পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাবনা ঈশ্বরদীর জয়নগরের স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টে মাদক নারী নিয়ে বেহায়াপনা, নগ্নতা ও অবৈধ কার্যকালাপের অন্ধকার এক জগত হয়ে উঠেছে। দেশের সবচেয়ে বড় রূপপুর প্রকল্পে কমর্রত দেশি-বিদেশি নাগরিক, শিক্ষার্থী ও উচ্চবিত্ত তরুণ-তরুণীরা রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের খপ্পরে পরে বিপুল অঙ্কের টাকা খোয়ানোর ঘটনা এখন নিত্যদিনের।
সারারাত রিসোর্টে মদ পান আর উচ্চ শব্দের ডিজে পাটির নামে অর্ধ উলঙ্গ নৃত্য, হৈ-হুল্লোড় চলে। আর বিশেষ দিবসে উচ্চ শব্দের বাজি ফোটানো এসব তাদের স্বাভাবিক কাজ। এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও রিসোর্ট মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না। এই রিসোর্টে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনসহ প্রভাবশালীনেতাদের চলাফেরা থাকায় এলাকাবাসী বর্তমানে অভিযোগ করাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা আরো জানান, স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টে প্রতিনিয়ত মদ, নারী ও মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদের অসামাজিক কার্যকলাপ ও উচ্চ শব্দের ডিজে পার্টির কারণে এলাকার পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে। জানা যায়, স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের মালিক খায়রুল ইসলাম বিগত কয়েক বছর আগে জয়নগর শিমুলতলা এলাকার একজন ট্রাক কন্ট্রাকটর ছিলেন। পরবর্তীতে চাল ব্যবসার কমিশন এজেন্ট হয়ে শিল্পপতি বনে যান। বিপুল পরিমাণ ব্যাংক লোন আর অন্য ব্যবসায়ীদের টাকায় তিনি একের পর এক গড়ে তোলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ তিনি প্রতিষ্ঠা করেন স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের একাধিক সূত্র জানায়, মদ বিক্রির সরকারি বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কোন অনুমোদন নেই এখানে। তারপরও দেশি-বিদেশি মদ এই রিসোর্টে বিক্রি করা হয়। ২০২০ সালকে স্বাগত জানানোর জন্য রাজশাহী থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নিয়ে আসার সময় গাড়িসহ খায়রুল ইসলাম রাজশাহীর এক থানায় আটক হন। সেই সময় খায়রুল ইসলাম ওই থানায় দুই লাখ টাকার দরকষাকষি শুরু করেন। তখন থানায় রিসোর্টের রন্ধনকারী ও খায়রুল ইসলামের পিএসসহ চালককে আটক করে বসিয়ে রাখা হয়। আটককৃত মাদক বিদেশিদের উল্লেখ করে থানায় পাসপোর্টের কপি ই-মেইল করে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে প্রশাসনের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সুপারিশে টাকার বিনিময়ে মাদকদ্রব্যসহ সকলকে ছাড়িয়ে আনা সম্ভব হয়।
জনশ্রæতি রয়েছে, নাটোর, কুষ্টিয়া, যশোর, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেয়েদের রিসোর্টে এনে অসামাজিক ব্যবসা করানো হয়। সূত্র জানায়, এই রিসোর্টে একটি লাক্সারি ভবনে ১০টি রুম আছে। এক রাতের জন্য প্রতিটি রুমের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। এই ব্যয়বহুল রুমগুলো রূপপুর প্রকল্পে কমর্রত উচ্চ শ্রেণির বিদেশিদেরসহ দেশের সরকারি, বেসরকারি হাইপ্রোফাইল লোকজনের নামে বরাদ্দ থাকে। এতে প্রতিদিন রুমগুলো থেকে উপার্জন হয় দেড় লাখ টাকা। প্রতিদিন এতো টাকা উপার্জন হওয়ায় রিসোর্ট মালিক বর্তমানে তার অন্যান্য ব্যবসার চেয়ে রিসোর্ট ব্যবসার দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছেন বলেও জানা যায়। তবে জনবসতি এলাকায় রিসোর্ট হওয়ায় এলাকাবাসীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়।
সূত্র জানায়, রূপপুর প্রকল্পে কমর্রত বিদেশিদের টার্গেট করে খায়রুল ইসলাম নির্মাণ করেছেন স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট। স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট ও হোটেল উদ্বোধনের পর থেকেই সেখানে দেশি-বিদেশি নারী পুরুষের অশ্লীল নৃত্য, মদ সরবরাহ শুরু হয়। চালুর কিছুদিন পর গত ১৪ ফেব্রæয়ারি রিসোটর্টি অনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঈশ্বরদী সার্কেলের পরিদর্শক সানোয়ার হোসেন জানান, খায়রুল ইসলামের স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টে মদ বিক্রির কোন অনুমোদন নেই। সেখানে মদ বিক্রি করার খবর পেয়েছি। অবৈধভাবে মদ বিক্রির বিষয়ে নজর রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের বিষয়ে অনেক নেতিবাচক তথ্য তাদের কাছে এসেছে। সেই তথ্য বিশ্লেষণসহ সময়মত পদক্ষেপ নেয়া হবে। ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফিরোজ কবির জানান, স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। অনেক তথ্যও এসেছে তাদের কাছে। অবৈধ কোন কাজ সেখানে করতে দেয়া হবে না। তিনি যত বড়ই ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হোক না কেন প্রমাণ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের মালিক খায়রুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।