Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাউজানে নিখোঁজের ৮ মাস পর ঢাকা থেকে উদ্ধার সালমা!

রাউজান (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২১, ৮:৫৫ এএম

দাঁত ব্রাশ না করায় ১০ বছর বয়সী সালমা আক্তারকে একটি থাপ্পর দেন মা খোদেজা খাতুন। রাগ করে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় সালমা। এরপর আর খোঁজ নেই তার। মা খোদেজা চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পায়নি।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় রাউজান পৌরসভার আদালত ভবন সংলগ্ন এনাম কলোনিতে ঘটে এ ঘটনা। সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর হন্য হয়ে অবশেষে মা খোদেজা খাতুন রাউজান থানায় (৪ অক্টোবর ২০২০) নিখোঁজ ডায়েরী (ডায়েরী নং ১৫০) করেন। থানা পুলিশও চেষ্টা চালায় সালমাকে খুঁজে পেতে। তাতেও কোন কাজ হয়নি। কেননা, সালমার সাথে ছিল না কোন যোগাযোগের মাধ্যম। এভাবে চলতে চলতে ৮ মাস পার। খবর নেই সালমার।

হঠাৎ গত পহেলা রমজান (২০২১) সকালে সালমা অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে মা খোদেজাকে ফোন দেয়। সালমা বলে, সে ঢাকায় একটি বাসা বাড়িতে আছে, তাকে নিয়ে যেতে। না হলে কোনদিন খবর পাবে তার মেয়ে সালমা মারা গেছে।

কয়েকদিন পর বিষয়টি রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) ইব্রাহিম খলিলকে জানায় খোদেজা। ফোন কলের সে নাম্বারে প্রযুক্তির সহযোগিতায় পুলিশের একটি টিম পৌঁছে যায় সালমার সেই বাসা বাড়িতে। অবশেষে দীর্ঘ ৮ মাস পর (০৭ মে) রাত ৯ টায় ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাসা বাড়ি থেকে সালমাকে রাউজান নিয়ে আসা হয়।

এ বিষয়ে রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম বলেন, সালমার ফোন দেয়ার বিষয়টি জানানোর পর আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করি সালমার অবস্থান জানার। শেষে জানতে পারি সে ঢাকার মোহাম্মদপুরে আছে। বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর সালমার মা সহ শুক্রবার ভোরেই আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করি। সালমা যে বাসাতে কাজ করতো সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

সালমা জানান, মা চড় দেয়ায় রাগ করে ঘর থেকে হেটে রাঙ্গুনিয়ার রাণীরহাট চলে যায়। সেখান থেকে একটি আন্টির (অপরিচিত মহিলা) মাধ্যমে ঢাকা চলে যায়। প্রথমে ৭ মাস বসুন্ধরা এলাকায় একটি বাসা বাড়িতে কাজ করত। সেখানে তাকে মারধর করা হতো। তাই গত ২ মাস কাউকে না বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে মোহাম্মদপুরের একটি বাসাতে চলে আসে। সে বাসার মানুষগুলো ভালো। এতদিন সেখানেই ছিল।

সালমার মা খোদেজা খাতুন বলেন, স্বামী মারা গেছে অনেকদিন আগে। ৩ মেয়ে ১ ছেলে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করি সংসার চালাই। এতদিন মেয়ে ছিল না বলে বুকে হাহাকার করতো। আজ মেয়েকে বুকে পেয়ে আনন্দ লাগছে।

এ প্রসঙ্গে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, ৮ মাস পর সালমাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এতদিন সে নিখোঁজ ছিল। শুক্রবার (০৭ মে) রাত সাড়ে ৯টায় সালমাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সালমার নিজ বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় হলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে রাউজান পৌরসভার আদালত ভবন সংলগ্ন এনাম কলোনিতে বসবাস করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ