Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গোলপাতার জায়গা দখলে নিচ্ছে বিকল্প টেকসই নির্মাণ সামগ্রী

মোস্তফা শফিক, কয়রা (খুলনা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২১, ১২:০২ এএম

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের একটি জোনে এখন চলছে গোলপাতা আহরণ মৌসুম। নির্বিঘ্নে গোলপাতা কাটতে পেরে খুশি বাওয়ালীরা। বন বিভাগের কঠোর নিরাপত্তা আর কড়াকড়িতে প্রথম ট্রিপের গোলপাতা কাটতে এখন অধিক ব্যস্ত বাওয়ালীরা।
উপকূলীয় অঞ্চলে শত বছর ধরে ঘর তৈরির প্রধানতম সামগ্রী গোলপাতা। কিন্তু দিন বদলের পালা এসেছে। বিকল্প টেকসই নির্মাণ সামগ্রী গোলপাতার জায়গা দখলে নিচ্ছে। ফলে কমছে গোলপাতার ব্যবহার। এতে বন থেকে গোলপাতা আহরণের পরিমাণও কমছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবন থেকে বনজদ্রব্য আহরণ সঙ্কুচিত এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় গোলপাতা সংগ্রহে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বাওয়ালীরা। গোলপাতা আহরণের ভরা মৌসুমে এবার বাওয়ালীদের বিএলসি (অনুমতি) দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ছিল বন বিভাগ। ফলে আহরণ মৌসুমের একটু দেরিতে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের কূপ (জোন) থেকে ব্যবসায়ীরা পারমিট গ্রহণ করে সুন্দরবন অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। এর ওপর নির্ভরশীল শ্রমজীবী মানুষেরা। তবে বনের ওপর থেকে চাপ কমাতে বনজদ্রব্য আহরণ সঙ্কুচিত করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে বন বিভাগ।
খুলনা রেঞ্জের রেঞ্জ সহযোগী ও গোলপাতা কূপ কর্মকর্তা কাজী মাহফুজুল হক বলেন, সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের ১টি গোলপাতা কূপে প্রথম দফায় ১ লাখ মণ গোলপাতা কাটার পারমিট দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তার মধ্যে প্রথম দফায় গোলপাতা সংগ্রহ করার জন্য ১৪৫টি বিএলসির অনুকুলে বাওয়ালীরা ৭০ হাজার ১শ’ ২৮ মণ গোলপাতা সংগ্রহ করার অনুমতি (পারমিট) নিয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে এ সকল বিএলসির অনুকুলে পারমিট দেয়া শুরু হয়েছে এবং আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত গোলপাতা আহরণ চলবে। খুলনা গোলপাতার সহযোগি কূপ কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, বাওয়ালীরা যাতে নিবিঘেœ গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য নিয়মিত কূপের পক্ষে থেকে সার্বক্ষনিক তদারকি করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ না থাকায় গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে বলেও তিনি জানান।
খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. আবু সালেহ বলেন, নির্বিঘেœ যাতে বাওয়ালীরা গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বন বিভাগ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। ইতোমধ্যে বাওয়ালীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করে নিয়ম মাফিক গোলপাতা আহরণ করছে।
কয়রা উপজেলার সুতিরখালধার এলাকার বাওয়ালী নজরুল ইসলামা জানান, ২৫ বছর ধরে তিনি সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে আসছেন। কিন্তু বন বিভাগের এত কড়াকড়ি আগে কখনও দেখেনি। কয়রার খুচরা গোলপাতা ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, এখন আগের মতো আর গোলপাতার চাহিদা নেই। বিক্রি কম হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতার গত বছরের গোলপাতা এখনও রয়ে গেছে। তবে অনেক বাওয়ালী বলে, গোলপাতায় যে পরিমাণ টাকা লগ্নি করা হয়, সেই তুলনায় ব্যবসা নেই।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মো. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, তিনি প্রতিটি স্টেশনে ও কূপে নিয়মিত তদারকি করে বিএলসি নবায়ন করার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি ক‚পে নৌকার মিল রেখে গোলপাতা কাটার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ