Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শীত বিদায়ের আগেই সউদী আরবে ‘হুদহুদ’ পাখির আগমন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২১, ১০:২৮ এএম

পাখিটিকে একবার দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। মনটা অন্য রকম এক ভালো লাগার আবেশে ভরে যায়। অনন্যসুন্দর সেই পাখিটির নাম হুদহুদ। সউদী আরবে শীতের অবসান এবং বসন্তের সূচনার অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে হুদহুদ পাখির আগমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত অনেক প্রবাদ রয়েছে। সাধারণত বলা হয়, হুদুদের আগমন শীতের বিদায় এবং গ্রীষ্মের আগমনের লক্ষণ। তবে এবার হুদহুদ চলে আসলেও সউদীতে শীত এখনো বিদায় নেয়নি।

মূলত আফ্রো-ইউরেশিয়া অঞ্চলের হুপো নামে একটি পাখির নামানুসারে এই পাখিটির নামকরণ করা হয়েছে। পাখিটির শরীর বাদামি এবং ডানা ও লেজে সাদা-কালো দাগ রয়েছে। মাথায় সুন্দর একটি ঝুঁটি। সেই ঝুঁটির হলদে বাদামি পালকের মাথাটা কালো রঙের।

ইতিহাসের পাতায় স্হান পাওয়া পাখি হুদহুদ ২৫-৩২ সেন্টিমিটার (৯.৮-১২.৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। পাখা দুটি ছড়িয়ে দিলে তা ৪৪-৪৮ সেন্টিমিটার (১৭-১৯ ইঞ্চি) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ওজন ৪৬-৮৯ গ্রাম পর্যন্ত।

হুদহুদকে বলা যেতে পারে ইতিহাসের পাখি। এটি আকারে ছোট। সৌন্দর্যে অনন্য। হজরত সুলাইমান (আ.) এর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হতো এই পাখি। হজরত সুলাইমান (আ.) পশুপাখিদের ভাষা বুঝতেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে এই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী করেছিলেন। একজন নবী এবং একই সঙ্গে রাজার অনেক কাজই করত এই পাখিটি। অন্যান্য দেশগুলোতে কী হচ্ছে, কী চিন্তা ভাবনা চলছে, কোথায় কী ঘটছে, কোন রাজা কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদি। এসবের জন্য হজরত সুলাইমান (আ.) হুদহুদ পাখি ব্যবহার করতেন।

উল্লেখ্য যে, ‘হুদহুদ’ এক জাতীয় ছোট্ট পাখির নাম। যা পক্ষীকূলের মধ্যে অতীব ক্ষুদ্র ও দুর্বল। যার সংখ্যাও দুনিয়াতে খুবই কম। হাদিসে বর্ণিত আছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) একদা নও মুসলিম ইহুদি পন্ডিত আব্দুল্লাহ বিন সালামকে জিজ্ঞাসা করেন, এত সব পাখি থাকতে বিশেষভাবে ‘হুদহুদ’ পাখির খোঁজ নেয়ার কারণ কী ছিল? জওয়াবে তিনি বলেন, সুলায়মান (আ.) তার বিশাল বাহিনীসহ ওইসময় এমন এক অঞ্চলে ছিলেন, যেখানে পানি ছিল না।
আল্লাহ তায়ালা হুদহুদ পাখিকে এই বৈশিষ্ট্য দান করেছেন যে, সে ভূগর্ভের ব¯সমূহকে এবং ভূগর্ভে প্রবাহিত পানি উপর থেকে দেখতে পায়। হযরত সুলায়মান (আ.) হুদহুদকে এজন্যেই বিশেষভাবে খোঁজ করছিলেন যে, এতদঞ্চলে কোথায় মরুগর্ভে পানি লুকায়িত আছে, সেটা জেনে নিয়ে সেখানে জিন দ্বারা খনন করে যাতে দ্রুত পানি উত্তোলনের ব্যব¯া করা যায়।

একদা হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) ‘হুদহুদ’ পাখি সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন। তখন নাফে ইবনুল আযরক্ব তাকে বলেন, জেনে নিন হে মহাজ্ঞানী! হুদহুদ পাখি মাটির গভীরে দেখতে পায়। তবে তাকে ধরার জন্য মাটির উপরে বিস্তৃত জাল সে দেখতে পায় না। যখন সে তাতে পতিত হয়। জবাবে ইবনু আববাস (রা.) বলেন, যখন তকদীর এসে যায়, চক্ষু অন্ধ হয়ে যায়।’ চমৎকার এ জবাবে মুগ্ধ হয়ে ইবনুল আরাবী বলেন, এরূপ জবাব দিতে কেউ সক্ষম হয় না, কোরআনের আলেম ব্যতীত। সূত্র : আল আরাবিয়া



 

Show all comments
  • Anwar+Ashraf ৩ মার্চ, ২০২১, ১১:৪৫ এএম says : 0
    হুদহুদকে বলা যেতে পারে ইতিহাসের পাখি। এটি আকারে ছোট। সৌন্দর্যে অনন্য। হজরত সুলাইমান (আ.) এর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হতো এই পাখি। হজরত সুলাইমান (আ.) পশুপাখিদের ভাষা বুঝতেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে এই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী করেছিলেন। একজন নবী এবং একই সঙ্গে রাজার অনেক কাজই করত এই পাখিটি। অন্যান্য দেশগুলোতে কী হচ্ছে, কী চিন্তা ভাবনা চলছে, কোথায় কী ঘটছে, কোন রাজা কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদি। এসবের জন্য হজরত সুলাইমান (আ.) হুদহুদ পাখি ব্যবহার করতেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ