Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া রোগীর বৃদ্ধি

মতলব আইসিডিডিআরবিতে ১২ দিনে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ভর্তি

মতলব (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ৭:১৩ পিএম

চাঁদপুর ও আশপাশের জেলাগুলোতে কনকনে শীত ও ঠান্ডার তীব্রতার সাথে পাল্লা দিয়ে অস্বামিক হারে রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া রোগীর বৃদ্ধি পেয়েছে। ১২ দিনে (১জানুয়ারি-১২জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মতলব হাসপাতালে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৭শ ২৫ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩শ’ শিশু। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চারগুণ বেশি। পচা-বাসি খাবার গ্রহণ, অবিশুদ্ধ পানিপান ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এত হারে শিশুরা ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিনে সেখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে মোট ৩ হাজার ৯’শ ২৭ জন। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৭’শ ২৫ জন শিশু। এসব শিশু শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী। ভর্তিকৃত মোট রোগীর ৯২ শতাংশের বেশি শিশু।

এছাড়া বিভিন্ন বয়সী রোগী রয়েছে ২শ’২জন। প্রতিদিনই গড়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩শ জন শিশু। এ সংখ্যা বছরের স্বাভাবিক সময়ের প্রায় চারগুণ বেশি। স্বাভাবিক সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ শিশু ভর্তি হয়।

১২ জানুয়ারি বুধবার বেলা ১টা পর্যন্ত সেখানে ভর্তি হয়েছে মোট ২শ ৪৫ জন ডায়রিয়া রোগী। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ২শ ২৫ জন।
হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, মতলব আইসিডিডিআরবি’তে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ২৫৮, জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৮৮, হাজীগঞ্জের ৫৫, কচুয়ার ৬৭, মতলব উত্তরের ৬০, মতলব দক্ষিণের ৫৫, কুমিল্লার বরুড়ার ৩৭০, বুড়িচংয়ের ২৮০, চান্দিনার ২৮৫, কুমিল্লা সদরের ২৫৫, দেবিদ্বারের ২৯৬, দাউদকান্দির ২৮৮, লাকসামের ২৯০, মুরাদনগরের ৩০০, তিতাসের ৩৪০, লক্ষীপুর সদরের ২৭৫, রায়পুরের ১৬৪ ও রামগঞ্জের ২০১ জন। বাকিরা কুমিল্লা, লক্ষীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী ও শরিয়তপুরসহ আরও কয়েকটি জেলার।

মঙ্গলবার আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ডে রোটা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের উপচে পড়া ভিড়। হাসপাতালটির বহির্বিভাগেও আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা চলছে। এসব শিশুদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে চিকিৎসক ও নার্সরা ব্যস্ত। এছাড়া রোগী ও রোগীদের সাথে আগত দর্শনার্থীদের জন্য হাসপাতাল আঙ্গিনায় তাঁবু টানিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কুমিল্লার কুচাইতলী এলাকার শেখ মুজাইয়ার মা ফারজানা বলেন, গত শুক্রবার থেকে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় তাঁর ১৯ মাসের শিশু কন্যা কে নিয়ে কুমিল্লা কুচাইয়াতলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে দুইদিন থাকার পর সুস্থ না হওয়ায় ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে রবিবার দুপুরে মতলব আইসডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করাই। এখনও অনেকটা সুস্থ।

আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালের কেন্দ্র প্রধান ডা. আল ফজল খান জানান, এই ডায়রিয়া শিশুর পাতলা পায়খানার সাথে বমি এবং জ্বর থাকতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুকে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ এবং ছয় মাসের বেশি বয়সের শিশুদের প্রতিদিন একটি করে বেবি-জিংক ট্যাবলেট এক চামচ পানিতে গুলিয়ে ১০ দিন খাওয়াতে হবে। স্যালাইন খাওয়ানোর ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে। পুনঃ এক প্যাকেট স্যালাইন অবশ্যই আধা লিটার পানিতে গুলে নিতে হবে।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালে স্যালাইন ঔষধসহ পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা সরবরাহ করা হয়। রোগীদের ছেড়ে দেওয়ার সময় মায়েদেরকে শিশুদের প্রতি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাঁদপুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ