Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাত্রা

আগ্রহ বাড়ছে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৬:৪১ পিএম

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত আবাসন-খাদ্য-চিকিৎসার পাশাপাশি বিনোদন ব্যবস্থায় ভাসানচরে একমাস অতিবাহিত করলো প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা।

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম মাস কাটল বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই। আশ্বাস অনুযায়ী প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গার জন্য সেখানে সব ধরনের মানবিক সুবিধা নিশ্চিত করেছে সরকার।

জনমানবহীন ভাসানচরে এখন ভেসে আসে হারমোনিয়াম-তবলা এবং ঢোলের মতো যন্ত্রের তালে তালে গানের শব্দ শুধু তা নয়। দিনে পাঁচবার সেখানে শুনাযায় আল্লাহু আকবর আজানের ধ্বনি। সে সঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের কল-কাকলি, বয়স্কদের শোরগোলে এখন সরগরম ভাসানচর।


সকাল না হতেই রোহিঙ্গা পরিবারের প্রধানরা ছুটছেন অস্থায়ী বাজারের দিকে। শাকসবজি-মাছ-গোস্তে ভরপুর বাজারগুলো। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানও আছে এই ভাসানচরে। বসে গেছে চা-পরোটার দোকান। ভাজা হচ্ছে গরম গরম পরটা। আর রোহিঙ্গা গৃহিণীরা ব্যস্ত সাংসারিক কাজে।

ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গারা জানান, কক্সবাজার থেকে তারা সেখানে ভালো আছে। পরিবেশটা অনেক খোলামেলা এবং স্বাস্থ্যকর । এখানে সব ধরনের সুবিধা রয়েছে। এখানে আসার জন্য অন্য রোহিঙ্গাদেরও তারা বলছে।

আর দুপুর না হতেই রোহিঙ্গা তরুণরা নেমে যাচ্ছে খেলার মাঠে। ফুটবলের পাশাপাশি চলছে ভলিবল খেলা। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা তরুণদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে তিনটি খেলার মাঠ। খোদ প্রকল্প পরিচালক খেলায় সাথী হচ্ছেন তাদের।

মফিজুর রহমান নামের এক রোহিঙ্গা তরুণ বলেন, এখানে আমাদের খেলার জন্য মাঠ রয়েছে। সে সঙ্গে একটা ক্লাবও রয়েছে। আমরা সুবিধা পাচ্ছি। ইতোমধ্যে ভাসানচরে নিরাপত্তার পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষাও।

ভাসানচরের নৌবাহিনী চিকিৎসা ক্যাম্পের ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, চিকিৎসার জন্য আমাদের দুজন চিকিৎসক রয়েছেন। তারা জরুরি সেবা দিয়ে যাচ্ছছেন।

এদিকে রোহিঙ্গাদের সার্বিক উন্নয়নে একে একে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাসানচরে যেতে শুরু করেছেন। শুরু হতে যাচ্ছে শিক্ষাসহ নানা সামাজিক কার্যক্রমও।
ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের কুটির শিল্পসহ কাপড় সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দুটি টিম সেখানে পৌঁছেছে।

এ পর্যন্ত দু'দফায় ৩হাজার ৩৪৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গত ৪ ডিসেম্বর ভাসানচর পৌঁছে। আর ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ভাসানচর গেছে আরও ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা।

এছাড়াও সাগর পথে মালয়েশিয়া পাড়ি দেওয়ার সময় আটক ৩ শতাধিক রোহিঙ্গাকে আগে থেকে সেখানে রাখা হয়েছে।

এদিকে ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের খবরা খবর ছড়িয়ে পড়ায় উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের মাঝে ভাসানচরে যাওয়ার আগ্রহ ক্রমে বাড়ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ