Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উপেক্ষিত বগুড়ার আলু ঃ রপ্তানির অপার সম্ভাবনা

ফায়দা নিচ্ছে প্রতিবেশী ভারত...

মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২১, ৫:৫৪ পিএম

৭০ এর দশক থেকে ৮০’র মাঝামাঝি পর্যন্ত সরকারি প্রচারণা বিজ্ঞাপনের একটা কমন প্রচারণা ছিল ‘বেশি করে আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান ।’
ইদানিং এই বিজ্ঞাপনের ভাষা আর তেমনভাবে শোনা না গেলেও বিষযটি এখনও সমভাবে প্রাসঙ্গিক। কারন এখন চালের কেজি ৫৪ থেকে ৬৪ আর প্রকারভেদে আলুর কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা। বিদ্যমান বাস্তবতায় দুটি প্রধাণ খাদ্য সামগ্রীর মুল্যের হেরফের হওয়া খুবই কম ।
ওপরের অভিমত বগুড়া সরকারি আযিযুল হক কলেজের একজন শিক্ষকের । তার মতে আলুর জন্য বিখ্যাত বগুড়া জেলা বা বগুড়া কৃষি অঞ্চলের দিকে সরকারিভাবেই আলাদা নজর দেওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে । কারণ দেশের উৎপাদিত আলুর একটা সিংহভাগই উৎপন্ন হয় বৃহত্তর বগুড়া তথা বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায়। এখানকার উৎপাদিত বিখ্যাত ফাটা পাকড়ী, লাল পাকড়ী আলু সারা দেশের সবজীর বাজারে মুল্য নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভুমিকা রাখে। গত এক দশক ধরেই নিরবে রপ্তানী পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বগুড়ার আলুর নাম।

বগুড়া , জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলাকে নিয়ে গঠিত বগুড়া কৃষি অঞ্চলে আলু চাষাবাদের খবর নিয়ে জানা গেল বিগত ১৯-২০ অর্থবছরে ৯৭ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮৬ মেট্রিক টন । চলতি ২০/২১ অর্থ বছরে এই অঞ্চলে আলু আবাদের টার্গেট ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৬২০ হেক্টর । চাষ হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে । এবার আলু চাষের জমির পরিমান বাড়লেও কৃষি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ফলন হয়েছে ২২ লাখ ১১ হাজার ৮৫৫ মেট্রিক টন । মানে গত মওশুমের তুলনায় ৩২ হাজার মেট্রিক টন কম আলু উৎপাদন হয়েছে ।
কারন জানতে চাইলে কৃষি কর্মকর্তা আজিজার রহমান বলেন , গত বছরের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় সবজী উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে আলুর দাম বেড়ে হাফ সেঞ্চুরি করে । জানুয়ারী থেকেই চাষীরা বেশি দামের আশায় কাঁচা আলুই বাজারে এনে বিক্রি করে লাভবান হয় । মুলত প্রি-ম্যাচিউরড আলু বাজারে তোলায় ফলনে ঘাটতি হয়েছে তবে এতে আলু চাষিরা লাভবান হয়েছে ।

বগুড়া কৃষি অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ি চলতি বছরে বগুড়া কৃষি অঞ্চলের আওতাভুক্ত ৪ জেলায় ১ লাখ ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও বগুড়ায় ৫৮ হাজার ৫২৫ এবং জযপুরহাটেই ৪০ হাজার ৩১৫ হেক্টর এবং সিরাজগঞ্জে মাত্র ২হাজার ৯৫৫ এবং পাবনায় মাত্র ৫৬০ হেক্টর ধরা হয়েছে। বগুড়া কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মাহবুবুর রহমানের মতে পরিসংখ্যানেই এটা পরিষ্কার মুলত বৃহত্তর বগুড়ায় হল উৎকৃষ্ট মানের আলু চাষের উপযুক্ত স্থান।
বগুড়া কোল্ডষ্টোরেজ এ্যাসোসিয়েশনের নেতা এবং হিমাগার মালিক ও নিত্যপণ্যের আমদানিকারক আলহাজ¦ আব্দুল গফুর মনে করেন , বগুড়ার উৎপাদিত উৎকৃষ্টমানের আলু নিয়ে যে অবহেলা করা হচ্ছে তাতে করে আলুর আবাদ নিয়ে কৃষকরা হতাশাগ্রস্ত হবে , রপ্তানীকারকরা উৎসাহ পাবেনা । দুঃখ করে তিনি বলেন , হতাশায় অনেক হিমাগার মালিকই ব্যবসা পরিবর্তনের চিন্তায় আছেন , কেউ কেউ হিমাগার বিক্রি করে দিয়েছেন। অথচ মালয়েশীয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, এমনকি পাকিস্তানে এবং মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশেই আলু রপ্তানীর অপার সম্ভাবনা রয়েছে । অথচ প্রতিবেশি ভারত উল্লেখিত দেশগুলোতে আলু সহ সব ধরনের সবজী রপ্তানী করে রেমিটেন্স আর্ন করছে এককভাবে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আলু

৫ অক্টোবর, ২০২২
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৭ জানুয়ারি, ২০২২
২০ নভেম্বর, ২০২১
১৯ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ