Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাপানি নারীর চোখে বাংলাদেশি নারী

প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাম তার কিতা কাজুয়ো। কৃষক বাবা ও গৃহিণী মায়ের কন্যা কিতার জন্ম ১৯৭৪ সালে ২৩ জুন। জাপান দেশের নাগানো জেলার সইতমা গ্রামে। তিন ভাইবোনের মধ্যে কিতা ছোট। কিতা রসায়ন শাস্ত্রে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করে জাইকা প্রজেক্টে কাজ নেয়। সেখান থেকে এদেশের খুলনা টি.টি.সি কলেজসংলগ্ন বিজ্ঞাপন উন্নয়ন কেন্দ্রে সায়েন্স টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার পদে যোগদান করে ২০০৫ সালে।
কিতা এদেশে আসতে পেরে খুশি। সে দেশ ও দেশের নারী সম্পর্কে ইতিবচিক ধারণা পোষণ করে। তার মতে অধিক জনসংখ্যার এদেশের তরুণ-তরুণী, নারীদের ব্যবহার ভালো। তাদের পোশাকও তার পছন্দ হয়েছে। তাইতো কোনো অনুষ্ঠানে সে আমন্ত্রণ পেলে শাড়িও পড়ে থাকে। কিতার ভাষ্য অনুযায়ী এখানকার নারীরা খুবই পরিশ্রমী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বাংলাদেশের দুটো জেলা ঢাকা, খুলনা ভ্রমণ করে তার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। অবশ্য নারী শ্রমিক ও কর্মজীবী নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের চিত্র আশাব্যঞ্জক। নারী-পুরুষ একত্রে কাজ করলেও তারা সমান অধিকার পায় না। কিন্তু জাপানে নারীরা পুরুষের মতই অধিকার ভোগ করে। কিতা বলল ওদের দেশে মেয়েদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা আছে। জাপানে মাদক ও এইডস আছে তবে তা নগণ্য। এখানকার মাদকাসক্ত নারী আর ভিক্ষুক দেখে সে অবাক হয়েছে। কষ্টও হয়েছে তাদের জন্য। আর অবাক হয়েছে এদেশের রাজনীতিতে নারীদের অবস্থান ও আচরণ দেখে। তার মতে রাজনৈতিক সমঝোতা, সৌহার্দ্য থাকা প্রয়োজন। কিতা কাজুয়ো ভাঙ্গা বাংলায় কথা বলে। জাপানে দুই মাস বাংলা ভাষা শিক্ষাগ্রহণ করেছে। এদেশে নারীদের পাশাপাশি শিশুদের বিশেষ করে দরিদ্র শিশুদের বিভিন্ন রকম জায়গায় কাজ করতে দেখে তার খারাপ লেগেছে। ওদের দেশে এক থেকে পনের বছর বয়সী শিশুদের কাজ করা নিষেধ। দারিদ্র্যতার কষাঘাতে আমাদের শিশুদের কোমল হাতে বইয়ের পরিবর্তে উঠে আসে রিকশার প্যাডেল অথবা হাতুরি অথবা কখনো হতে হয় কারো বাড়ির ভৃত্য। অথচ জাপানে এর বিপরীত চিত্র। সেখানকার শিশুরা সবাই একসাথে আনন্দ গানে মেতে থাকে। এর কারণ জাপানি মায়েরা শিশুদের এবং পরিবারের ব্যাপরে খুবই সচেতন। নারী উন্নয়নে নারী জাগরণের প্রয়োজন বলে মনে করে কিতা। নারীদের প্রশাসনিক কর্মকা-ে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন বলে তার অভিমত। এ দেশের গোলাপ ও শাপলা তার প্রিয় ফুল। পছন্দের খাবার সেমাই, ভাত, গরু ও মুরগির গোশ্ত আর বিভিন্ন প্রকার ফল। এদেশের নারীদের বড় গুণ ঘর ও বাহির সামলানো। সংসারের কাজ করে কর্মস্থলের কাজও তারা ঠিকমত সম্পাদন করতে পারে। এটা তাকে মুগ্ধ করেছে। এখানকার মন্দ দিক হরতালের রাজনীতি। জাপানিরা এদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু হরতালের জন্য তারা উদ্বিগ্ন। এত কিছুর পরও কিতার চোখে সুন্দর এদেশ, এ দেশের প্রকৃতি, মানুষ। এখানকার নারীরা ধর্মীয় মনোভাবাপন্ন এবংআন্তরিক ও মার্জিত। তার বিশ্বাস নারীর উন্নয়ন ঘটলে দেশের উন্নতি ঘটবে। অতএব নারীকে তার প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার দিতে হবে।
য় শামীম নাজ শভ্রা



 

Show all comments
  • Samiha Jahin ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৩:০২ পিএম says : 0
    জাপানি নারীরা জাপানকে hate করে কেন?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাপানি নারীর চোখে বাংলাদেশি নারী
আরও পড়ুন