পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতীয় পাথর আমদানীকারকদের স্বার্থ ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের অবৈধ কারবারে সিলেটের পাথর কোয়ারীগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ তুলে সিলেট বিভাগ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেন, নিজেদের উন্নতমানের পাথর রেখে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় করে নিম্নমানের পাথর আমদানির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্চা যা”ে। সেই ক্ষতি সাধনে লিপ্ত পাথর আমদানি সংশ্লিষ্ট একটি চিহ্নিত গোষ্ঠি।
তিনি বলেন, ভোলাগঞ্জের ধলাই নদীর পাথর সম্পদকে আড়াল করে বালু মহাল হিসেবে লিজ দেয়া হয়েছে। লিজের নামে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন হচ্ছে ভাগ-বাটোয়ার মাধ্যমে। অপরদিকে ইসিএ ঘোষণাভুক্ত ডাউকি নদী থেকে বালু-পাথর উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাশালী একটি সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য জামাই সুমন ও পাথর খেকো আলাউদ্দিন। অথচ বোমা মেশিনের অজুহাতে প্রায় ২ বছর ধরে বৈধভাবে পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু বৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখা হলেও একটি চক্র জড়িয়ে রয়েছে পাথর উত্তোলনে। এতে ভাগ-বাটোয়ারায় অংশীদার হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা। ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে বৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত থাকা লাখ লাখ শ্রমিকসহ এখাত সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় জাফলং পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সেক্রেটারী দিলওয়ার হোসেন জানান, পিয়াইর নদী এখন পাথরে ভর্তি। সে কারণে নদী এখন মরে গেছে। বৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনের সুযোগ দিলে এ সরকার সম্পদ থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেত। অপরদিকে, ভোলাগঞ্জের ধলাই নদীর পাথর বৈধভাবে উত্তোলন বন্ধ রেখে বালু মহাল হিসেবে লিজ দেয়া হয়েছে। সেই লিজ নিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক মো. মজির উদ্দিন। কিন্তু বালু উত্তোলনের অনুমতি থাকলেও স্থানীয়রা বলছেন, বালুর বদলে পাথর উত্তোলন হচ্ছে। অত্যন্ত গোপনভাবে সেই পাথর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধোপাগুল এলাকার ক্রাশার মেশিন জোনে। প্রকাশ্যেই বালুর সাথে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে লিস্টার নামক একটি শক্তিশালী যন্ত্রের মাধ্যমে।
ভোলাগঞ্জ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সদস্য ও পাথর ব্যবসায়ী আজিজ আহমদ বলেন, বৈধ পথে পাথর সম্পদ আহরণ বন্ধ রেখে একটি চক্র প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালুর নামে পাথর লুটপাট করছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। বৈধ পথে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে মুখ্য ভ‚মিকায় তারা। ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে কথিত বোমা মেশিনের ব্যবহার। তিনি বলেন, বালু উত্তোলনে লিস্টার নামক যে যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে তা অত্যন্ত শক্তিশালী। এ মেশিন বোমা মেশিনের বিকল্প সংস্করণ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোলাগঞ্জের বালু মহালে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ লিস্টার মেশিন ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিটি মেশিন থেকে ৭ হাজার টাকা হারে চাঁদা তোলা হয়। অর্থাৎ ১৪ লাখ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা হচ্ছে। ভাগের টাকা পকেটে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের টপ টু বটম পর্যন্ত। এদিকে ধলাই নদীর বালু মহালের লিজ নেয়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. মজির উদ্দিন জানান, তিনি কেবল বালু তুলছেন। লিস্টার মেশিন ব্যবহার করছেন না। তবে স্বীকার করেন বালু মহালে লিস্টার মেশিনের উপস্থিতি রয়েছে। প্রশাসন আছে ,তারা দেখবে কে ব্যবহার করছে এ মেশিন।
পাথর খাত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, লুটেরা সিন্ডিকেট এ সম্পদ কুক্ষিগত করতে বোমা মেশিনকে ঢাল হিসেবে সামনে আনছে। সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তা পালনে কোন পদক্ষেপ নেই। বরং পর্দার আড়ালে বসে নির্দেশনাকে স্থগিতে দৌড়ঝাপ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। অথচ রাষ্ট্র ও জনস্বার্থে আদালতের নির্দেশনা মেনে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাথর সম্পদ ব্যবহারে তাদের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি ছিল।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি ভোলাগঞ্জ ও ২৫ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে আদেশ দেয়া হয়। সেই মোতাবেক ৪ দিনের মধ্যে খাস কালেকশনের ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দেয়া হয় জেলা প্রশাসককে। রিটের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে নির্দেশনা পালনের জন্য গত ২৪ জানুয়ারি রিট আবেদনের ৪ নং দায়িত্বশীল হিসেবে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করেন বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল আমীন।
এ সময় তারা সাক্ষাতও করেন জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সাথে। সাক্ষাতে থাকা একটি সূত্র জানায়, উচ্চ আদালতে নির্দেশনার প্রেক্ষিতে প্রদত্ত আবেদনের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাননি তিনি। বরং খনিজ সম্পদ ব্যুরোকে তিনি অনুরোধ করেন উচ্চ আদালতের পাথর উত্তোলন নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিলের। তার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট চেম্বার জজ এর এক আদেশে গত ২৮ জানুয়ারি ভোলাগঞ্জের পাথর কোয়ারী ও ২ ফেব্রæয়ারি বিছানাকান্দি ও জাফলং পাথর উত্তোলনের নির্দেশ স্থগিত হয়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।