Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পটুয়াখালীতে মলে কলেরা জীবাণু শনাক্ত

পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

পটুয়াখালীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিনিধি দল গতকাল পটুয়াখালীর সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া আক্রান্ত মির্জাগঞ্জ উপজেলায় যায়। মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিলরুবা ইয়াসমীন লিজা জানান, ডা. জাহিদের নেতৃত্বে ৪ সদসস্যের প্রতিনিধি দল হাসপাতালে ভর্তি ৬ রোগীর পায়খানা পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় ২ জনের মলে কলেরার জীবানু পাওয়া গেছে। সাথে সাথেই তাদের করোনার র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করানো হলেও সেটার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এদিকে উপজেলার ৬টি স্থানে পানির নমুনা পরীক্ষা করে ২টি স্থানে নদী, খাল, পুকুরের পানিতে কলেরার জীবানুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে আইইডিসিআর টিমের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১ মাসে পটুয়াখালীতে ৪ হাজার ৮৪৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে জেলা সদরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলা পর্যায়ের ৮টি হাসপাতালে ভর্তি হয়। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২ হাজার ৮৮ জন। সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, গত ১ মাসে সেখানে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৪৭ জন। মির্জাগঞ্জ উপজেলায় গত ১ মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৮৮৬ জন এবং এর মধ্যে গত ১ সপ্তাহে ভর্তি হয় ৪৮০ জন। জেলায় গত ১ মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে মির্জাগঞ্জে বাড়িতে ২ জন এবং হাসপাতালে ১ জন, বাউফলে ৫ মাসের বাচ্চাসহ ৩ জন এবং দুমকীতে ১ জন হাসপাতালে মারা গেছেন।
এদিকে, বরগুনায় গত মাসখানেক ধরে ডায়রিয়ার প্রকোপ মহামারি আকার ধারণ করেছে। বরগুনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ২০৩ জন। গত এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১১৪ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৬ হাজার ৪১৬ জন। চিকিৎসাকেন্দ্রে জায়গা, জনবল ও প্রয়োজনীয় স্যালাইন সঙ্কট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। হাসপাতালের মেঝেতেও ঠাঁই হচ্ছে না রোগীদের।
সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা সদরে ৮৩, আমতলী-তালতলীতে ৩৯, পাথরঘাটায় ১৫, বেতাগীতে ৪২ ও বামনায় ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছে বরগুনা সদরে ৪৮৭, আমতলী-তালতলীতে ২১১, পাথরঘাটায় ১১৭, বেতাগীতে ২০৭ ও বামনায় ৯২ জন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব উদ্দিন জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়িয়ে মেঝেতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র জেলায়। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্থান সঙ্কট রয়েছে। হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে যাবার ফলে ব্যাহত হচ্ছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জনৈক নার্স বলেন, ডায়রিয়ার এমন প্রকোপ আগে দেখিনি। হাসপাতালে স্যালাইনের সঙ্কট রয়েছে। স্থান সঙ্কুলানও হচ্ছে না। জনবল সঙ্কটের মধ্যে একদিকে করোনায় আক্রান্তদের অন্যদিকে সাধারণ রোগীদেরও সেবা দিতে হচ্ছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, দূষিত পানি, খোলা খাবার আর গরমের কারণেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাবার-দাবারের ক্ষেত্রে সচেতনবোধই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সহায়ক হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মলে কলেরা জীবাণু শনাক্ত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ