Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নাব্যতার নামে পাড় কাটার উৎসব

জয়পুরহাট জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

সীমানা নির্ধারণ না করে ঠিকাদারের খেয়াল খুশিমতো নদীর তলদেশের নামমাত্র মাটি তুলে অবাধে কাটা হচ্ছে নদীর দুইপাড়। নদী খননের মাটি ফেলা হচ্ছে স্থানীয় কৃষকের আবাদি জমিতে। ফলে জেলার কয়েক হাজার একর আবাদি জমি ফসলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
জয়পুরহাট জেলার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া তুলসী গঙ্গা নদীর পাঁচবিবি উচাই বাজার এলাকা থেকে আক্কেলপুর সোনামুখী পর্যন্ত ৪১.৫ কিলোমিটার এলাকার নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খনন কাজ চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল মামুন নুর হোসেন জয়েন্টভেঞ্চার, লিয়াকত আলী তাজয়া এন্ড জয়েন্টভেঞ্চার, মেসাস রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং জয়েন্টভেঞ্চার উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল স্নেহা এ প্রকল্পের কাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ অঞ্চলের কৃষকের কয়েক হাজার একর ফসলি জমি আবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নদী খননের মাটিগু স্তুপ করে রাখা হয়েছে নদীর দুপাড়ের ফসলী জমিতে। অতিরিক্ত মাটি ফেলার কারণে জমি ভরাট হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। স্তুপ করে মাটি রাখার ফলে জমি গুলোতে ফসল ফলানো যাচ্ছে না ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কৃষক। পাঁচবিবি উপজেলার জাম্বুবান গ্রামের আনিছুর রহমান বলেন, আটুল ও হাবিবপুর মৌজায় আমার আড়াই একর জমি রয়েছে। সে জমির বেশি ভাগই কেটে নদীতে নেয়া হয়েছ বাকি অংশে মাটির স্তুপ করে রেখেছে। জমি তো গেছেই উপরন্ত নদী খননের মাটি ফেলার কারণে অবশিষ্ট জমিটুকুও শেষ। মাটি অপসারণ না করলে কোন ফসল ফলানো যাবে না।
সদর উপজেলার দক্ষিণ হাতিগাঙা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন নদী কাটার লোকেরা স্থানীয়দের না জানিয়ে নদীর নকশা ও ম্যাপ ছাড়াই খেয়াল খুশি মতো ফসল ও গাছপালা নষ্ট করে নদীর দুপাড় নামমাত্র তলদেশ কাটছে। মাটি ফেলছে আবাদি জমি ও ফসলের উপরে, ফলে অনেক জমি আবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মাটি না সরালে ওই জমিগুলোতে এবার বোরো চাষসহ অন্যান্য ফসল ফলানো যাবে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিয়াকত আলী তাজয়া এন্ড জয়েন্টভেঞ্চার এর পক্ষে ঠিকাদার মাসুদ রেজা বলেন, নিয়ম মেনে নদী খননের কাজ চলছে। মাটি ফেলানোর ব্যাপারে যে কথা উঠেছে তা দ্রুত অপসারণ করা হবে প্রয়োজনে কৃষককে নিচু জমিতে মাটি ফেলে তা বিছিয়ে দেওয়া হবে তাহলে আর অসুবিধা হবে না।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেন প্রবাহমান নদীর সীমানা নির্ধারণ করে নদী খনন করা হয়। তুলসী গঙ্গা নদী খনন প্রক্রিয়া কিভাবে করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি নতুন এসেছি। এ প্রকল্প সরাসরি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নদীর দু’পাড়ে রাখা মাটি কিভাবে অপসারণ করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। কৃষকের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সাথে আলাপ আলোচনা করছি। আশা করি এটির সমাধান হয়ে যাবে।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম বলেন, নদীর দু’পাড়ের মাটি স্থানীয় কৃষকরা নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। তাদের ব্যবহারের পর মাটি অবশিষ্ট থাকলে তা অবশ্যই অপসারণ করা হবে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কে অপ্রয়োজনীয় মাটি অপসারণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • liakat ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:৫৮ এএম says : 0
    brick field e den
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাড়-কাটার-উৎসব

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ