Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সউদী আরবের প্রযুক্তির শহর দ্যা লাইন : থাকবে কৃত্রিম মেঘমালা-চাঁদ, উড়বে গাড়ি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৯:৪০ এএম

নতুন এক প্রযুক্তির শহর বানানোর কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সউদী আরব। যার জন্য হাজার হাজার ডলার ইতোমধ্যে খরচ করে ফেলেছে তারা। বিলাসী জীবনের সব উপকরণ থাকবে এই শহরে।

সউদী আরবের কর্তৃপক্ষ একে বর্ণনা করেছে বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প হিসাবে।

লোহিত সাগরের তীরে গড়ে তোলা হচ্ছে সৌদি আরবের বিলাসবহুল শহর দ্যা লাইন। 'নিওম' নামের একটি প্রকল্পের আওতায় এই শহরের আকার হবে ১৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।

শহরে থাকবে কৃত্রিম চাঁদ, থাকবে উড়ন্ত ট্যাক্সির ব্যবস্থা। বাড়িঘর পরিষ্কারের কাজ করবে রোবট। পুরো শহর হবে কার্বনমুক্ত।

কার্বনমুক্ত এই শহরে ১০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করতে পারবেন। শহরটি চলবে শতভাগ পরিবেশবান্ধব জ্বালানি দিয়ে।

দু'হাজার আঠারো সালের অক্টোবরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে বলেছিলেন, নিওম শহরের প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। তবে শহরটির সব কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালে।

লোহিত সাগরের তীরে নির্মাণ প্রকল্প 'নিওমের' আওতায় ২৬,৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে সৌদি সরকার। সেই প্রকল্পের আওতায় দ্যা লাইন শহরটি তৈরি করা হচ্ছে।

যেসব প্রতিষ্ঠান শহরটি নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ করছে, তাদের গোপনীয় কিছু কাগজপত্র দেখার সুযোগ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, নিওম নামটি এসেছে গ্রিক ও আরবি নাম মিলিয়ে। গ্রিক শব্দ নতুন আর আরবি শব্দ ভবিষ্যৎ, এই দুই মিলিয়ে শহরের নাম রাখা হয়েছে নিওম।

সৌদি আরবের উত্তর পূর্বাঞ্চলে ১০,২৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে শহরটি তৈরি করা হচ্ছে। যার পেছনে খরচ হবে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বা ৫০ হাজার কোটি টাকা।

তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে সৌদি সমাজে পরিবর্তন আনার জন্য যে 'ভিশন ২০৩০' নিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ, তারই অংশ নিওম শহর।

নিওম ওয়েবসাইটে বর্ণনা করা হয়েছে, 'ভবিষ্যৎ এখানে নতুন ঠিকানা পেয়েছে।'

রাতের বেলায় পুরো এলাকা জুড়ে আকাশে থাকবে বিশাল কৃত্রিম চাঁদ। আসল চাঁদের মতোই সেই চাঁদের আলোয় আলোকিত হয়ে থাকবে দ্যা লাইন শহর।

নিওম প্রকল্পে কৃত্রিম মেঘমালা তৈরি করার প্রযুক্তি থাকবে। এসব মেঘের ফলে মরুভূমিতে আরও বেশি মাত্রায় বৃষ্টি হবে।

শিক্ষার ব্যবস্থা হিসাবে থাকবে হলোগ্রাফিক শিক্ষক, যেমনটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর চলচ্চিত্রে দেখা যায়।

সেখানে জুরাসিক পার্কের মতো একটি দ্বীপ থাকবে, যেখানে রোবট ডাইনোসরের দেখা পাওয়া যাবে।

সৌদি কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষজন সেখানে উড়ন্ত ট্যাক্সিতে চলাফেরা করবেন। কর্মকর্তারা বলছেন, ভবিষ্যতে মানুষজন আনন্দের জন্য গাড়ি চালাবেন, তাদের কাজের প্রয়োজনে গাড়ি চালাতে হবে না। বাড়িঘর পরিষ্কারের কাজ করবে রোবট।

সৌদি যুবরাজ চাইছেন, প্রযুক্তির দিক থেকে শহরটি হবে সিলিকন ভ্যালির মতো, বিনোদনের দিক থেকে হলিউডের মতো আর অবসর কাটানোর জন্য ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরার মতো।

লোহিত সাগরের সৈকতেও অনেক পরিবর্তন আনা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেখানকার সৈকতগুলোয় কালো রঙের বালুতে ঢেকে দেয়া হবে।

শহরের নিওম বে নামে এলাকায় এর মধ্যেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গেছে। একে বলা হচ্ছে প্রথম দফার প্রকল্প।

সৌদি প্রেস এজেন্সির তথ্য অনুসারে, নিওম বে-তে সাদা বালুর সৈকত থাকবে, আবহাওয়া হবে মনোরম আর বিনিয়োগের জন্য চমৎকার পরিবেশ থাকবে। এটা হবে অনেকটা আবাসিক এলাকার মতো।

এর মধ্যেই নিওম বিমানবন্দরের কার্যক্রম শেষ হয়েছে এবং একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে সেটি স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই শহরের নিয়মকানুনও সৌদি আরবের অন্যান্য এলাকার তুলনায় আলাদা থাকবে বলে জানা যাচ্ছে। এখানকার আইনি ব্যবস্থা সরাসরি সৌদি বাদশার কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।



 

Show all comments
  • Monjur Rashed ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:৩৫ এএম says : 0
    Wastage for luxury is haram ( condemn-able).
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ