Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বলেশ্বরের কড়াল গ্রাসে বিলীনের পথে মাঝের চরের ঘাট

প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল হালিম দুলাল, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে

ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় সিডর বিধ্বস্ত মঠবাড়িয়া উপজেলার মাঝের চরে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ঘাটটি বলেশ্বর নদের কড়াল গ্রাসে বিলীন হওয়ার পথে। ইতোমধ্যে ঘাটের আংশিক ভেঙে পড়েছে, বাকি অংশও যে কোন সময় বলেশ্বরের গর্ভে বিলীনের পথে। জীবন-জীবিকার অপরিহার্য সঙ্গী ঘাটটি রক্ষার দাবি মাঝের চরের প্রায় দেড়শ’ জেলে পরিবারের। বলেশ্বরের বুকে জেগে ওঠা মাঝেরচর উপজেলার বেতমোর রাজপাড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম। বিশাল আয়তনের এই চরটি ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর উপকূলীয় এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে ল-ভ- হয়ে যায়। আশ্রয়হীন হয় চরের প্রায় দেড় শতাধিক জেলে পরিবার। আশ্রয়হীন ১৬৪ জেলে পরিবারকে মানবিকতার হাত প্রসারিত করে পুনর্বাসন করে দেয় ব্রিটিশ রাজ পরিবার। পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০০৮ সালে ব্রিটিশ বিজনেস গ্রুপ মাঝের চরে নির্মাণ করে একটি সুদৃশ্য ঘাট। পুনর্বাসন কার্যক্রম কয়েক বছর পূর্বে শেষ হলেও ঘাটটি থেকে যায়। শুধু খেয়া পারাপার ও মালামাল ওঠানামা ছাড়াও ঘাটটি অবসর সময়ে জেলেদের নির্মল বাতাসে বিনোদনের স্থানে রূপ নেয়। বর্তমানে মাঝের চরে চলছে বলেশ্বরের ত্রিমুখী ভাঙন। সরেজমিন দেখা গেছে ভাঙনের মুখে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের মানবিকতার স্মারক মাঝের চরের দৃষ্টিনন্দন ঘাটটির ওপরের অংশ ভেঙে পড়েছে। ঘাটের নিচ থেকে প্রায় ৭০ ভাগ মাটি ধুয়ে গেছে। আরসিসি কলমের নিচ থেকে মাটি সরে গেলে ঘাটটি বলেশ্বরে বিলীন হয়ে যাবে। মাঝের চরের জেলে মোঃ আবুল কালাম তালুকদার (৪০) জানান, আমরা মাছ ধরে এই ঘাটের মাধ্যমে বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে বিক্রি করে থাকি। ঘাটটি আংশিক ভেঙে গেলেও দেখার কেউ নেই। ঘাটে বসে কথা হয় জেলে মোঃ শাহ আলম খান (৪০) ও মোঃ জাকির হোসেন (৩৬)-এর সাথে তারা জানান, চরের প্রায় ৫০ জন শিশু মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য আমরাগাছিয়া, উলুবাড়িয়া ও হোগলপাতির বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসায় এই ঘাট দিয়ে আসা-যাওয়া করে থাকে। এসব শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার পূর্বে ঘাটটি সংরক্ষণের জন্য তারা কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফরিদ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ভাঙন রোধের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। পানি উন্নয়ন বোর্ড উদ্যোগ নিলে সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মঠবাড়িয়া অফিসের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিও) মোঃ আমিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মাঝের চরটি বন বিভাগের আওতাধীন হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু করার নেই। এ ব্যাপারে বন বিভাগের মঠবাড়িয়া অফিসে ২ দিন গিয়ে যোগাযোগের জন্য কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বলেশ্বরের কড়াল গ্রাসে বিলীনের পথে মাঝের চরের ঘাট
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ