Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৬ শতাধিক টিউবওয়েল,৫৫ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ,৫৫ কোটি টাকার মৎসসম্পদ,১৩ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

বিপদসীমার ৫৯ সে: মি: উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২১, ৫:৪৩ পিএম

ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পটুয়াখালী জেলায় আজও পটুয়াখালী জেলা শহর সহ উপকূলীয় নি¤œাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।সকাল থেকে অব্যাহত দমকা হাওয়ার সাথে জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে উপকূলীয় নি¤œাঞ্চলের মানুষের মনে আংশকা সহ দূর্ভোগের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোডর্ সূত্রে জানা গেছে আজও বিপদসীমার ৫৯ সে: মি: উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে,ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আজও দমকা হাওয়া অব্যাহত রয়েছে,আজ সর্বোচ্চ দুপূর ১ টায় ২৪ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়।দমকা হাওয়ার সাথে জোয়ারের পানি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে ৩-৬ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান জেলা আবহাওয়া দপ্তরের পর্যবেক্ষক মো: রাহাত হোসেন।
এদিকে পটুয়াখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ফায়েজ আহম্মেদ জানান,জোয়ারের পানি অত্যধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে তারা ৬ শতাধিক টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ার তথ্য পেয়েছেন। জরিপ চলছে এ সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছ্ েজরুরী ভিক্তিতে এসব টিউবওয়েল মেরামতের জন্য তারা পদ:ক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রতিটি এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট পৌছিয়ে দেয়া হয়েছে।সবচেয়ে বেশী টিউবওয়েল নষ্ট হয়েচে কলাপাড়ার বেড়ীবাধহীন লালুয়া ইউনিয়নে।
এ দিকে পটুয়াখালী জেলার ৮ টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে,জেলায় মোট ১৩,১৩৭ টি কাচা ,পাকা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে,প্লাবিত হয়েছে ২৩২ টি গ্রাম।
জেলার সদর উপজেলায় ২৩০০ পরিবার ৩৬২ টি ঘরবাড়ি,৩ টি স্টীল ব্রীজ,৩৯.১৯ মিটার পাকারাস্তা,৭৫০ মিটার কাচা রাস্তা, ৩১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ঠ হয়েছে । মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১০ হাজার কাচাঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে,৩০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১৯ টি স্পটের বেড়ীবাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ৩৮ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।গলাচিপা উপজেলায় ২০০ টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, ১৭ টিগ্রাম প্লাবিত হয়ে বেড়ীবাধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।কলাপাড়া উপজেলায় ২২৩০ টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, ব্যাপক এলাকার বেড়ীবাধ ভেঙ্গে ৭৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।দশমিনা উপজেলায় ২২০ টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ,ব্যাপক এলাকার বেড়ী বাধ ভেঙ্গে ১২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে ।দুমকী উপজেলায় ৯টি স্থানে বেড়ীবাধ ছুটে ১৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে সবস্থানেই আজও জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ফসলের ক্ষতির পরিমান এখনো চুড়ান্ত করা যায়নি বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন ,পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের পনিতে ভেসে গেছে ৭০০০ পুকুর ও ঘের। যার মধ্যে ৫৭০০ পুকুর,ও ১৩০০ ঘের। ক্ষতির পরিমান ৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।রাঙ্গাবালী উপজেলার ৮০ ভাগ মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। তবে আজ দুপূরে পুনরায় জোয়রের পানিতে তলিয়ে ক্ষতির পরিমান আরও বাড়বে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চরকাশেমের মো: লুঃফর রহমান বাবুল জানান,তার দুটি ঘেরের কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গিয়েছে।আজও জোয়ারের পানি অব্যাহত রয়েছে,গত দুইদিনের কাছাকাছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হালিম সালেহীন জানান,গত দুইদিনে পটুয়াখালীর সবচেয়ে ঝুকিপূর্ন লালুয়ার ৭ কিলোমিটার সহ ৫৫ কিলোমিটার বেড়ী বাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নদীর তীর ভেঙ্গে গেছে ৩ কিলোমিটার এলাকায় ।আজও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বাড়বে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ