Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ম্যাজিস্ট্রেট দেখলেই লুকোচুরি

স্বাস্থ্যবিধি মানাতে অভিযানে প্রশাসন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৫ এএম

করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশব্যাপী চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন। যা কার্যকরে দেয়া হয়েছে ১৮ দফা নির্দেশনা। সে নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে তৎপর রয়েছে প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতে অভিযান চালায় ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

গতকাল দুপুর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে নেতৃত্ব দেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিষা রানী কর্মকার। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিরপুরের কাফরুল এলাকা থেকে অভিযান শুরু করেন। মিরপুর ১০ নম্বরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে এদিক-সেদিক সরে পড়েন। অথচ হার্ডওয়ারের দোকান, বইয়ের দোকান, পর্দা বেডশীট এসবের দোকান ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতির আগে খোলা ছিল।

এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত হাতেনাতে বিরিয়ানি দোকানদারকে, খাবার পার্সেল না দিয়ে বসে খাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় জরিমানা করেন। মিরপুর ১০ নম্বরে অভিযান চালিয়ে দেখতে পায় এক পাশের গেট লাগিয়ে লোকজনরা খাচ্ছেন, অন্যপাশে পার্সেল দেয়া হচ্ছে। যার কারণে মুসলিম বিরিয়ানি হাউসকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া মাস্ক ব্যবহার না করায় মিরপুর ১০ নম্বরে একজনকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং তার মাস্ক কখন পরা ছিল না সে বিষয়ে প্রমাণ চান। ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিষা রানী কর্মকার বলেন, স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতে আমরা মাঠে রয়েছি। জনগণকে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছি। অনেকেই এখনও মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করছেন। তাদের বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং সচেতনতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। মিরপুর ১০ নম্বর ছাড়াও কাফরুল, ভাষানটেক এলাকায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এদিকে, মাস্ক সঙ্গে থাকলেও অনেকেই ব্যবহার করছেন না। কারো পকেটে, কেউ বাসায় রেখে এসেছেন, আবার কেউ থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন। স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ ধরনের নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে, করা হয় জরিমানা। মিরপুর ১০ নম্বরে অভিযানের সময় এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত।

অভিযান চলাকালে দেখা যায়, সব বয়সী মানুষের মধ্যেই মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা কম রয়েছে। তবে অনেকের মুখেই ছিল মাস্ক। এছাড়া সরকার নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও দোকানপাট খোলা রাখায় বেশ কয়েকটি দোকানমালিককে জরিমানা করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম দেখতে ভিড় জমায় আশপাশের লোকজন।

নির্ধারিত সময় পার হলেও দোকান খোলা রাখার অভিযোগে মিরপুর ১০ নম্বরের মুসলিম সুইটস অ্যান্ড বেকারিকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া আলামিন কমার্শিয়াল সেন্টার নামে একটি কম্পিউটার দোকানের মালিককে ১ হাজার জরিমানা করা হয়। মাস্ক না পরায় ১০ জন ব্যক্তিসহ দুটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন পরিমাণ জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জনগণকে সচেতন করতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। অনেকের মধ্যেই মাস্ক ব্যবহার কিংবা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বিষয়টি থাকলেও কিছু সংখ্যকের মধ্যে এখনও সচেতনতা বৃদ্ধি পায়নি। তাদের সচেতন করতে এবং করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আবার অনেকের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা থাকলেও নানা যুক্তি দেখাচ্ছেন। এছাড়াও অনেকের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জরিমানা করে কিংবা আইন প্রয়োগ করে স্বাস্থ্য বিধি মানানো সম্ভব নয় যদি না জনগণ সচেতন হয়। সচেতন হলেই করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যবিধি

৩০ জানুয়ারি, ২০২২
১৩ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ