Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রব ও নাসিম বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো ক্রিটিক্যাল সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো ক্রিটিক্যাল বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেয়ায় সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার বলছেন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতির নজির নেই। কিন্তু ১৯৭৯ সালে আমাদের প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী আ স ম আব্দুর রব জেলে ছিলেন। তখন জিয়াউর রহমান দায়িত্বে ছিলেন। পরে তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিলো। চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে দেশে এসেছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০০৮ সালে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাজা মাফ করে দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এমন আরো অনেক আছে, আমি নাম বলবো না। অত্যন্ত উচ্চপদস্থ প্রভাবশালী সরকারের কর্মকর্তাই বলবো, তার দুই সহোদর ভাই আইনের এই ৪০১ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

তাদেরকে মাফ করে দিয়ে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। কেনো খালেদা জিয়ার বিষয়ে খোঁড়া যুক্তি দিচ্ছেন। আক্ষেপ করে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, সোজা বলে দেন যে আমরা তাকে (বিদেশে যেতে) অনুমতি দেবো না। শেখ মুজিবুর রহমানও এমন ছিলেন না। তিনিও তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চিকিৎসার সুবিধা দিয়েছেন, ছেড়ে দিয়েছেন। এমনকি তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবেও সাহায্য করেছেন। কিন্তু আপনাদের (বর্তমান সরকারের) যোগ্যতা নেই। থাকলে অনেক আগেই খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিতেন। বেগম জিয়ার বর্তমান অবস্থা জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের চেয়ারপার্সন এখনো ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে আছেন। যদিও আল্লাহর রহমতে অনেক ইমপ্রুভ করেছেন। এখন তিনি রুম এয়ারে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন। অর্থাৎ রুমের মধ্যে তার অক্সিজেন লাগছে না। তার প্রেসার, টেম্পারেচার, অক্সিজেন যেটাকে স্যাচুরেশন বলে এগুলো এখন আপাততভাবে আল্লাহর হুকুমে কিছুটা নরমালের দিকে চলে এসেছে। তিনি বলেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতার মূল কতগুলো বিষয় আছে, যে বিষয়গুলো এখনো বিপদজনক অবস্থার মধ্যে আছে। তার কিডনির সমস্যা আছে- দ্যাটস এ রিয়েল প্রবলেম, তার হার্টের সমস্যা আছে। যা নিয়ে ডাক্তাররা এখনো অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আছেন, তারা চেষ্টা করছেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক আন্তরিকতা নিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করছে। তারা কোনো কিছু বাকি রাখছে না। এমনকি তারা বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত, দেশের বাইরেও তারা যোগাযোগ রাখছে বড় বড় চিকিৎসকদের সঙ্গে, সেভাবে তারা এখানে চিকিৎসা করার চেষ্টা করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা প্রথম থেকেই খুব সংযত ভাষায় কথা বলেছেন। তার অবস্থা ওই সময় স্থিতিশীল ছিল। হাসপাতালে আসার পর তার পরিবার যখন বাইরে নেয়ার জন্য আবেদন করেছিল তখন দেশনেত্রীর অবস্থা ভেরি ডিফিকাল্ট ছিল, ইট ওয়াজ ভেরি ক্রিটিক্যাল। ডাক্তাররা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। যে কারণে তারা একটা রিপোর্টও দিয়েছিলেন যে, তার অবস্থা ভেরি ক্রিটিক্যাল, আমাদের এখানে যে ব্যবস্থাগুলো আছে সেটা এনাফ নয়। সেজন্য তারা মনে করেছেন যে, যদি বাইরে চিকিৎসাটা নেয়া হয় তাহলে ভালো হবে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের আবেদনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবেদন করার পরপর তারা (সরকার) এমনভাবে কথা বললেন যে, সবাই আশাবাদী, জনগণসহ সকলে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দেবে। ওটাই আশা করে যে, একজন অসুস্থ রোগীর সঙ্গে কেউ রাজনীতি করতে চায় না, দিয়ে দেবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে হঠাৎ করে তাদের (সরকার) টোন বদলে গেলো। তারা বলে দিলেন আমরা দিতে পারছি না। কেন পারছেন না সে ব্যাপারে তারা যে যুক্তিগুলো দিলেন সেই যুক্তিগুলো একেবারেই অগ্রহণযোগ্য যুক্তি, খোঁড়া যুক্তি।

গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়ার মুক্ত হওয়ার পর তিনি সরকারের দেয়া শর্ত ভঙ্গ করেননি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী যখন বাসায় কোয়ারেন্টিনে ছিলেন একদিনের জন্য তাদের শর্ত ভঙ্গ করেননি, তিনি একদিনের জন্য ঘরের বাইরে যাননি, বাসার বাইরে যাননি। কোথাও কোনো বক্তব্য দেননি। আমরা হয়তো মাঝে-মধ্যে আপনাদের বলেছি যে, তিনি আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন। তিনি কিন্তু নিজে কোনোদিন রাজনীতির জন্য ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে হাতও নাড়াননি।



 

Show all comments
  • Abu Sabit ১২ মে, ২০২১, ২:০৩ এএম says : 0
    জিয়ার ক্ষমতা আর উদারতা ছিল বলেই সম্ভব হয়েছিল। এখন ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা আছে উদারতা নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun Farhan ১২ মে, ২০২১, ২:০৪ এএম says : 0
    একজন জিয়ার জন্য ই দেশ স্বাধীন হয়েছে। একজন জিয়া চেয়েছিলেন বিদেশিরা কাজ খুজবে এই দেশে।একজন জিয়া হলেন দেশে বহু দলের প্রবক্তা। যার জন্য হাসিনা আজ ক্ষমতায়।আর এটাতো সামান্য ব্যাপার।
    Total Reply(0) Reply
  • Salahuddin Ahmed ১২ মে, ২০২১, ২:০৪ এএম says : 0
    জিয়াউর রহমান সাহেব কর্ণেল তাহেরকে সামরিক আদালতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার পরিবর্তে আ স ম রব সাহেবকে চিকিৎসার নামে জার্মানিতে পাঠিয়ে পরিস্তিতি ঠান্ডা করেছিলেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rhaman Shohag ১২ মে, ২০২১, ২:০৫ এএম says : 0
    দেশের সব রাজনীতিবিদদের বিদেশে চিকিৎসা বন্ধ করে দেশের সাস্থখাতে উন্নত করতে হবে,যার সুফল দেশের সমস্ত মানুষ পাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rejaul Karim ১২ মে, ২০২১, ৬:৩৩ এএম says : 0
    মানবতা মরে গেছে উদারতা নির্বাসনে।।। ................ হায় রে মানবতা একজন সম্মানিত বর্ষীয়াণ রাজনীতিবিদ ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে ও বিদেশে চিকিৎসা নিতে আপত্তি।।।
    Total Reply(0) Reply
  • আশিক ১২ মে, ২০২১, ১০:৫৩ এএম says : 0
    খালেদা জিয়াকেও যেতে দেয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • সোলায়মান ১২ মে, ২০২১, ১০:৫৪ এএম says : 0
    হে আল্লাহ তুমি খালেদা জিয়াকে সুস্থতা দান করো
    Total Reply(0) Reply
  • Dadhack ১২ মে, ২০২১, ১২:১৬ পিএম says : 0
    You people didn't rule our country by Qur'an as such Awami League is in-humanely oppressing you peope and the population of Bangladesh specially muslim in Bangladesh.. you people just like awami league.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ