Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুষ্টিয়ায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ

পাথরের সঙ্গে বালু : রাতের আঁধারে ঢালাই

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

পাথরের সঙ্গে বালু মেশানো, পরিমাণে কম দেয়া, মোটা বালুর পরিবর্তে ফিলিং বালু মেশানো, দিনের পরিবর্তে রাতে ঢালাই, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জিসি গোপগ্রাম এলাকার জিসি সড়কের পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ।
এলাকাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত সোমবার বিকেলে নির্মাণাধীন কাজ বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রকৌশলী অফিস।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুই কোটি ৪৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণে গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করে নড়াইল জেলার লোহাগাড়া থানার লক্ষীপাশার মেসার্স নূর কনস্ট্রাকশন। ওই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি সেতু নির্মাণকাজ শুরু করার চুক্তি থাকলেও কাজের নমুনা মেলেনি কয়েক মাস পরেও। এরপর নির্ধারিত তারিখের পাঁচ মাস পরে ১৭ জুলাই সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ।
উদ্বোধনের পর নির্মাণ সামগ্রী ফেলা রাখা হলেও নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি। অবশেষে মাসখানেক আগে সেতুর মাটির নিচে কয়েকটি পিলারের কাজ শুরু হতে না হতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে কাজের মেয়াদ। একবছর মেয়াদি কাজের মেয়াদ শেষ হলেও দেখা মেলেনি সেতুর।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুর পিলার নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে বালু মিশানো পাথর। মোটা বালুর সঙ্গে চিকন বালু ও দিনের পরিবর্তে রাতে চলছে ঢালাইয়ের কাজ।
এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত সত্যতা মেলায় উপজেলা প্রকৌশলী অফিস কাজ বন্ধ করে দেয়।
নির্মাণাধীন সেতুর পাশেই পলাশ হোসেনের হাঁসের খামার। পলাশ উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সেতুর নির্মাণকাজ প্রসঙ্গে পলাশ বলেন, ‘এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ঠিকাদার পাথরের সঙ্গে বালু ও মোটা বালুর সঙ্গে ধুলাবালু মিশিয়ে কাজ করছেন। যা সম্পূর্ণ অনিয়ম ও ঝুঁকিপূর্ণ।’ তিনি আরও বলেন, অনিয়মের কথা বললেই চাঁদাবাজির হুমকি দেন।
হাসান নামের স্থানীয় একজন বলেন, কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। এভাবে কাজ হলে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন স্কুলশিক্ষক বলেন, এক বছরেরও সেতুর মুখ দেখতে পারলাম না। মানুষের চলাচলের খুব কষ্ট হচ্ছে।
ওই সেতু দিয়ে চলাচলকারী কুমারখালী সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুরাদ হোসেন বলেন, পাথরের বদলে শুধু বালু পাওয়া যাচ্ছে। ওপরে মোটা বালু থাকলেও ভেতরে ধুলাবালু। তিনি অভিযোগ করেন, অনিয়ম করতেই দিনের কাজ রাতে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কুমারখালী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, বালু মেশানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে সেতুর কাজ আপাতত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাজের মেয়াদও শেষ হওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ