Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জেরুজালেমে গ্র্যান্ড মুফতির বাড়ি দখল করে সিনাগগ বানাচ্ছে ইসরাইল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৬:৩০ পিএম

দখলদার ইসরাইয়েল অধিকৃত জেরুজালেমের প্রখ্যাত মুফতি হাজ আমিন আল-হুসেইনির বাড়ি দখল করে সেখানে ইহুদিদের উপাশনালয় সিনাগগ বানাচ্ছে ইসরাইল। প্রায় ৮৮ বছর আগে পাহাড়ের ওপর সুরম্য প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন প্রখ্যাত ওই ইসলামি চিন্তাবিদ। খবর জেরুজালেম পোস্টের।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগে ১৯২০ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত আল-হুসেইনি বার্লিনে ছিলেন। এ কারণে তৎকালীন নাজি বাহিনীর হাতে ইহুদিদের নির্যাতনকে মুসলমানদের ষড়যন্ত্র বলে অপপ্রচার চালায় ইসরাইল।
নাজি বাহিনীর দোসর হিসেবে আল-হুসেইনিকে অভিহিত করেন ইহুদিরা। এ কারণে মুফতি প্যালেস (কাসর আল মুফতি) নামে ৫০০ বর্গ মিটারের ওই সুরম্য প্রসাদটি দখল করে সেখানে সিনাগগ নির্মাণ করছে।

১০ বছর আগে মুফতির প্রাসাদটি ভেঙে সেখানে ইহুদি বসতি শুরু হয়। ইহুতি বসতির পাশাপাশি সেখানে এখন শুরু হয়েছে সিনাগগ তৈরির কাজ।

মুফতি হাজ আমিন আল-হুসেইনি জেরুজালেমের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উসমানীয় ও ক্যাথলিক শিক্ষালয়ে শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সিরিয়া আরব রাজতন্ত্রের সমর্থক হিসেবে দামেস্কে অবস্থান নেন। ফরাসি-সিরিয়ান যুদ্ধে পরাজয় এবং দামেস্কে আরব হাশেমি শাসনের পতনের পর তিনি ইতঃপূর্বের প্যান আরবিজম ধারণা থেকে ফিলিস্তিনি আরবদের জন্য স্থানীয় জাতীয়তাবাদে সরে আসেন এবং জেরুজালেমে ফিরে আসেন। ১৯২০-এর প্রথম থেকে আরব রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন ফিলিস্তিনের সুরক্ষার জন্য তিনি সক্রিয়ভাবে জায়নবাদের বিরোধিতা করেন। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জাতীয় আবাসভূমির প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দাঙ্গার সাথে তাঁকে দায়ি করে তাকে দশ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। কিন্তু ব্রিটিশরা তাকে মুক্তি দেয়। ১৯২১ সালে তিনি জেরুজালেমের গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পান।

১৯৩৬-৩৯-এর ফিলিস্তিনে আরব বিদ্রোহের সময় তার ব্রিটিশ বিরোধিতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়িয়ে তিনি ফিলিস্তিন থেকে পালিয়ে প্রথমে লেবাননের ফরাসি মেন্ডেট ও পরে ইরাক রাজতন্ত্রে চলে যান এবং ইটালি ও জার্মানিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বেতার সম্প্রচার ও বসনিয়ান মুসলিমদের জার্মানদের সাথে যোগ দিতে সাহায্য করে নাৎসি জার্মানি ও ফেসিস্ট ইটালির সহযোগিতা করেন। এডলফ হিটলারের সাথে সাক্ষাতের সময় তিনি আরব স্বাধীনতায় সমর্থন এবং ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতায় সমর্থন দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। যুদ্ধের পর তিনি ফরাসি হেফাজতে আসেন এবং অভিযোগ এড়ানোর জন্য কায়রোর কাছে আশ্রয় চান।

১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি নিখিল ফিলিস্তিন সরকার গঠনে অংশ নেন। এটি মিশর শাসিত গাজায় অবস্থিত ছিল। এই সরকার আরব রাষ্ট্রসমূহের কাছ থেকে স্বল্প স্বীকৃতি পায়। ১৯৫৯ সালে মিশরের রাষ্ট্রপতি জামাল আবদেল নাসের একে বিলুপ্ত করেন। যুদ্ধ ও পরবর্তী ফিলিস্তিনিদের দেশত্যাগের ফলে তার নেতৃত্ব অস্বীকৃত হয় এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন কর্তৃক আড়াল হয়ে পড়েন। ১৯৭৪ সালের জুলাইয়ে তিনি লেবাননের বৈরুতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সর্বদা আলোচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সূত্র : খবর জেরুজালেম পোস্ট



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসরাইল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ