Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বর্ণের দাম আরো কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিশ্ববাজারে বড় ধরনের দরপতনের মধ্যে কমেছে স্বর্ণের দাম। ফেব্রুয়ারিজুড়ে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ দরপতনের পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেও স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। এমন টানা দরপতনের মধ্যে পড়ায় ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে দামি এই ধাতুটির দাম।
স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে বড় দরপতন হয়েছে রুপা ও প্লাটিনামের। গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। রুপার দাম কমেছে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। প্লাটিনামের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
এদিকে ভারতের বাজারে হু হু করে কমছে স্বর্ণের দাম। ২০২০ সালের আগস্টে দেশটিতে প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণের দাম উঠেছিল ৫৬ হাজার রুপি পর্যন্ত। তবে মার্চে এসে এই দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার রুপিতে। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বর্ণের দাম কমার পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারের অবদান রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে স্বর্ণে বিনিয়োগ কমতে শুরু করেছে। এর পেছনে কারণ, বন্ডের ক্ষেত্রে সুদের হার বেড়েছে। ফলে স্বর্ণ ছেড়ে বন্ড কেনাতেই প্রাধান্য দিচ্ছেন ক্রেতারা। আর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। এছাড়া স্বর্ণের দাম কমার অন্য কারণও রয়েছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এ দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকলে শিগগিরই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও কমানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার কারণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর পরও আমরা দেখছি, গত কয়েক দিন ধরে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী। বিশ্ববাজারে দাম কমার এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আমরাও স্বর্ণের দাম কমাবো।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসায় কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী দেখা দেয়ায় গত ৩ মার্চ থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
২ মার্চ অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩ মার্চ থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা কমিয়ে ৭১ হাজার ১৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৮ হাজার ১ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ৫৯ হাজার ২৫২ এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৪৮ হাজার ৯৩১ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ভরিতে স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৮৩ টাকা কমানো হয়। সে হিসাবে দুই মাসের মধ্যে দেশের বাজারে ভরিতে স্বর্ণের দাম সাড়ে ৩ হাজার টাকা কমেছে।
স্বর্ণের দাম কমলেও রুপার পূর্বনির্ধারিত দাম বহাল রয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ১ হাজার ৪৩৫, ১৮ ক্যারেটের ১ হাজার ২২৫ এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ৯৩৩ টাকা। বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কমানোর পরও বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কিছুটা দাম বেড়েছে। এরপরও বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি স্বর্ণ।
শেষ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ দশমিক ৭২ ডলার বাড়ার পরও সপ্তাহের প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে প্রায় ৩৪ ডলার। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ১ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৩৯ ডলারে থিতু হওয়া প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম গত সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৭০০ দশমিক ৯১ ডলারে নেমে এসেছে।
গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে স্বর্ণের দাম কমে ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ। টানা তিন সপ্তাহের এই পতনে ৯ মাসের মধ্যে স্বর্ণের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবস্থান করছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এই দরপতনের বিষয়ে বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিলে বিনিয়োগ অনেকটা একমুখী হয়ে পড়েছিল। বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ কিনে মজুদ করে। এখন ধীরে ধীরে অর্থনীতি সচল হয়ে উঠেছে। বিনিয়োগকারীরাও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। স্বর্ণের দাম কমার এটি একটি কারণ হতে পারে বলে আমার ধারণা।
এদিকে শেষ কার্যদিবসে দশমিক ২৫ শতাংশ কমার মাধ্যমে গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপার দাম কমেছে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ২৪ ডলার। এই দরপতনের ফলে মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে রুপার দাম ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে গেছে।
এদিকে স্বর্ণ ও রুপার দরপতনের সঙ্গে গেল সপ্তাহে বড় পতন হয়েছে আরও এক দামি ধাতু প্লাটিনামের। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম ৩ দশমিক ৭৫ ডলার বা দশমিক ৩৩ শতাংশ বাড়ার পরও সপ্তাহের ব্যবধানে এই ধাতুটির দাম কমেছে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১২৯ দশমিক ৭৫ ডলারে। যা আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ১ হাজার ১৮৮ দশমিক ৭০ ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বর্ণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ