Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুন্দরগঞ্জ পৌর সচিব ও হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচারে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২১, ৬:২৮ পিএম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সচিব এসএম মাজহারুল আনোয়ার এবং হিসাবরক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুলের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচার ও প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানা গেছে, ডাম্পিং স্টেশনের জমি ক্রয় বাবদ ৮৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। এছাড়াও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাজস্ব ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচারসহ কয়েকটি প্রকল্পের নামে কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নেন। উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের টাকা বিধি-বহির্ভূতভাবে রাজস্ব তহবিলে স্থানান্তর করে নামমাত্র বেতন-ভাতা খাতে ব্যায় দেখিয়ে ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেন। বিভিন্ন ইজারা প্রক্রিয়ায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা আদায় হলেও তা পৌর কোষাগারে জমা দেয়া হয়নি। এছাড়াও উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করে টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেয়ার নানান অসঙ্গতির বর্ণনা দেয়া হয় অভিযোগে। বেতন ভাতা বকেয়া রয়েছে পৌর কর্মচারীদের এক বছরের । অথচ পৌরসভার বার্ষিক আয় তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা।

চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি নব-নির্বাচিত মেয়র আব্দুর রশীদ রেজা সরকার শপথ নেয়ার পর বিষয়টি তার নজরে আসে। পৌর কর্মচারীদের এক বছরের বেতন-ভাতা বকেয়া, পরিষদের আয়-ব্যয়সহ একাধিক বিষয়ে অসঙ্গতি থাকায় গত ১৭ ফেব্রæয়ারি পৌরসভার রাজস্ব ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের আয়-ব্যায়ের হাল নাগাদ তথ্য প্রদানের জন্য তিন দিনের মধ্যে সচিব ও হিসাবরক্ষককে চিঠির মাধ্যমে নির্দেশ দেন মেয়র। উক্ত সময়ের মধ্যে হিসেব দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু চিঠি ইস্যুর ২৫ দিন পরও আয়-ব্যায়ের কোনো হিসেব দেননি তারা। পরে সুন্দরগঞ্জ পৌরবাসী ও সচেতন নাগরিক সমাজ এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন রংপুর বিভাগে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন । তবে মেয়রের চিঠির জবাব না দেয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে সচিব মাজহারুল আনোয়ারের বলেন মেয়র সাহেব যেসব বিষয়ে হিসাব চেয়েছে তা আমি সঠিকভাবে উপস্থাপন করেছি। হিসাবরক্ষক আশরাফুল জানান, মেয়র সাহেবের চিঠির জবাব আমি রেকর্ড অনুযায়ী দেইনি। তবে তাকে কিছু ম্যামো ও রেজিস্ট্রার খাতা দেখিয়েছি। পৌরবাসী প্রত্যাশা করেন নব নির্বাচিত মেয়র দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন।’

এদিকে মেয়র আব্দুর রশিদ রেজা সরকার জানান, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী আচরণ বিধি না মেনে সচিব ও হিসাবরক্ষক কিভাবে লাখ লাখ টাকা চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে তা আমার জানা নেই। এছাড়াও শপথ গ্রহণের দিন যথাযথ তথ্য উপাত্ত সম্বলিত ফরমেটে আমাকে দায়িত্ব বুঝে দেয়া হয়নি। এমনকি পৌরসভার ব্যাংক স্টেটমেন্ট অনুযায়ী স্থিতির বিষয়ে হালনাগাদ কোনো তথ্য দেখাতে পারেনি। আরও জানান, বিভিন্ন খাতে হিসাব-নিকাশের অসঙ্গতি থাকায় সচিব ও হিসাবরক্ষককে তিন দিনের সময় দিয়ে সঠিক তথ্য উপাত্ত উপস্থাপনের নির্দেশ দিলেও তারা সময়মতো তা দিতে ব্যর্থ হন। মেয়র আরও জানান, ডাম্পিং স্টেশনের ৮৬ লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও তা পরে একাউন্টে জমা দেয়া হয়েছে। তাদের কাছে অন্যান্য হিসাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন এগুলোর উপর আপনাকে রান করতে হবে। মেয়র আরও বলেন ,আমি পৌর মেয়র। কিন্তু এই দুই কর্মকর্তাসহ তাদের কিছু অনুসারী আমাকে মানতে চায় না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়টি অবহিত করার পাশাপাশি তাদের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গাইবান্ধা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ