Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নামঞ্জুর

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২১, ৪:৫৬ পিএম

নওগাঁর মহাদেবপুরে জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সাবেক এমপি মরহুম আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর মুক্তিযোদ্ধার যাচাই-বাছাইয়ের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার সদন বাতিল হবার পথে। মরহুমের পক্ষে তাঁর বড় ছেলে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি আবেদনটি করেছিলেন। কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি যাচাই-বাছাইয়ের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

মরহুম আকতার হামিদ সিদ্দিকী (১৯৪৭-২০১৭) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯১ থেকে শুরু করে চারবার এমপি নির্বাচিত হন। তাঁকে ২০০১ সালে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মনোনীত করা হয়। তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় এলাকার মানুষের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন নেতা। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বিষয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। চলে পক্ষে বিপক্ষে নানান টেবিলটক। তাঁর প্রতি কি অবিচার করা হচ্ছে, নাকি তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, তা এখন টক অব দ্য টাউন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, সারাদেশের মত গত ৬ ফেব্রæয়ারি মহাদেবপুরেও বেসামরিক গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৮২টি আবেদন জমা পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে ৭৫ জনের আবেদন সঠিক পাওয়া যায়। তিনজনের নাম লাল মুক্তিবার্তায় থাকায় যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়নি। একজন যাচাইয়ে উপস্থিত হননি। অপর একজনের ব্যাপারে কমিটির সদস্যরা দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বাকি দুইজনের নামে অভিযোগ থাকায় আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এদের মধ্যে একজন লক্ষণপুর গ্রামের আলতাফ হোসেন ফারুক ও অপরজন উত্তরগ্রামের আকতার হামিদ সিদ্দিকী।

যাচাই-বাছাইয়ের চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে ছিলেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জামুকার চেয়ারম্যান মনোনীত সভাপতি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বাদউজ্জামান বদি, স্থানীয় এমপির মনোনীত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নূরানী আলাল, জেলা প্রশাসকের মনোনীত সদস্য সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীন আলী সরদার ও সদস্য সচিব ইউএনও।
কমিটির সভাপতি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় আলতাফ হোসেনের বয়স কম ছিল। আর আকতার হামিদ সিদ্দিকী মুক্তিযোদ্ধা নন বলে ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ উত্থাপন করেন। সদস্য সদ্য সাবেক হওয়া কমান্ডার মহসীন আলী সরদার জানান, আকতার হামিদ সিদ্দিকী ডেপুটি স্পিকার থাকাকালে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেন। সেসময় একটি জনসভায় ‘নওগাঁয় কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়নি’ বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু নওগাঁর কয়েকটি উপজেলায় সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এর প্রতিবাদে তখন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা একাধিক সমাবেশ করেছেন। যাচাই-বাছাইয়ে কয়েকজন বীরমুক্তিযোদ্ধা আবারও সেই অভিয়োগ উত্থাপন করেন।
এছাড়া উত্তরগ্রামের গয়েশ আলী সরদারের ব্যাপারে সভাপতি বদিউজ্জামান বদি ও সদস্য মহসীন আলী সরদার বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। কিন্তু সদস্য গোলাম নূরানী আলাল বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। ফলে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মহাদেবপুর ইউএনও মিজানুর রহমান মিলন বলেন, বিধি অনুযায়ী যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। তাঁরাই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের ঘনিষ্ঠভাজন বলে পরিচিত উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার নান্নু বলেন, ‘সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের চেষ্টা করছে। একইভাবে সাবেক ডেপুটি স্পিকারের বেলায়ও তাই করা হচ্ছে।’#

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তিযোদ্ধা সনদ নামঞ্জুর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ