Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ভ্যাকসিন একমাত্র উপায় নয় ইনকিলাবকে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২১, ১২:১৪ এএম

করোনা সংক্রমণ কমে আবার বেড়ে যাচ্ছে। এটা করোনার নতুন ধরণ নাকি আগের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। বাংলাদেশের মতো দেশসমূহে সংক্রামক রোগ ও এর ধরণ নির্ণয়ের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। বরং অত্যন্ত দুর্বল। বৈশ্বিক মহামারী হওয়ায় করোনার গতি-প্রকৃতি, ধরণ, সংক্রমণের বিষয়ে সূক্ষ্ণ এবং তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা চলমান রাখতে হবে’।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন এবং নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. এম এ ফয়েজ দৈনিক ইনকিলাবকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাতকারে উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। গত বৃহস্পতিবার দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি আরও বলেছেন, টিকা দেওয়া শুরু হওয়ায় মানুষের মধ্যে আত্মসন্তুষ্টি আত্মতৃপ্তির ভাব চলে এসেছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে যা যা করণীয় ছিল সেগুলো করা হয়নি। বরং স্বাস্থ্যবিধি পালন দিন দিন শিথিল হয়ে গেছে।
তিনি পরামর্শ দেন, পর্যায়ক্রমে টিকা অবশ্যই নিতে হবে। তবে যারা টিকা নিচ্ছেন এবং এখনও যারা নেননি উভয়েরই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা আবশ্যক। নিরাপদ থাকতে হলে টিকা নিলেও মাস্ক পরাসহ নিয়ম-বিধি মেনেই জীবনযাপন করা প্রয়োজন। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আরও কিছুদিন পরই দেহে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরি হয়। ড. এম এ ফয়েজ বলেন, কোভিডে আক্রান্তের পর সুস্থ হলে শরীরে ‘এন্টি বডি’ হয়ে গেল- তাও নিশ্চিত ধরে নেওয়ার কারণ নেই। কেউ এন্টি বডি হলে বা তার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বেশি থাকলে অন্যজনের সেটি নাও থাকতে পারে। তখন একের দ্বারা অপরজন আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। সরকারের একার পক্ষে করোনা সংক্রমণরোধ সম্ভব নয়। এরজন্য পাড়া-প্রতিবেশি, এলাকাভিত্তিক গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নতুবা একজনের অবহেলা ও অনীহার কারণে আরেকজনের সংক্রমণ এবং ভোগান্তি, বিপদ তৈরি হতেই থাকবে। কোভিডে মারাত্মক আক্রান্ত না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হননি, অথচ পজেটিভ- এমন কারও ছোঁয়ায় এলেই সুস্থ মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
করোনার নতুন ধরণ (স্ট্রেইন) নিয়ে তিনি জানান, ভাইরাসের ধরণ পরিবর্তনশীল। সক্ষ্ণ থেকে সূক্ষ্ণতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করে করোনার পরির্তনশীলতার ওপর অব্যাহতভাবেই নজরদারি বা সার্ভিল্যান্স চালু রাখতে হবে। সূক্ষ্ণ পরীক্ষায় এর জেনম সিকোয়েন্স, জিন বিশ্লেষণ করতে হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এভাবে দেখতে হবে নতুন ধরণ নিয়ে ভাইরাসটি যুক্তরাজ্য, আফ্রিকা, ব্রাজিল কিংবা অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটলো কিনা।
তিনি উল্লেখ করেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণরোধে সরকারের বিভিন্ন দফাওয়ারি কর্মপরিকল্পনা ও রূপরেখা রয়েছে। তবে সেগুলো নিছক কাগজে লেখা থাকলেই তো হবে না। করোনা যাতে ছড়াতে না পারে এরজন্য সরকারি-বেসরকারি, সমাজ, ব্যক্তি, পরিবারসহ সকল পর্যায়ে সমন্বয় থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. এম এ ফয়েজ বলেছেন, শুধুই স্বাস্থ্য প্রশাসন নয়; সরকারের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগিয়ে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিরোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সংশ্লিষ্ট আইন-বিধির দৃশ্যমান প্রয়োগ থাকতে হবে। বিদেশফেরতদের মাধ্যমে যাতে সংক্রমণ না ঘটে এরজন্য বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দরসহ সকল এন্ট্রি পয়েন্টগুলো নজরদারিতে রাখতে হবে। মাস্ক পরা, সামাজিক-শারীরিক দূরত্ব, করোনার ধরনের ওপর গবেষণা ও বিশ্লেষণ, টেস্ট ও শনাক্তকরণ, আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন, ট্র্যাকিং, দ্রুত চিকিৎসা, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ জরুরি। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এই পদক্ষেপগুলো সমন্বিতভাবে ও একত্রে গ্রহণ করার মাধ্যমেই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভ্যাকসিন

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ