Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্দোলন দমনে সরকারের সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৩ পিএম

জুলুমবাজ সরকারের নির্বিচারে মানুষ হত্যা, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হামলা এবং জনগণের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই আন্দোলনকে দমন করতে গণবিরোধী সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় হামলা-মামলা-দমন-নিপীড়ণের সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ২৯ ও ৩০ মার্চ মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার পর এখন মিথ্যা মামলা দায়ের করে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করতে গ্রেফতারী অভিযান, হয়রানী ও জুলম চালানো হচ্ছে। বুধবার (৩১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে মঙ্গলবার রাত থেকে চট্টগ্রাম, নওগাঁ, খুলনা, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হামলা চালিয়ে আহত করা, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় হয়রানী চলছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলার আহবায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক এসএম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ মহানগর ও বিভিন্ন থানা নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হামলায় ৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে উল্টো বিএনপির ৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। একই দিনে নওগাঁ জেলায় বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলি, টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জের নির্মম হামলার পর রাতে নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, জেলার নেতা রবিউল আলম বুলেট, আব্দুল মতিন, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল হান্নান, কাজী সোবহান, ইখতিয়ার উদ্দিন দুরন্ত, চঞ্চল, মুকুল স্বর্ণকার, এনামুল হক, বাবু, আনোয়ার হোসেন, শহীদুল ইসলামের ওপর হামলা চালিয়ে আহতাবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে। খুলনা মহানগরের শফিকুল আলম তুহিনকে বাড়ীর গ্রীল ভেঙ্গে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

ময়মনসিংহে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের চার শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সাঁড়াশী অভিযান চালায় পুলিশ। মহানগর যুবদলের মোজাম্মেল হক টুটু এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের জসিম উদ্দিন জনিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিশোরগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলিবর্ষণ, লাঠিচার্জের পর জেলা বিএনপির মো. আব্দুল কাইয়ুম, ছাত্রদলের হাসিবুর রহমান মিশাদ, যুবদলের মো. আনার মিয়া, জাবাল মিয়া ও মো. বাবুকে গ্রেফতার ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের বাড়ীতে বাড়ীতে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে অভিযান চালানো হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের রাতে ভোটের মাধ্যমে নির্লজ্জভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী সরকার এখন আরও বেপরোয়াভাবে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ শাসন করছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে রাজনীতির অঙ্গন থেকে সরিয়ে দিতে তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন যেন বর্তমান আওয়ামী সরকারের দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। দেশকে বিরোধী দলশুন্য করতে বিএনপির যেকোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা, গুলিবর্ষণ ও নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা।

তিনি বলেন, সরকার দেশ শাসনে নজীরবিহীন ব্যর্থতা ঢাকতেই বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে আটকে রাখতে সুদুরপ্রসারী মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এসব মাস্টারপ্ল্যানের উদ্দেশ্যই হচ্ছে অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করা। তবে সরকারের সকল অপকর্ম ও অপশাসনের মূলোৎপাটনে জনগণের ক্ষোভ এখন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। জনদাবী মেনে দমন-নিপীড়ন বন্ধ এবং পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে বর্তমান সরকারকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। মির্জা ফখরুল অবিলম্বে উল্লিখিত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল ইসলাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ