Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমারে সাংবাদিকরা কাজ করছেন গা-ঢাকা দিয়ে, চলছে গুপ্ত হামলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:১৭ এএম

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ইয়াঙ্গুন, নেপিদোসহ সারাদেশে। মানবাধিকারের তোয়াক্কা না-করে বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগের রাস্তা নিয়েছে সামরিক বাহিনী। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর নিশানা হয়েছে সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকেরা। গণ-বিক্ষোভের জন্য সংবাদমাধ্যমকে দায়ী করছে সেনারা, সংবাদ সংগ্রহ থেকে প্রচার, পুরোটাই করতে হচ্ছে গা-ঢাকা দিয়ে। সংবাদ সংগ্রহকারীদের ওপর চলছে গুপ্ত হামলা।

গত মঙ্গলবার সকালে গোপন ডেরা থেকে একটি ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় যোগ দিয়ে মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানালেন ইয়াঙ্গনের মিজিমা নিউজ-এর প্রধান সম্পাদক সোয়ে মিন্ট এবং দ্য ইরাবতী পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আং চ। আলোচনাসভাটির আয়োজক ছিল হনলুলুর ইস্ট-ওয়েস্ট সেন্টার।

জানা গেছে, সে দেশে সামরিক বাহিনীর রোষানলে পড়েছে সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকরা। সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের জন্য সংবাদমাধ্যমকে দায়ী করছে সেনাবাহিনী।
গত মঙ্গলবার সকালে গোপন আস্তানা থেকে একটি ভার্চুয়াল আলোচনায় যোগ দিয়ে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান ইয়াঙ্গুনের মিজিমা নিউজের প্রধান সম্পাদক সোয়ে মিন্ট এবং দ্য ইরাবতি পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আং চ। ওই আলোচনা সভার আয়োজক ছিল হনুলুলুর ইস্ট-ওয়েস্ট সেন্টার।

সোয়ে জানান, বিক্ষোভের মধ্যে সাদা পোশাকের গুপ্তচর পুলিশ ঢুকে গিয়ে অংশগ্রহণকারীদের তালিকা তৈরি করছে। রাতের অন্ধকারে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের।

তিনি আরো বলেন, বহু সাংবাদিক অফিসে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। পরে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কাউকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে দিন কয়েক আটক করে নির্যাতন চালানোর পর।

সোয়ে মিন্ট বলেন, সবচেয়ে বড় আতঙ্কের বিষয় গুপ্ত-হামলা। দুষ্কৃতিকারীদের দিয়ে দল তৈরি করেছে সেনাবাহিনী। তাদের হাতে থাকছে লোহার রড বা লাঠি। সাংবাদিকরা যখন ছবি তুলছেন বা খবর সংগ্রহ করছেন, পেছন থেকে তাদের ওপর হামলা করছে এরা।

মিয়ানমারের সাংবাদিক-সম্পাদকরা মনে করেন, সে দেশে স্বতঃস্ফূর্ত গণ-আন্দোলনের জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা। সামরিক শাসনে থাকার অভ্যাস সে দেশের মানুষের রয়েছে। কিন্তু সীমিত আকারের হলেও গণতন্ত্রের স্বাদ তারা পেয়েছেন। সেই গণতান্ত্রিক অভ্যাস থেকে আবার তাদের মিলিটারি বুটের নীচে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে মিয়ানমারে সাংবাদিকতায় সেনা হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে সাংবাদিকরা চাকরি ছাড়ছেন। ইতমধ্যেই দেশটির জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম মিয়ানমার টাইমসের একডজনের বেশি সাংবাদিক চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সেন্সরশিপ আরোপ শুরু করেছে।

এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি সামরিক জান্তা-চালিত তথ্য মন্ত্রণালয়কে কিছু বিধি-নিষেধ আরোপিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, গণমাধ্যম যাতে ‘নৈতিকভাবে’ খবর প্রকাশ করে এবং ‘মানুষকে সহিংসতায় উসকে দেওয়ার বিষয় পরিহার করে।’
জানা যায়, মিয়ানমার টাইমসের শীর্ষ স্থানীয় নিউজরুম এডিটরসহ একডজনের বেশি সাংবাদিক তাদের চাকরি ছেড়েছেন। কারণ তাদের মনে হচ্ছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদের ওপর সেন্সরশিপ চাপিয়ে দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে চাকরি ছাড়া এক সাংবাদিক বলেন, ‘এ অবস্থায় জনগণকে বাস্তব পরিস্থিতি ভালো করে জানানো দরকার। কিন্তু আমরা যদি শক্তিশালী শব্দের পরিবর্তে দুর্বল শব্দ ব্যবহার করি তবে আমাদের রিপোর্টিং অর্থহীন হয়ে যায়। এমন শর্তাধীন পরিস্থিতিতে কাজ করে যেতে সাংবাদিক হিসাবে আমাদের লজ্জা হয়। সূত্র: আনন্দবাজার



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ