩ পৌরসভায় নির্বাচন ভোট গ্রহন চলছে আজ সোমবার (২৮ ডিসেম্বর)। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে এ ভোট গ্রহণ। বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে। পৌর সভাগুলো হচ্ছে, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের দিরাই। গত ২২ নভেম্বর এ ৩ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম দাখিল করা হয় ১ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাছাই ৩ ডিসেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেখ দিন ছিলো ১০ ডিসেম্বর। এ তিন পৌরসভায় ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভায় আজ সোমবার রাত পোহাতেই শুরু হয় ভোট উৎসব। নির্বাচন উপলক্ষে রোববার বিকেলের মধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে স্থানীয় প্রশাসন। পৌর এলাকার ভোট কেন্দ্র গুলোতে নির্বাচনি সরঞ্জাম পৌঁছানোর পাশাপাশি জোরদার করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। বড়লেখা পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে হচ্ছে ভোট গ্রহণ। এজন্য সাধারণ ভোটারদের মাঝে বিরাজ করলেও সুষ্ঠু ভোট হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানায়, প্রথম ধাপে আজ ২৮ ডিসেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে বড়লেখা পৌরসভার ১০টি কেন্দ্রে ৪৩টি ভোট কক্ষে (বুথের) ভোট গ্রহণ হচ্ছে। আজ (সোমবার) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৫ হাজার ৪৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৫২৩, মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৯২০ জন।

জানা গেছে, বড়লেখা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ জন ও নারী কাউন্সিলর পদে ১১ জন ।
নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুল ইসলাম (মোবাইল ফোন)।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রির্টার্নিং কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান গতকাল রোববার (২৭ ডিসেম্বর) বলেন, বড়লেখায় প্রথমবারের মতো ভোটগ্রহণ হচ্ছে ইভিএমে। বড়লেখা পৌরসভার ১০টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হচ্ছে ৪৫টি বুথে । এসব কেন্দ্রে রোববার ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, নির্বাচনের দিন ১০টি ভোটকেন্দ্রে ১০ জন দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে দুই প্লাটুন বিজিবি ছাড়াও মাঠে র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা ।

অপরদিকে, সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার প্রথমবার ইভিএমে ভোট হওয়ায় দিরাই পৌরসভার ভোটারদের অনেকেই কৌতুহলে রয়েছেন। নির্বাচনে ভোট প্রদান করবেন ২১ হাজার ৩৭৯ জন ভোটার। নির্বাচনে মেয়র পদে ৮, কাউন্সিলর পদে ৩৯, সংরক্ষিত নারী আসনে ১৩ জন লড়ছেন। মেয়র পদে দিরাই পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র দিরাই ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি বিশ^জিৎ রায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। বিএনপি প্রার্থী উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মোশারফ মিয়া, দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কদ্দুছ মিয়ার ভাই বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুমও স্বতন্ত্র প্রার্থী। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা হাফিজ লোকমান আহমদ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী অনন্ত মল্লিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিক মিয়া এবং রশিদ মিয়াও ভোটে লড়ছেন। এছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে মোতায়েন রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, দিরাই পৌরসভায় ৯ টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১২ টি। এর মাঝে ঝুঁকি পূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৭ টি ভোট কেন্দ্রকে। নির্বাচনকে অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সহ ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন দায়িত্বে। দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন পুলিশ সহ ১৪ জন আনসার রয়েছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। এছাড়াও টহল দিচ্ছে পুলিশের ৬টি মোবাইল টিম। এদিকে, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় ৫৬ প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নেমেছেন আজ। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ৬ জন প্রার্থী। সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর হিসেবে ১৪ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন ৩৬ জন। সব মিলিয়ে ভোটযুদ্ধে রয়েছেন মোট ৫৬ জন প্রার্থী। ১৭ হাজার ৯৬১ জন ভোটার নির্ধারণ করবেন মেয়র-কাউন্সিলরদের ভাগ্য। তবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হওয়ায় সাধারণ মানুষদের মধ্যে ভোট দেয়া নিয়ে রয়েছে কিছুটা শঙ্কা। যদিও নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোট দেয়া সহজ করতে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ক্যাম্পেইন সস্পন্ন করেছে। এদিকে, রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রতিটি কেন্দ্রে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে ইভিএম মেশিন পৌছে দেয়া হয়েছে। সম্পন্ন করা হয়েছে সকল প্রস্তুতি। নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মোঃ মাসুদউজ্জামান মাসুক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত ফরিদ আহমেদ অলি (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোঃ ছালেক মিয়া (নারিকেল গাছ), ফজল উদ্দিন তালুকদার (চামুচ), আবুল কাশেম শিবলু (জগ) ও ইমদাদুল ইসলাম শীতল (মোবাইল ফোন)। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, মেশিনে ভোট গ্রহণ হলে তাদের ভোটটি সঠিক প্রতীকে থাকবে কি না এ নিয়ে দিদ্বা-দ্বন্ধে রয়েছেন তারা। তবে জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম বলেন, ইভিএমে ভোট দান স্বচ্ছ এবং সহজ। নির্ভূলভাবে ভোট গ্রহণের সঠিক মাধ্যম এটি। জাল ভোট কিংবা কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই ইভিএমে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ খুবই ভালো। এখানে ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই, তবে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রকে অতিগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৯টি ওয়ার্ডে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুরো পৌরসভার জন্য একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। ইভিএম-এ ভোটগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন ১১ জন প্রিজাইডিং, ৪৭ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ৯৬ জন পোলিং অফিসার। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ১০ জন করে ৯০ জন পুলিশ। মোবাইল টিমে থাকবে ৩২ জন এবং স্ট্রাইকিং ফোর্সে ২০ জন। প্রতিকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন ৯ জন করে ৮১ জন আনসার সদস্য। এছাড়াও ৫ জন আনসার সদস্যের সমন্বয়ে থাকবে সশস্ত্র একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম। একই সাথে দুটি প্লাটুনে ৬০ জন বিজিবি সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পৌরসভা নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ