Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চুরি করা গাড়ি সীমান্তের দুর্গম এলাকায় বিক্রি

চোরাই ৮টি গাড়িসহ গ্রেফতার ৪ বিআরটিএ-এর সীল ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করা হয়

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গাড়ি চুরির পর সীমান্তের কোনো দুর্গম এলাকায় নিয়ে রাখা হয়। পরে সময় করে নকল কাগজপত্র তৈরি করে নম্বর প্লেট পাল্টে বিক্রি করে গাড়ি চোর চক্রের সদস্যরা। চোরাই প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস উদ্ধারসহ গাড়িচোর চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে ডিএমপির গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের কর্মকর্তারা। গ্রেফতাররা হলেন- নূরুল হক, আব্দুল আলিম ওরফে ইমন, মো. হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান ও এ এইচ রুবেল। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৮ টি চোরাই প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়। গতকাল রোববার গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আশারাফুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।

সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আশরাফুল ইসলাম জনান, স¤প্রতি ঢাকায় মিরপুরের কাফরুল থানা, গুলশানের গুলশান থানাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটে। কাফরুল থানার বিআরটিএ অফিসের রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে একটি প্রাইভেটকার চুরির ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি কাফরুল থানায় মামলা হয়। ওই মামলা তদন্তকালে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, গাড়িচোর চক্রের সদস্যরা কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে স্টার্ট দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৮ জানুয়ারি নূরুল হককে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে, গত ১২ মার্চ চক্রের অপর সদস্য আব্দুল আলিম ওরফে ইমনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। চলমান অভিযানে গত ১৬ মার্চ অভিযান চালিয়ে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানা এলাকা থেকে মো. হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান ও এ এইচ রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, তারা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সংঘবদ্ধ গাড়ি চুরির সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এ চক্রের ২/৩ জনের একটি গ্রæপ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টার্গেট গাড়ি খুঁজতে থাকে। টার্গেটকৃত গাড়ি পেলে সময় ও সুযোগ বুঝে কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ছুটে যায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, পূর্বাচল বা কাচঁপুর ব্রিজের দিকে। সামনে ও পেছনে বাইক বা অন্য কোনো গাড়িতে থাকে এ চক্রের বাকি সদস্যরা। সেখান থেকে তাদের একজন দক্ষ ড্রাইভার গাড়িটি পৌঁছে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ বা মৌলভীবাজারের কোনো প্রভাবশালী চোরাই গাড়ি বিক্রির সিন্ডিকেটের কাছে। সেখান থেকে অন্য ড্রাইভার দ্বারা গাড়িটি চলে যায় সীমান্তের কোনো দুর্গম এলাকায়। পরে বিআরটিএ-এর সীল স্বাক্ষর জাল করে গাড়িটির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করা হয়, মূল মালিকের নামের সাথে মিল রেখে তৈরি করা হয় নকল দলিল অথবা আদালতের সই সম্বলিত নিলামের নকল কাগজপত্র। সহজ-সরল নিরীহ লোকদের ভুল বুঝিয়ে তাদের নিকট অনেকটা কম দামে গাড়িটি বিক্রি করে দেয়া হয়। এ চক্রের সদস্যরা কিছু কিছু গাড়ি দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিল ও গাঁজা বহন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআরটিএ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ