Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যথার রকমভেদ

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:৪৪ এএম

ব্যাথা কোন রোগ নয় রোগের উপসর্গ মাত্র। আমারা যখন শরীরের কোথাও আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা রোগাক্রান্ত হয়, তখনই ব্যাথা অনুভব করি। এই ব্যাথা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যেমন -
১. মাস্কুলোস্কেলিটাল পেইন বা মাংসপেশী ও অন্থি সংক্রান্ত ব্যাথা:

আমরা চলার পথে কোন চোট বা আঘাত পেলে সঙ্গে সঙ্গে জায়গাটি ফুলে যায়, গরম হয়ে যায়, ব্যাথা অনুভব করি। যে কোন মাংসপেশী ও অন্থিতে ব্যাথা হলে, এই ধরনের ব্যাথাকে মাস্কুলোস্কেলিটাল পেইন বলা হয়।

২. নিউরোজিক্যাল পেইন বা নার্ভ বা স্নায়ুজনিত ব্যাথা ঃ
নার্ভের আঘাত বা নার্ভের উপর চাপজনিত ব্যাথা। আমাদের মেরুদন্ডের কশেরুকার মধ্যবর্তী স্থান থেকে স্পাইনাল নার্ভগুলি রুট অনুযায়ী হাত-পা ও শরীদের বিভিন্ন দিকে যায়। কোন কারনে যদি এই নার্ভের উপর চাপ লেগে যায় সেক্ষেত্রে ব্যাথা অনুভত হয় । তখন এই জাতীয় ব্যাথাকে নিউরোলজিক্যাল পেইন বা স্নায়ুজনীত ব্যাথা বলা হয়। যেসব রোগে উপরোক্ত সমস্যাগুলি দেখা যায়- লাম্বাগো সায়টিকা, পি এল আই ডি বা ডিক্স প্রলেপস তার মধ্যে অন্যতম।

৩. রিউমাটোলজিক্যাল পেইনঃ
কিছু কিছু ডিজিজ বা রোগ আছে যেগুলি অটো-ইম্যুইন ডিজিজ বা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বাইরে অর্থাৎ আমাদের শরীরে যে এন্টিবডি আছে তা এই রোগগুলিকে প্রতিরোধ করতে পারে না। যেমন- রিউমাটয়েড, এ্যানকাইলেজিং স্পনডাইলাইটিস, স্পনডাইলো-আর্থোপ্যাথি ইত্যাদি। এই রোগ গুলিতে হাত ও পায়ের বিভিন্ন জয়েন্ট গুলি আক্রান্ত হয়, ব্যাথা করে। অনেক ক্ষেত্রে জয়েন্টগুলি ফুলে যায়। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠার সময় বেশী ব্যাথা করে।

৪. ডিজেনারেটিভ ডিজিজ বা বয়সজনিত হাড়ের ক্ষয়ের কারনে ব্যাথা ঃ
এক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেমন আমাদের চুল পেকে যায় তেমনি হাড়েরও ক্ষয় হতে থাকে। মেরুদন্ডের হাড়ের ক্ষয় হলে তখন এটাকে স্পনডাইলোসিস বলে। যেমন- সারভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস বা লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস, তেমনি ভাবে জয়েন্টের ক্ষয়জনিত কারণে যে রোগ হয় তাকে অষ্টিওআথ্রাইটিস বলা হয় এবং হাঁড় যখন ভংগুর হয়ে যায় বা হাড়ের ডেনসিটি কমে যায় তখন এই সমস্যাকে অষ্টিওপোরোসিস বলে।

৫. প্যাথলজিক্যাল ডিজিজ বা রোগ সংক্রান্ত ব্যাথা :
এক্ষেত্রে রোগীর শরীরে কোন একটি জীবানু সংক্রমনের কারণে ব্যাথা হয় যেমন- টিউমার, ক্যানসার, টি বি বা যক্ষা রোগ ইত্যাদি

৬. রেফার্ড প্লেইন বা স্থানান্তরিত ব্যাথা ঃ
এই ধরনের ব্যাথা খুবই মারাত্মক। এক্ষেত্রে রোগীর সমস্যা এক জায়গায়, কিন্তুু উপসর্গ দেখা দেয় অন্য জায়গায়। যেমন- একজন ব্যক্তির হাটুঁর নিচের মাংসপেশিতে ব্যাথা। বেশিক্ষন দাড়িঁয়ে থাকতে কিংবা হাঁটতে পারে না। থানিকক্ষন বিশ্রাম নিলে ব্যাথা কমে যায়। এক্ষেত্রে ব্যাথার কারন অনুভব করছে পায়ে। তেমনি ভাবে রোগীর সমস্যা ঘাড়ে ব্যাথা অনুভব করছে হাতে। আবার সমস্যা কিডনীতে, রোগী ব্যাথা অনুভব করছে কোমরে।

তাই এই ব্যাথাকে অবহেলা নয় ! কি কারনে ব্যাথা হচ্ছে সেটা নির্ণয় করা জরুরী। এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শী নিয়ে ব্যাথার সঠিক কারণটি নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে।

ডা: এম ইয়াছিন আলী।
বাত, ব্যাথা, প্যারালাইসিস রোগে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ।
প্রোএকটিভ মেডিকেল কলেজ, সাইনবোর্ড, নারায়নগঞ্জ।
০১৭৮৭-১০৬৭০২



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যথার রকমভেদ

২৯ জানুয়ারি, ২০২১
আরও পড়ুন