Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে মেঘ-বজ্রের গর্জনে স্বস্তির বৃষ্টি

হিমেল দমকা হাওয়া কালবৈশাখী ঝড় : হালদায় মা-মাছের আনাগোনা বৃদ্ধি

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২১, ৮:১৭ এএম

অবশেষে চট্টগ্রামে ঘনঘোর মেঘমালা, বিজলী চমকানি আর বজ্রের গর্জনে স্বস্তির বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে হিমেল দমকা হাওয়া এবং কালবৈশাখী ঝড়। আর সাড়ে ৬ টা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত। সকাল আটটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলে হালকা বৃষ্টিপাত এবং হিমেল দমকা হাওয়া অব্যাহত থাকে।
টানা পাঁচ মাসব্যাপী খরা-অনাবৃষ্টি ও অসহনীয় তাপদাহের পর এই প্রত্যাশিত বৃষ্টি ও হিমেল শীতল বাতাসে বিশেষ করে মাহে রমজানে এবং করোনাকালে জনজীবনে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
কঠোর লকডাউন চলছে। বন্দর নগরীর সড়ক রাস্তাঘাট ফাঁকা। ভোর সকালে চারিদিকে সুনসান নীরবতা। এ সময়ে ঘনঘোর মেঘের সাথে হিমেল দমকা হাওয়াসহ মাঝারি বর্ষণের সুবাদে একটু শীতল পরশ পেতে ঘরের বাইরে গিয়ে অনেককে খালি সড়কে গা ভিজাতে দেখা গেল।
চট্টগ্রামে আজ সকালে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া ও কালবৈশাখী ঝড়ে নগরের বিভিন্ন স্থানে গাছ ও ডালপালা ভেঙে উপড়ে গেছে। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সড়কের ওপর গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়েছে।
হালদায় মা-মাছের আনাগোনা বৃদ্ধি-
এদিকে এশিয়ায় মিঠাপানির রুই কাতলা মৃগেল (কার্প) জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র 'মাছের ব্যাংক' খ্যাত হালদা নদীতে মা-মাছের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ থেকে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের ফলে মা মাছেরা ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিয়েছে। সাধারণত এই মৌসুমে বজ্রবৃষ্টির সময়ে এবং উজান থেকে আসা ঘোলা পানির স্রোতে রুই কাতলা মৃগেল মা মাছেরা ভেসে ওঠে এবং দলে দলে ডিম ছাড়ে। অভিজ্ঞ জেলেরা বিশেষ পদ্ধতিতে নৌকার সাহায্যে সেই ডিম সংগ্রহ করে। পরে ডিম থেকে রেণু ও পোনা ফোটানো হয় তাপমাত্রা ও পানি নিয়ন্ত্রিত পুকুর ও কুয়ায়। জেলেরা এখন হালদার উভয় তীরে প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস-
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগ এবং যশোর, কুষ্টিয়া ও কুমিল্লা অঞ্চলের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুমারখালী অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে তা কিছু কিছু এলাকায় প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক থেকে বাতাস ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। যা অস্থায়ীভাবে দমকায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার হতে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ পারদ ছিল যশোরে ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ও বুধবার রাজশাহীতে পারদ উঠে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দু’দিনের ব্যবধানে রাজশাহীতে পারদ নেমেছে ৩ ডিগ্রি সে.।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১১ মি.মি. এবং নেত্রকোনা ও শ্রীমঙ্গলে হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ