Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মোদির ঘুম কেড়ে নিয়েছেন যে নারী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২১, ৫:১৪ পিএম

বিধানসভা ভোটের প্রচারে যে দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একপ্রান্তে পা রেখেছেন, সে দিনই আরেক জন দিল্লির সিংঘু সীমানা থেকে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। তিনি হচ্ছেন কৃষক-শ্রমিক আন্দোলনের নতুন মুখ নদীপ কউর। এই নারীই এখন প্রতাপশালী মোদির ঘুম হারাম করছেন।

শনিবার বীরেন্দ্র মঞ্চে একটি ফ্যাসিবাদ-বিরোধী সাহিত্য অনুষ্ঠানে সারা দিন উপস্থিত ছিলেন দলিত-শ্রমিক নেত্রী নদীপ কউর। গত ১২ জানুয়ারি যাকে সিংঘু সীমানা থেকে গ্রেফতার করে হরিয়ানা পুলিশ। নরেন্দ্র মোদি খড়্গপুরে শনিবারের সভা থেকে বার্তা দিয়েছেন বাবা অম্বেডকরের তৈরি সংবিধানের অধিকার, পুলিশ-প্রশাসনের গণতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষার মতো জরুরি বিষয়ে। আর নদীপ কলকাতায় বসে বলেছেন, এর কোনওটাই মোদি-রাজত্বে পালন করা হয়নি। নদীপের অভিযোগ, ‘দেশে ফ্যাসিবাদের রাজত্ব চলছে। গণতন্ত্র রক্ষা অনেক দূরের কথা, বিজেপি শ্রমিক, মজদুর, কৃষক-বিরোধী সরকার চালাচ্ছে।’

দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক অধিকারের জন্য লড়াই চালানো বছর পঁচিশের মেয়েটি দিল্লির কৃষক আন্দোলন সমর্থন করে সেখানেও পৌঁছেছিলেন। গত জানুয়ারি মাসে সেখানেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। দেশ জুড়ে এর প্রতিবাদ হয়। নদীপের মুক্তির দাবিতে টুইট করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যরিসের ভাইয়ের মেয়ে মীনা হারিস। হরিয়ানার কারনাল জেলে দেড় মাস বন্দি থাকার পরে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট নদীপের জামিন মঞ্জুর করে। পুলিশ মেডিক্যালের সমস্ত রিপোর্ট পেশ না করায় হাইকোর্ট ওই মামলার রায়ে স্থগিতাদেশ আনে। পুলিশের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে নদীপকে বন্দি করার যে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, সেই মামলাটিও আলাদা করে শোনা হবে বলে আশ্বাস দেয় আদালত।

নদীপের অভিযোগ, কোনও মহিলা পুলিশ না থাকা সত্ত্বেও সে দিন তাকে হরিয়ানা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। তার দাবি, ‘পুলিশ হেফাজতে কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না। সেখানে আমায় মারধর করা হয়। গোপনাঙ্গেও আঘাত করে পুলিশ। মারধর করার সময়ে বার বার বলা হয়, দলিত হয়ে আমার আওয়াজ তোলার এত সাহস হয় কী করে! পাঁচ দিন পরে আমার মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়। ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলে এই অন্যায়গুলো জিতে যাবে। সেটা হবে না।’

পাঞ্জাবের গ্রামে থাকার সময়ে খেতে কাজ করেছেন তিনি। গ্রামের দলিত মেয়েদের কী ভাবে ধনী-উচ্চবর্ণের অত্যাচার সহ্য করতে হয়, সেই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও রয়েছে। নদীপের কথায়, ‘যখন কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে এলাম, সেখানেও প্রতিদিন দেখতে পাই, গরির মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, দলিত, শ্রমিক-মজদুরদের জন্য লড়াই করব।’

নদীপ বলছেন, ‘আমার গ্রামে মেয়েদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সেখানে নারীর সমানাধিকারের ভাবনা কল্পনাও করা যায় না। তারা সেখানে এক দিকে সংসারের কাজকর্ম-দায়িত্ব সামলাচ্ছে, আর এক দিকে বাচ্চা মানুষ করছে, আবার, মাঠে গিয়ে চাষ-আবাদের কাজও করছে। তার পরেও তাদের কেউ শ্রমিক, কৃষক, মজদুর বলে যোগ্য সম্মান দেয় না। গ্রামে মেয়েদের ধর্ষণ হলে সেখানে অভিযোগ জানানোর মতো পরিসরটুকু নেই। এই মেয়েদেরই প্রতিনিধিত্ব করছি আমি। তাদের অধিকারের কথা গলা তুলে চেঁচিয়ে বলতে চেষ্টা করছি।’ সূত্র: এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নারী

১৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ