Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

বরগুনায় ইয়াসের তাণ্ডব: লণ্ডভণ্ড টেংরাগিরি, শুভসন্ধ্যা ও হরিণঘাটা পর্যটন কেন্দ্র

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২১, ৬:০৫ পিএম

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী প্রকৃতির অপরূপ লীলানিকেতন ফকিরহাটের টেংরাগিরি, নিশানবাড়িয়ার শুভসন্ধ্যা ও পাথরঘাটার হরিণবাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্র ইয়াসের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে।

উপকূলীয় জেলা বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ফকিরহাটের টেংরাগিরি বনাঞ্চল, একই উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়ার শুভসন্ধ্যা এবং পাথরঘাটার হরিণবাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্র ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে সৌন্দর্য্য হারিয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে শুভসন্ধ্যা। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে আছে শুভসন্ধ্যার প্রায় প্রস্থ ৫০ ফুট ও দৈর্ঘ্য ৩ কিলো মিটার ঝাউবন। যে ঝাউবনটি ছিলো শুভসন্ধ্যার প্রধান সৌন্দর্য।

সারা বছরই সমুদ্র সৈকত দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসতেন। চলমান করোনাভাইরাস এর কারণে বন্ধ পর্যটনকেন্দ্রগুলো। পর্যটকদের যেমন ছিল সমুদ্রপ্রিয়তা তেমনই প্রিয় ছিলো মনোমুগ্ধকর ঝাউবন। সেই উপকূলের সৌন্দর্য্য লুকিয়ে থাকতো যে ঝাউবনের ভেতর, সেই ঝাউবনের সৌন্দর্য ইয়াসের তান্ডবে হারিয়ে ফেলেছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে ঝাউ গাছ লাগানো শুরু থেকে যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় আসছে তাতে প্রায় ২৫ হাজার ঝাউ গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর গত বছর আম্ফানের কারণে প্রায় ৩ হাজার ঝাউবন বিলীন হয়ে গেছে। আম্ফানের পর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে টেংরাগিরি বন ও শুভ সন্ধ্যা ঝাউবনসহ ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর এখানে উপমহাদেশের সব চেয়ে বড় জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসব ঘিরে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। তা ছাড়া প্রতিদিন হাজারো পর্যটক আসতো। সমুদ্রের মূল আকর্ষণ ছিল ঝাউবন। বিভিন্ন দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঝাউবন বিলীনের পথে।

সিডর, আয়লা, নারগিস, আম্ফানসহ বড় বড় দুর্যোগকে মোকাবেলা করেছে এই বন। বনের কারণে রক্ষা পেয়েছে উপকূলবাসী। উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদের রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করেছে উপকূলীয় সবুজবেষ্টনি। ম্যান-গ্রোভ বন উপকূলকে সব সময় রক্ষা করে আসছে। আর সেই রক্ষা কবজই ইয়াসের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এই বন না থাকলে উপকূলকে বাঁচানো সম্ভব হতো না বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।।

তালতলী রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেংরাগিরি, শুভসন্ধ্যা ও হরিণঘাটা বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের তীরবর্তী প্রায় দেড় কিলোমিটার পাড় ভেঙে গেছে ও নদীর পানির সাথে ভেসে গেছে অনুমানিক ছয় হাজারের বেশি গাছ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরগুনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ