Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উৎসব পালনের জন্য সরকার করোনাকে পাত্তা দেয়নি

পুলিশ-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরেছে : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা কলংক জনক অধ্যায় সংগঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর যখন সমগ্র জাতি পালন করছে তখন এই অবৈধ সরকারের পুলিশ এবং আওয়ামী লীগে সন্ত্রাসী পেটুয়া বাহিনীর গুলিতে ও আক্রমণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাক্ষণবাড়ীয়াতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরেছে। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
হেফাজতকে বিএনপি উস্কানি দিচ্ছে সরকার দলের এমন অভিযোগের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নয়, উস্কানি তো দিয়েছে সরকার। প্রথম থেকে উস্কানি দিয়ে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে তারা। বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের প্রথম যে মিছিল ছিল, তারা একটা সাধারণভাবে প্রতিবাদ মিছিল করতে চেয়েছিলো। সেই প্রতিবাদ মিছিলের ওপরে উত্তর দিক থেকে পুলিশ আক্রমণ করেছে, দক্ষিণের গেইট দিয়ে যখন পালাতে গেছে তখন আওয়ামী লীগের সশ্বস্ত্র সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছে এবং সেখানে বহু লোককে হতাহত করেছে। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটাজারিতে। সেখানে মিছিলে গুলি করেছে, সেই গুলিতে মারা গেছে। পরবর্তিতে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপরে, সমাবেশের ওপরে তারা গুলি করেছে। এই হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। সারাদেশে মহানগরগুলো প্রতিবাদ সমাবেশ এবং জেলা সদরগুলোতে প্রতিবাদ সমাবেশ-মিছিল হয়েছে। দুইদিনে সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশ করার চেষ্টা করেছে, বিভিন্ন জায়গায় সফল হয়েছে। বেশিরভাগ জায়গা পুলিশ ও আওয়ামী সশস্ত্র বাহিনী মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে সাধারণ মানুষের ওপর চড়াও হয়েছে, আক্রমণ করেছে। গত কয়েকদিনে আমাদের হিসাব অনুযায়ী ১৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, আমাদের প্রতিবাদ ছিলো স্বাধীনতা দিবসে মানুষ হত্যা প্রতিবাদে।
সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির উপরে তারা আক্রমণ করেছে। অথচ সারাক্ষণ সরকারি নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রীরা, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং আপনাদের অনেক মিডিয়াই এই প্রচার চালাচ্ছে যে, তান্ডব, বিরোধীদলগুলো তারা হেফাজতী তান্ডব বলছে। হেফাজতের সঙ্গে আমাদের এই কর্মসূচিগুলোর কোনো সংশ্রব নেই। হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। সরকার যেহেতু এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, সেই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ আমরা করছি।
উৎসব পালনের জন্যই সরকার করোনা সংক্রমণকে পাত্তা দেয়নি বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, উৎসব পালনের জন্য যখন বিদেশী মেহমানরা আসছেন তার অনেক আগেই স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছিলো করোনা খুব মারাত্মকভাবে আসছে। অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। কিন্তু তখন তারা এটা করেনি। কারণ তারা উৎসব পালন করার জন্য, বর্ষ পালন করার জন্য এটিকে পাত্তা দেয়নি। এখন যেহেতু উৎসব শেষ হয়েছে, তাদের মহান অতিথিরা চলে গেছেন। এখন তারা করোনার বিষয়টা আবার সামনে আনছে।
করোনা সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা সংক্রামণ মারাত্মকভাবে, ভয়ংকরভাবে বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে কিন্তু এটা বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের যে উদ্যোগ সেটা কখনোই লক্ষ্য করা যায়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবসময় একটা মিথ্যা প্রচারণা করা হচ্ছে যে, এখানে খুব চমৎকারভাবে সরকার করোনা সমস্যাটাকে সমাধান করছে, নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। কিন্তু এটা একেবারেই মিথ্যা কথা। স্বাস্থ্য বিভাগ ১৮ দফা দিয়েছেন পালন করার জন্য। সরকারের উদ্যোগটা কোথায়? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুধু না, সরকারের পক্ষ থেকে যে দৃশ্যমান একটা ক্যাম্পেইনিং, প্রচার, উদ্যোগ থাকার কথা সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
করোনা নিয়ে প্রকৃত বিষয়গুলোকে গোপন করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ফ্যাক্টসগুলো, ডাটাগুলোকে গোপন করছে। এর আগে টেস্টই করেনি, এখনো টেস্ট হচ্ছে খুবই কম। কেউ টেস্ট করতে গেলে বলা হচ্ছে টেস্ট হবে না, পরের দিন আসো। এভাবে টেস্টগুলো হচ্ছে না। শুধু ঢাকাতেই না সারা বাংলাদেশেই টেস্টেগুলো হচ্ছে না। আমরা মনে হয় ১০ শতাংশও টেস্ট হচ্ছে না। এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী সরকার। তারা কখনোই এটাকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করা বা সেটার জন্য একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা এই কাজগুলো তারা করে নাই।
সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ